বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে, ফের বিতর্কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

Jadavpur University: জানা গিয়েছে, লিঙ্গুইস্টিক্সের এক অধ্যাপক এক ছাত্রীর সঙ্গে আলাপ জমান।

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে, ফের বিতর্কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 01, 2021 | 2:44 PM

কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক গবেষক ছাত্রীর সঙ্গে সহবাস করেছিলেন ওই অধ্যাপক। ইতিমধ্যেই ওই গবেষক ছাত্রী যাদবপুর থানা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইন্টারনাল কমপ্লেইন সেল বিষয়টির তদন্ত করছে। দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গিয়েছে, লিঙ্গুইস্টিক্সের এক অধ্যাপক এক ছাত্রীর সঙ্গে আলাপ জমান। তাঁর সঙ্গে প্রথমে বন্ধুত্ব পরে প্রেমের প্রস্তাব দেন। ওই ছাত্রীর বয়ান অনুযায়ী, ওই অধ্যাপকের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। অধ্যাপক তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। একাধিকবার তাঁরা ঘনিষ্ঠ হয়েছেন বলে অভিযোগ।

ছাত্রীর অভিযোগ, ওই অধ্যাপক তাঁর বিয়ে করার কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরই ক্লাস করতে করতে ওই অধ্যাপকের নজরে পড়েন তিনি। নোটে কোনও সমস্যা হলে তাঁকে ফোন করতে বলেছিলেন অধ্যাপক। এইভাবেই শুরুটা হয়। ছাত্রী বিভিন্ন সময়ে ফোন করেন ‘স্যার’কে। দু’জনের মধ্যে কথা হতে থাকে। এরপর তাঁরা ক্লাসের বাইরে দেখাও করতে থাকেন। দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের রঙ গাঢ় হতে থাকে। অভিযোগকারিনীর বক্তব্য, অধ্যাপক তাঁকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে কথা বিশ্বাস করেছিলেন তিনিও।

ক্লাসের বাইরেও নোটের জন্য অধ্যাপকের সঙ্গে দেখা করতে শুরু করেন তিনি। এইভাবেই তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা হয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় ‘স্যার’এর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন তিনিও। অভিযোগ, ইদানীং সেই অধ্যাপক তাঁকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। তাঁর ফোন ধরা বন্ধ করে দেন। ক্লাসেও তাঁকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন। এরপর ছাত্রী নিজে যোগাযোগ করতে গেলে তাঁকে অপমানও করেন। বিয়ে করার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেন তিনি।

ছাত্রীকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি লিঙ্গুইস্টিক্স ডিপার্টমেন্টে এফআইআর-এর কপি পাঠিয়ে দিয়েছি। আমাকে মানসিকভাবে অত্যাচার করা হয়েছে। তার আগে তো শারীরিক নির্যাতন হয়েছে। আমি তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে আইনানুগ ব্যবস্থা চেয়েছি। ভিসিকেও অভিযোগ জানিয়েছি। ওঁ আগেও এই কাজ করেছেন। আমি চাই আমি যেন ওঁর শেষ ভিক্টিম হই। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও ধর্ষকের জায়গা নেই।”

বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেছেন, “আমি রেজিস্টারকে কালই বলেছি। ওঁকে সব পদ থেকে যাতে সরিয়ে দেওয়া হয়। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেছেন, “আমাদের দেশে যা আইন রয়েছে, সেই আইন অনুযায়ী মেয়েটি পদক্ষেপ করেছেন। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। এছাড়া আমরাও অন্তর্বিভাগীয় তদন্ত করে দেখছি। অভিযোগ প্রমাণীত হলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক একটি ঘটনা।” বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট আইসিসি কমিটি বিষয়টির তদন্তও ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে বলেই খবর।

যদিও এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপকের এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তিনি এখনও কিছু এ ব্যাপারে বলতে চাননি। উল্লেখ্য, এর আগেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ হেন অভিযোগ উঠেছে। তার জেরে বিতর্ক নেহাতই কম হয়নি।  আরও পড়ুন: পলিথিনে এনেছিলেন, গায়ে ঢেলে হাতে নেন দেশলাই! ছেলের কারণে থানায় মায়ের মারণ লড়াই