‘এক্সিলেটর কন্ট্রোল মে…’, আত্মবিশ্বাস কাজে লাগল না যুবকের, মুখের বিভত্সতায় চিনতে পারাই দায়!

Kolkata: গাড়ি সজোরে এসে ধাক্কা মারে তুষারের স্কুটিতে। ছিটকে পড়ে যান তুষার।

'এক্সিলেটর কন্ট্রোল মে...', আত্মবিশ্বাস কাজে লাগল না যুবকের, মুখের বিভত্সতায় চিনতে পারাই দায়!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 24, 2021 | 7:43 AM

কলকাতা: এ হাসপাতাল থেকে ও হাসপাতাল! নিয়ে যাওয়া হল, হল ভর্তিও, কিন্তু চিকিত্সা হল না আর তাতেই রোগী মৃত্যু! এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। দুর্ঘটনায় আহত এক যুবকের মৃত্যুতে কাঠগড়ায় পার্কসার্কাসে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। যুবকের পরিবারের অভিযোগ, অনেক চেষ্টা করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও, চিকিত্সা হয়নি। মৃত যুবকের নাম তরুণ রাও ওরফে তুষার। বয়স ২০।

বছর কুড়ির তুষার একবালপুরের মোমিনপুরের তিনকোনিয়া মাঠবাড়ি এলাকার ছেলে। স্কুটি তাঁর চালানো শখ। মাঝেমধ্যেই স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন এদিক-ওদিক। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, স্কুটি চালাতে বেশ দক্ষ ছিলেন তুষার। তবে গতি তাঁর নিয়ন্ত্রণে থাকত না। ফাঁকা রাস্তায় ঝড়ে গতিতে উড়ত তাঁর দুচাকার যান। পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশীরা তাঁকে এ নিয়ে একাধিকবার বারণ করেছিলেন। কিন্তু তুষারের কথায়, ‘কুছ নেহি হোগা…অ্যাক্সিলেটর কন্ট্রোল মে হ্যায়…’। কিন্তু আত্মবিশ্বাস কাজে লাগেনি তাঁর।

সোমবার সকালেও বাড়ি থেকে স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে যান তুষার। রিমান্ড রোড সকালে সাড়ে দশটা নাগাদ ঘটে সেই দুর্ঘটনা। রাস্তার ধার দিয়েই যাচ্ছিলেন তুষার। উল্টোদিক থেকে চলে আসে একটি প্রাইভেট গাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, সেই গাড়ির গতিবেগও বেশি ছিল।

গাড়ি সজোরে এসে ধাক্কা মারে তুষারের স্কুটিতে। ছিটকে পড়ে যান তুষার। তাঁর মাথা, মুখ কার্যত থেঁতলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় বেশ কিছুক্ষণ পরে থাকেন তিনি। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “গতিবেগ আসলে দু’জনেরই বেশি ছিল। মুখোমুখি হয়ে পড়লে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি কেউই। ফলে নিমেশে ধাক্কা লাগে। স্কুটি থেকে অনেকটা দূরেই আছড়ে গিয়ে পড়েন ওই যুবক।”  স্থানীয়রাই তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে সিএমআরআই হাসপাতালে ভর্তি করান। রক্ত তখনও বেরিয়ে যাচ্ছে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

পরিবারের বক্তব্য, সেখানেও পর্যাপ্ত চিকিত্সা হয় না তুষারের। এরপর তাঁকে পার্কসার্কাসে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে থাকেন তুষার। এরপর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ চিকিত্সকরা জানিয়ে দেন, তুষারের মৃত্যু হয়েছে।

এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, চিকিত্সা না পেয়েই মৃত্যু হয়েছে তুষারের। এক্ষেত্রে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তাঁরা।

তুষারের এক আত্মীয়ের কথায়, “আমরা ওকে নিয়ে তিন হাসপাতাল ঘুরলাম। কিন্তু সেভাবে চিকিত্সা পেল না ছেলেটা। শরীর থেকে অনেক রক্ত বেরিয়ে গিয়েছে। এখানে বিকালের মধ্যেই ভর্তি করিয়েছিলাম। মনে করেছিলাম, সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু রাতে এই খবর। সঠিক চিকিত্সা পেলে বাঁচানো সম্ভব হত।” হাসপাতালের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। চিকিত্সকরাও এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। আরও পড়ুন: Photo Gallery: হলমার্কের সঙ্গে HUID, কেন্দ্রের নতুন নিয়মে ধর্মঘট স্বর্ণব্যবসায়ীদের!