রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসার রিপোর্ট চেয়ে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্যসচিবকে তলব রাজ্যপালের

রাতে টুইট, বেলা বাড়তেই তলব। ভোট পরবর্তী হিংসা, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যের নতুন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে (H K Dwivedi) তলব করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)।

রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসার রিপোর্ট চেয়ে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্যসচিবকে তলব রাজ্যপালের
মুখ্যসচিবকে তলব রাজ্যপালের
Follow Us:
| Updated on: Jun 06, 2021 | 1:02 PM

কলকাতা: রাতে টুইট, বেলা বাড়তেই তলব। ভোট পরবর্তী হিংসা, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যের নতুন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে (H K Dwivedi) তলব করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। আগামিকাল, সোমবার সকাল ৭টায় মুখ্যসচিবকে তলব করেছেন তিনি। রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।

মধ্যরাতে টুইটে রাজ্যপাল লিখেছেন, “ভোট পরবর্তী হিংসা যেভাবে চলছেই, মানবতাকে লজ্জা দেবে। পুলিশ কিছুই করছে না। ফলে সাহস বাড়বে। পুরোটাই বিরোধীদের শাস্তি দিতে। ”

শনিবার কার্যত মধ্যরাতে টুইট করেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করে টুইট করেন। সেখানে তিনি একদিকে যেমন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন, তেমনি রাজ্য পুলিশের ডিজিকে ট্যাগ করে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধেও বার্তা দিতে চেয়েছেন। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা বর্তমান পরিস্থিতিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

এক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যপাল আবারও অভিযোগ করেছেন, ভোট পরবর্তী হিংসা এখনও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু তা প্রতিহত করতে পুলিশ যথাযথ পদক্ষেপ করছে না। নিজের বক্তব্যের সাপেক্ষে তিনি ভিডিয়ো ও অভিযোগপত্র তুলে ধরেছেন।

রাজ্যপাল ঠিক এর আগেই টুইটটি করেছিলেন কলাইকুণ্ডার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে। সেখানে অভিযোগ করেছিলেন, “গত ২৭ মে রাত ১১টা বেজে ১৬ মিনিটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় একটি মেসেজ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারি? খুব জরুরি’।” তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক বয়কট করার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন বলে দাবি করেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল লেখেন, “উনি আমায় ফোন করে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ওই বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী থাকলে তিনি সদলে ওই বৈঠক বয়কট করবেন।”

আরও পড়ুন: ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ’, টিকাকরণ নীতি ঘিরে বিতর্ক থামাতেই ফের সাফাই কেন্দ্রের

তবে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত বার্তা এভাবে টুইট করে প্রকাশ্যে আনায় ক্ষুব্ধ হয় তৃণমূল শিবির। এদিকে, তার দুদিনের মধ্যেই শুভেন্দু অধিকারী বৈঠক করেন রাজ্যপালের সঙ্গে। তাঁর এদিনের টুইটে আবারও মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছেন তিনি। তাতে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত আরও কিছুটা বাড়ল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, “যে ভাষায় কথা বলছেন বিজেপি নেতারা, ঠিক সেই ভাষাতেই কথা বলছেন রাজ্যপাল। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। স্বাধীনতার পর এমন রাজ্যপাল দেখা যায়নি। প্রতিদিনই তিনি প্রচার চান। সে টুইট করেই হোক, কিংবা সাংবাদিক সম্মেলন করে। যদি প্ররোচনামূলক অশান্তি হয়ে থাকে, তিনি যেদিন থেকে এসছেন, সেদিন থেকেই প্ররোচনা জুগিয়েছেন। বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছেন। তাঁর কিছু বলার থাকতেই পারে, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে পারতেন। এগুলো সংবিধান সম্মত নয়। রাজ্যপাল এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করছেন।”

আরও পড়ুন: হার কেন? এক মাস পর কারণ খুঁজে বিজেপির সাংগঠনিক স্তরে হতে পারে বড়সড় রদবদল

রাজ্যপালকে বেলাগাম আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি রাজ্যপালের পদের অপমান করছেন বলে ধনখড়কে তোপ কুণালের। তিনি বলেন, “রাজ্যপাল সাংবিধানিক পদমর্যাদাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছেন। তিনি মানসিক অবসাদগ্রস্ত।”