কলকাতা: বঙ্গ বিজেপির একাংশের বিরুদ্ধে গত কয়েকদিনে ফেসবুকে মারাত্মক সব অভিযোগ তুলেছেন দলেরই সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। জেলাস্তরের নেতাদের নাম করে একের পর এক বোমা ফাটিয়েছেন তিনি। বুধবার সরাসরি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে তীব্র আক্রমণ করেন অনুপম। বলেন, “আমার রাজ্য সভাপতিকে পরামর্শ আপনি নিজের কেন্দ্রে মন দিন। পরেরবার জিততে পারবেন কি না সেটা দেখুন। কারণ আপনি নিজের ওয়ার্ডে ২০টা লোক নিয়ে ঘুরে বেড়ান। তারমধ্যে ১৮টা নিরাপত্তারক্ষী। এই তো আপনার অবস্থা। পরের বার আপনি জিততে পারবেন কি না সেটা দেখুন।” স্বভাবতই অনুপমের এ হেন মন্তব্যে রাজ্য বিজেপি বিড়ম্বনায়।
তবে অনুপম নিজের বক্তব্যে অনড়। তিনি বলছেন, তাঁর কাছে বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য এসেছে। যাঁরা দলে বসে আছেন তাঁদের সংখ্যাটা অনেক। অথচ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আগামী ভোটে কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি চায় না। সকলকে নিয়ে চলার পক্ষে তারা। অনুপম বলেন, “সেই সবাইকে নিয়ে চলতে গিয়ে আমি দেখলাম একটা বড় অংশ বসে আছে। রাজ্যের পদাধিকারীরা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে বলতেই পারেন আমাদের মধ্যে কোনও ক্ষোভ বিক্ষোভ, বিভেদ নেই।”
অনুপম এ প্রসঙ্গে অমিতাভ চক্রবর্তী, সুকান্ত মজুমদারের নামও নেন। বলেন বুধবার খয়রাশোলে তাঁর উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে। তার নেপথ্যে রয়েছেন বিধায়ক অনুপ সাহা। এই অনুপের ‘স্নেহধন্য’ ধ্রুব সাহা বলেও দাবি করেন তিনি। আর সকলের উপরে অমিতাভ চক্রবর্তী, বলেন অনুপম।
যদিও সুকান্ত মজুমদার কারও নাম না করেই অনুপমের এ হেন মন্তব্যের পর বলেন, “বুথ সভাপতি হোক বা তিনি যে-ই হোন, তৃণমূলের সুবিধা করে দেওয়া কোনও বিজেপি নেতার কাজ হতে পারে না।” অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, “উনি কী বলছেন না বলছেন তা দেখার জন্য লোক আছে। এখানে স্থানীয় রাজনীতির যদি সমস্যা হয় প্রদেশের তরফে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলা উচিত ওনার বক্তব্যের জন্য এই এই সমস্যা হচ্ছে। হয়ত পার্টির ভিতরের কিছু কথা উনি বাইরে বলছেন। সেটা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। হয়ত কর্মীদের মনের কথা বলতে গিয়ে পার্টির বাইরে চলে যাচ্ছে।”
অনুপম হাজরার বক্তব্য, “কত মানুষকে বসিয়ে রাখা হয়েছে তা জানতেই আমি বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছি। ৩৫টা সিটের টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছি, অথচ এত বিপুল সংখ্যক মানুষ বসে থাকলে, হতাশায়, বিতৃষ্ণায় তৃণমূল বা সিপিএমে যোগ দিলে সেটা দলের পক্ষে ভাল হবে? একটা সিন্ডিকেট চলছে। মৌচাকে ঢিল পড়েছে। কেউ চায় পদে থাকতে ব্যালেন্স করে চলতে। এই যে যারা এককাট্টা হয়েছে, এদের তো সুকান্ত মজুমদার বা অমিতাভ চক্রবর্তী পদ দিয়েছে।”