কলকাতা: দীর্ঘদিন পরে নিয়োগের দিকে পা বাড়িয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। স্বচ্ছভাবে নিয়োগ হবে, বারবার দাবি করছেন প্রাথমিক (Primary) শিক্ষা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি গৌতম পাল(Gautam Pal)। চেয়ারে বসেই ১১ হাজার ৭৬৫ শূন্যপদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলেন গৌতমবাবু। কিন্তু সেই শূন্য়পদে কার্যত বারবার কাঁচি চলেছে। কোর্টের নির্দেশে বারবার শূন্যপদ থেকে মামলাকারীদের চাকরি দিতে হয়েছে, হচ্ছে। এবার ৩৯২৯ শূন্য়পদও কোর্ট বরাদ্দ করে দিয়েছে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের জন্য। ফলস্বরূপ সংখ্যাটা কমতে কমতে এসে ঠেকেছে ৭ হাজারে।
হাতে থাকল কত?
হিসেব বলছে, কোর্টের নির্দেশে চাকরি দিতে দিতে পর্ষদের হাতে এসে বেঁচেছিল ১১ হাজার ৭৬০ মতো শূন্যপদ। সেখান থেকে আরও ৯৩ জনকে কোর্টের নির্দেশে চাকরি দেবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। অর্থাৎ পর্ষদের হাতে এখন ২০২২ নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য শূন্য়পদ বেঁচে আছে ১১ হাজার ৬৬৭। এর মধ্যে থেকেই ৩৯২৯ শূন্য়পদ চলে যাবে শুধুমাত্র ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের জন্য। অর্থাৎ পড়ে থাকল ৭ হাজার ৭৩৮ টি শূন্যপদ। এই শূন্য়পদের জন্যই ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত নিয়োগের আবেদন জমা নিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
নিয়োগের আবেদন শুরুর পর থেকেই বারবার বিভিন্ন সালের টেট উত্তীর্ণদের মধ্যে নিয়োগ নিয়ে বিরোধ ধরা পড়েছে। ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা দাবি করেছেন অধিক শূন্য়পদ পাওনা তাঁদের। তাঁরা ইন্টারভিউ দিয়ে বসে আছেন, তাই সরাসরি চাকরি দিতে হবে তাঁদের। অন্য়দিকে ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণরা দাবি করেছেন, তাঁরা আগে ইন্টারভিউ দিতে পারেননি, তাই অগ্রাধিকার তাঁদের প্রাপ্য। এই নিয়োগ আবেদনের জোর টক্করে শেষ পর্যন্ত লড়াই কার্যত আরও কঠিন হল মনে করছেন দুই সালের টেট উত্তীর্ণরাই।
কী বলছেন চাকরিপ্রার্থীরা?
৭৭৩৮ শূন্য়পদে সব সালের টেট উত্তীর্ণরা আবেদন করলে প্রতিযোগিতা যে তীব্রতর হবে, তা বলার অপেক্ষা থাকে না। তবে ২০১৪ ও ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণদের মার্কস প্রকাশ হওয়ার পরও চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ খুশি নন। প্রকাশিত মার্কসে ভরসা রাখতে পারছেন না তাঁরা। তাঁদের দাবি, ওএমআর শিট প্রকাশ করতে হবে। যদিও সে বিষয়ে গৌতম পালের বক্তব্য আগে কী হয়েছে তা এখন ঠিক করা সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে কোনও অভিযোগ থাকবে না। পাশাপাশি এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায়ও স্বচ্ছতাই হবে মূল ভিত্তি, এমনটাই দাবি তাঁরা। আর শূন্যপদ কমে যাওয়ায় পর্ষদের ব্যাখ্যা, ভবিষ্যতে সরকারের কাছে বছরে দু’বার শূন্যপদ চাইবে পর্ষদ। তা হলে টেট পাশদের আর বসে থাকতে হবে না। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা তো ভবিষ্যতে, বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে প্রতিযোগিতা চরমে উঠবে, তা বুঝছেন চাকরিপ্রার্থীদের অধিকাংশই।