CPIM: অভিযোগের ৩০ মিনিটের মধ্যে ‘অ্যাকশন’! জেলা সম্মেলনের আগেই নতুন ‘রণনীতি’ সিপিএমের?
CPIM: সুশান্ত ঘোষের পদ বিচ্যুতির সঙ্গেও একই ভাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনীতিতে দীর্ঘকাল ছড়ি ঘোরানো এক রাজ্য শীর্ষ নেতার বড় ভূমিকা ছিল বলে কানাঘুষো রয়েছে আলিমুদ্দিনের আনাচে-কানাচে। এমনকি তন্ময়ের ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, ফাঁসানো হয়েছে বরাহনগরের বাসিন্দা ওই সিপিআইএম নেতাকে।
কলকাতা: গত দু’মাসের চিকিৎসকদের আন্দোলন। তার সঙ্গে জুড়ে থাকা নাগরিক আন্দোলন কিছুটা অক্সিজেন দিয়েছে সিপিআইএমকে। সে আন্দোলনের বড় অংশ জুড়ে ছিল নারী সুরক্ষার দাবি। এহেন আবহে তন্ময় ভট্টাচার্য, সুশান্ত ঘোষরা কি বেকায়দায় ফেলছেন না সিপিআইএমকে, চর্চা চলছে রাজনীতির উঠোনে!
বঙ্গ সিপিআইএমের পরিচিত মুখ সুশান্ত ঘোষ, তন্ময় ভট্টাচার্যদের এহেন ‘আচরণে’ সিপিএম বিরোধীরা নতুন করে অস্ত্র পেল নাকি? প্রশ্ন রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে। যদিও দ্রুত তন্ময় ভট্টাচার্যকে সাসপেন্ড করেছে সিপিআইএম। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদকের পদ থেকে সরানো হয়েছে সুশান্ত ঘোষকেও।
তন্ময়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে তা দলের ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটিতে পাঠিয়েছেন মহম্মদ সেলিমরা। সেই সঙ্গে দলের সদস্য পদ থেকে দ্রুত সাসপেন্ড করা হয়েছে প্রাক্তন সিপিআইএম বিধায়ককে। তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল সিপিআইএমের অন্দরে। যা জবাব দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর কথায়, “আগে ছিল দলের মধ্যে কেউ অভিযোগ করলে পদক্ষেপ করা হত। এখন যে কেউ অভিযোগ করলেই পদক্ষেপ করা হয়।” যা দলের সাংগঠনিক নিয়ম বদলের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত।
যতদিন তদন্ত চলবে, ততদিন সাসপেন্ড থাকবেন তন্ময়। তারপরে অঞ্জু কর, রেখা গোস্বামী, সুমিত দে এবং আভাস রায় চৌধুরীদের নিয়ে গঠিত কমিটি যে রিপোর্ট দেবে, সেই অনুসারে পদক্ষেপ করবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। এদিকে ক্ষমতা থেকে সরে গিয়েছে সিপিআইএম। ভোট শতাংশ তলানিতে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বড় অংশের মতে, তবুও কমিটির পদ নিয়ে সিপিআইএমের অন্দরে কাটাকুটির খেলা চলে। আর যা হয় সম্মেলনে। ইতিমধ্যেই সিপিআইএমের এরিয়া কমিটির সম্মেলন শুরু হয়েছে। ডিসেম্বর জানুয়ারি জুড়ে জেলা সম্মেলন। তন্ময়ের ঘটনার সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা রাজনীতির নয়া সমীকরণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কি না, তা নিয়েও চর্চা চলছে সিপিআইএমের অন্দরে।
সুশান্ত ঘোষের পদ বিচ্যুতির সঙ্গেও একই ভাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনীতিতে দীর্ঘকাল ছড়ি ঘোরানো এক রাজ্য শীর্ষ নেতার বড় ভূমিকা ছিল বলে কানাঘুষো রয়েছে আলিমুদ্দিনের আনাচে-কানাচে। এমনকি তন্ময়ের ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, ফাঁসানো হয়েছে বরাহনগরের বাসিন্দা ওই সিপিআইএম নেতাকে। তন্ময়ের কথায়, ‘পরিকল্পিত কুৎসা’। অন্যদিকে হোল টাইমার না হয়েও শেষ সম্মেলনে (২০২২ সাল) কি করে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে জায়গা পেয়েছিলেন তন্ময়? তা নিয়ে আলোড়িত হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিআইএম।
বছর তিনেকের ব্যবধানে সেই সম্মেলন পর্বে আবারও তন্ময়কে নিয়ে চর্চা। তবে অতীতের বিভিন্ন ঘটনায় দলের অন্দরে অভিযোগ হলেও কেন শাস্তি হয়নি, তাও নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে সিপিআইএমে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বড় অংশের মতে, ভোট নেই। কিন্তু একে অপরকে ছুরি মারার ঘটনা সিপিআইএমের অন্দরের এখনও অব্যাহত। সম্মেলন পর্বে তাতে আরও ধুনো দিল কি তন্ময় ভট্টাচার্যের ঘটনা? প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছেই।