কলকাতা: ৬ ঘণ্টা ধরে এসএসকেএমের বাইরে বিনা চিকিৎসায় পড়ে রইলেন রোগী! কোনও সাধারণ রোগীর পরিবার নয়, এমন অভিযোগ জানাচ্ছেন খোদ বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি নিজে ছুটে এসেছিলেন, তাতেও লাভ হয়নি। সেই রোগীকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে। যে এসএসকেএমকে ‘দেশের সেরা হাসপাতাল’ বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, সেই হাসপাতালে দাঁড়িয়ে তাঁরই দলের বিধায়ক যা বললেন, তা বিস্ফোরক বললেও হয়ত কম বলা হবে! টাকা নিয়ে ভর্তি থেকে ভিআইপি-দের সুবিধা দেওয়ার মতো অভিযোগ তুললেন কামারহাটির বিধায়ক।
রাত তখন ১ টা। বাইরে সাংবাদিকদের ভিড়। মদন মিত্রের সুপারিশ সত্ত্বেও রোগীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। সেখানে দাঁড়িয়ে হাসপাতালের কর্মীদের মদন জিজ্ঞেস করেন, ‘ওদের ঢুকতে দিচ্ছিস কেন? ক্যাশ দিয়েছে? কত মাল দিয়েছে তোদের?’ টাকা দিলেই তবেই নাকি ট্রমা কেয়ারে জায়গা পাওয়া যায়, মধ্যরাতে এমনই অভিযোগ তুললেন তিনি। ১০ বা ৫০ হাজারে ট্রমা কেয়ারের বেড বিক্রি হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন বিধায়ক।
এখানেই শেষ নয়। এসএসকেএম-কে ‘ফুর্তি করার অডিটোরিয়াম’ বলেও তোপ দেগেছে মদন মিত্র। একসময় রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন মদন। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সারদা-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর অসুস্থ হয়ে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন এই হাসপাতালে। সেই মদন মিত্র এদিন বলেন, ‘আগে পিজির নিয়ম ছিল, বেড না দিতে পারলে ডাক্তার এমার্জেন্সি থেকে বেরিয়ে গিয়ে রোগী দেখবে। তা না করে ভিতরে বসে চা খাচ্ছে, সিগারেট খাচ্ছে, আর কী খাচ্ছে জানি না। বসে বসে মজা নিচ্ছে। হাসপাতাল না ফুর্তি মারার অডিটোরিয়াম!’
রাত ৯ টার পর কেন হাসপাতালের সুপার বা ডিরেক্টর ফোন ধরেন না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মদন। তাঁর প্রশ্ন, ‘হাসপাতাল টা কি বড়লোকের না ভিআইপি-র? আমাদের সঙ্গে এমন হলে, গরিব মানুষগুলোর কী হবে?’
মদনের দাবি, তিনি বিধায়ক বলে তাঁকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে, অথচ রোগীর পরিবার ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে, ছুটে এসে আটকেছে পুলিশ। পুলিশকেও কড়া ভাষায় তোপ দাগতে শোনা গিয়েছেন মদনকে। তিনি বলেছেন, ‘বড় বড় লোক এলে তাদের প্রোটেকশন, চা জল-খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য রাখা হয়েছে পুলিশকর্মীদের।’ এসএসকেএম ‘জনগণের হাসপাতাল নেই’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এই ঘটনায় দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ।