আজই বাবা পুরুলিয়া ঘুরতে নিয়ে যেত, তাই এখনও অপেক্ষা করে বসে রয়েছে গিরীশের ৮ বছরের প্রিন্স!
সোমবার স্ট্র্যান্ড রোডের আগুন (Strand Road Fire) নেভাতে গিয়ে আর ফেরা হল না তাঁর।
কলকাতা: পরিবারের একমাত্র সন্তান ছিলেন গিরীশ দে। পাটুলির এন ব্লকে বারো বছরের বাসিন্দা। মঙ্গলবার স্ত্রী-বাচ্চাকে নিয়ে পুরুলিয়া ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। ব্যাগও গোছানো ছিল। কিন্তু সোমবার স্ট্র্যান্ড রোডের আগুন (Strand Road Fire) নেভাতে গিয়ে আর ফেরা হল না তাঁর।
গিরীশ সাব অফিসার পদে লালবাজার দমকল কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরের ট্রেনে স্ত্রী ও আট বছরের সন্তানকে নিয়ে পুরুলিয়া ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল। সোমবার দুপুরেও শেষ কথা হয়েছিল স্ত্রীয়ের সঙ্গে। এখনও পর্যন্ত আট বছরের প্রিন্স জানে না, তার বাবা নেই।
বারবার করে সে তার মাকে জিজ্ঞাসা করছে, “বাবা দুপুরে আসবে। আমাদের ব্যাগ গোছানো হয়েছে?” কিন্তু কোনও কথা নেই মায়ের মুখে। প্রিন্সকে দোতলা থেকে নামতে দেওয়া হয়নি। বাবার দেওয়া নতুন জামা পরেই সে পুরুলিয়া যাবে। সেটাও নামিয়ে রেখেছে সকাল সকালই।
আরও পড়ুন: স্ট্র্যান্ড রোডের আগুনে পুড়েছে শালিক পাখিটার মনও, কিচ্ছু না খেয়েই গৌরবের অপেক্ষায় ঠাঁয় বসে
কিন্তু গোটা পৃথিবীটাই যে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে দে পরিবারে। গত ১৩ বছর ধরে কর্মরত গিরিশ। জাপানে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তিনি। নাগপুর, মধ্যপ্রদেশ, বেঙ্গালুরু থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এই বছরের শেষে তাঁর দমকল দফতরের ওসি পদে পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। তাই মেদ ঝরাচ্ছিলেন তিনি। বাবা – মায়ের একমাত্র সন্তান গিরিশ। প্রথমে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, তারপর দমকলের সদর দফতর, শেষে লালবাজার কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন তিনি। বাবা যে আর বাড়ি ফিরবেন না। ছোট্ট ছেলেটাও হয়তো তা বুঝে যাবে একদিন।