
কলকাতা: ‘ডিজিটাল ক্যারিশ্মা’, মোদীর প্রচার প্রসঙ্গে ঠিক এই কথাটাই বারংবার আওড়েছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ২০১৪ সাল, যে বছর তিনি প্রথম জাতীয় রাজনীতির ময়দানে নামলেন, সেই বছরও তাঁর ডিজিটাল-প্রচার চোখ কপালে তুলেছিল বিরোধীদের। এবার ছাব্বিশের নির্বাচনের আগেও সেই ডিজিটাল প্রচারকেই হাতিয়ার করল গেরুয়া শিবির।
একদিকে অভিষেকের ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’, অন্যদিকে বিজেপির ‘নমো যুব যোদ্ধা’। ছাব্বিশের ভোটের আগেই শুরু ‘ডিজিটাল লড়াই’। যার ডঙ্কা বাজল কলকাতার আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহ থেকে। শনিবার বিজেপি যুবমোর্চার কর্মীদের নিয়ে সেখানে আয়োজিত হয়েছিল একটি অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, সাংসদ বিপ্লব দেব, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, অমিতাভ চক্রবর্তীরা। ওই অনুষ্ঠান থেকেই ঘোষণা হয় এই ‘ডিজিটাল কর্মসূচির’।
সম্প্রতি এই একই রকম কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। নাম দিয়েছিলেন ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’। ভোটের আগে বাংলার যুব ‘সৈনিকদের’ এক ছাতার তলায় আনতেই এই কর্মসূচির সূচনা করেন তিনি। এবার সেই জুতোয় পা গলাল গেরুয়া শিবিরও। শুরু হল ‘নমো যুব যোদ্ধা’।
বছর ঘুরলেই নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘রুখে দাঁড়াতে ও বিকশিত বাংলা’ গড়ার লক্ষ্য়েই নতুন কর্মসূচির সূচনা, দাবি বঙ্গ বিজেপির। কিন্তু এতে যুব সমাজ যোগ দেবে কীভাবে? গেরুয়া শিবির জানিয়েছে, এই কর্মসূচি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য তাঁদের ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে। তবে একটা মিসড কল দিয়েও সামিল হওয়া যাবে বিজেপির লড়াইয়ে। বাংলার যুবদের শুধু ডায়াল করতে হবে এই একটি নম্বর – ৭০১৫৯০০৯০০।
এদিন বিজেপি যুবমোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ বলেন, ‘তৃণমূল যে ভাবে তরুণদের চাকরি চুরি করেছে, তাতে ওরা ডিজিটালেই রয়ে যাবে। ওরা যদি পথে নামে, ওদের মানুষকে জবাব দিতে হবে।’ অবশ্য এই কর্মসূচি বাংলার মধ্যেই যে সীমিত থাকছে এমনটা নয়। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলছেন, ‘এটা শুধু এখানে হচ্ছে না। সারা দেশের মানুষকে এক সূত্রে বাঁধতে এই কর্মসূচির সূচনা।’
কিন্তু তৃণমূল কী বলছে? বিজেপি কি তাঁদের ‘নকল’ করছে? এমনটাই মত বেশ কিছু নেতার। অভিষেকের উদ্য়োগে তৈরি ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’ কর্মসূচি রাজ্যজুড়ে সাড়া ফেলতেই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা গেরুয়া শিবিরের। তাও আবার দু’সপ্তাহের মাথায়। তাই স্বাভাবিকভাবেই ‘নকল’ তত্ত্বের দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছেন কেউ কেউ। তৃণমূল মুখপাত্র তন্ময় ঘোষের কথায়, ‘বাংলার জন্য এই কর্মসূচি একেবারেই সম্পৃক্ত নয়। ওরা একুশের আগে এসব করেছিল। কিছু লাভ হয়নি। কিছুদিন আগে মেম্বারশিপ ড্রাইভ হয়েছিল। কিন্তু দেওয়া সংখ্যার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি তাঁরা।’