CM Mamata Banerjee On Hanskhali Case: ‘ধর্ষিত হয়েছিল নাকি প্রেগন্যান্ট না লাভ অ্যাফেয়ার্স?’, হাঁসখালি কাণ্ডে প্রশ্ন তুললেন মমতা
CM Mamata Banerjee On Hanskhali Case: ক্ষোভ উগরেছেন বাংলার সংবাদমাধ্যম, নিউজ় চ্যানেলগুলোর ওপরেও। কেন এই সংক্রান্ত খবর দেখানো হয়? প্রশ্ন তোলেন তা নিয়েও।
কলকাতা: ‘ধর্ষণ নাকি প্রেগন্যান্ট?’ হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে প্রথম প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার সংবাদমাধ্যম ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি। কেন এই সংক্রান্ত খবর দেখানো হয়? প্রশ্ন তোলেন তা নিয়েও। সোমবার বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গনের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চ্যানেলগুলো টাকা দিচ্ছে, আর টিআরপি বাড়াচ্ছে। আর সারাক্ষণ খুন-খারাপি দেখিয়ে যাচ্ছে। ১২ কোটি লোকের জায়গা এখানে। অনেক ঘটনাই ঘটে না। আবার কোনও ঘটনা ঘটে যায় তার মধ্যেও, যেটা আমরা কেউই চাই না। তা নিয়েই বলে যাচ্ছেন সর্বক্ষণ।”
প্রেগন্যান্ট তত্ত্ব
হাঁসখালির গণধর্ষণ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম প্রতিক্রিয়া, “পুলিশ এখনও বিষয়টাই জানতে পারেনি। এই যে বারবার দেখাচ্ছে, একটা বাচ্চা মেয়ে নাকি মারা গিয়েছে রেপড হয়ে। আপনি রেপড বলবেন? নাকি প্রেগন্যান্ট বলবেন? না লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন? এটা ইনকোয়ারি করেছেন কি? আমি পুলিশকে বলেছি এটা।” এই ঘটনার নিন্দা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত। কিন্তু অভিযুক্তের সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেম ছিল কি না প্রশ্ন তোলেন তিনি।
কেন ৫ দিন পর থানায় অভিযোগ?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “আমি যতটুকু খোঁজ পেয়েছি, মৃত্যু হয়েছে ৫ তারিখে, পুলিশ জেনেছে ১০ তারিখে। তাহলে বলুন, ৫ তারিখে যদি কারোর মৃত্যু হয়, আর তার মধ্যে যদি কোনওরকম কিন্তু থাকে, তাহলে ৫ তারিখেই অভিযোগ দায়ের হল না কেন? বডিটাকে পুড়িয়েও দিলেন!” মমতার সংযোজন, “আমি অ্যাজ অ্যা লে ম্যান বলছি, সবটা না জেনেও, প্রমাণটা পাবে কোথা থেকে? ধর্ষণ না প্রেগন্যান্ট ছিল, নাকি অন্য কোনও কারণ ছিল নাকি কেউ দুটো চড় মেরেছে, শরীরটা খারাপ হয়েছে… লভ অ্যাফায়ার্স তো ছিলই। বাড়ির লোকেরা, পাড়ার সবাই জানত। এখন যদি কোনও ছেলেমেয়ে কেউ কারোর সঙ্গে প্রেম করে, সেটা আটকানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এটা ইউপি নয়।”
রঙের উর্ধ্বে উঠে গ্রেফতারি
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছে, গ্রেফতারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে। তাতে কোনও রঙ দেখা হয়নি। মূল অভিযুক্ত অর্থাৎ তৃণমূল নেতার ছেলে নিজেই স্বীকার করেছে, নির্যাতিতার সঙ্গে তার প্রেম ছিল। সে কিছু করেনি বলেই দাবি করেছে মূল অভিযুক্ত। সোমবার ধৃতকে রানাঘাট আদালতে পেশ করা হয়। আদালতে ঢোকার মুখেই মূল অভিযুক্ত সাংবাদিকদের বলেন, “আমার বার্থডে পার্টি ছিল। কিন্তু আমি কিছু করিনি, আমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, তাই পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করেছে।”
‘দল কি শিখিয়ে দিয়েছিল?’
এই ঘটনায় তৃণমূল নেতার নাম জড়ানো প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “তৃণমূল তৃণমূল বলে বেড়াচ্ছেন? বাংলা রাজ্যটার সবাই তৃণমূল। কী করবেন বলুন? মা-বাবা-ভাই-বোন সবাই তৃণমূল? দল শিখিয়ে দিয়েছে কি? না দল করেছে? বাবা যদি দল করে, ছেলে কার সঙ্গে কী করছে, তাতেও তৃণমূল দেখিয়ে দিয়েছে…” তাঁর পরামর্শ, “ভালোবাসো, কিন্তু বিশ্বাসও রাখো সম্পর্কে।”
ঘটনার প্রেক্ষাপট
গত সোমবার এলাকার এক বন্ধুর জন্মদিনে গিয়েছিল এলাকার এক কিশোরী। রাতে সেখান থেকে ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। যদিও সেখানে নিয়ে গিয়ে কোনও লাভ হয়নি। সেই রাতেই মারা যায় কিশোরী। রাতেই তার বাড়ির কাছে একটি শ্মশানে দাহ করা হয় মৃতদেহ। এরপরই একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসতে শুরু করে। জানা যায়, মৃত্যুর শংসাপত্র ছাড়াই ওই নাবালিকার মৃতদেহ পোড়ানো হয়। প্রশ্ন ওঠে কেন বাড়ির লোক এমন কাজ করল? সেই উত্তর খুঁজতে গিয়েই বোঝা যায়, এই শিঁকড় অনেক দূর চলে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: পাশ না করেও ৬০৯ জনের চাকরি! এসএসসি দুর্নীতিতে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম