কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে শাসক দলকে। তৃণমূল নেতাদের ঘরে ঘরে কীভাবে চাকরি হল? তৃণমূল আমলে কীভাবে চাকরি প্রার্থীদের প্রাপ্ত ১ বা ২ নম্বর বদলে গেল ৫১-৫২ তে? দলের নেতাদের রোজই সে সব অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। সেই অভিযোগের জবাব দিতে এবার বাম আমলের তথ্য সামনে আনতে উদ্য়োগী তৃণমূল। শুক্রবার কালীঘাটের মেগা বৈঠকেও সে ব্যাপারে বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বাম আমলের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে পোস্ট মর্টেম হবে। বৈঠকে তিনি এমনটাই বলেছেন বলে সূত্রের খবর।
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে জেলে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী, যাঁকে দলের প্রথম সারির নেতা বলেই এতদিন চিনত বাংলা মানুষ। একই জেলে রয়েছেন তৃণমূলেরই বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। তাঁর আবার স্ত্রী, পুত্র সবাই জেলবন্দি। কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে এখনও পর্যন্ত যা উঠে এসেছে তার সারমর্ম হল, বিপুল টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে, অবৈধভাবে চাকরি দিতে কেউ বা কারা বদলে দিয়েছিল ওএমআর শিটের নম্বর। তবে চাকরি কি শুধু তৃণমূলের আমলেই বিক্রি হয়েছে? সম্প্রতি এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে শাসক দল।
দিনকয়েক আগে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, বাম জমানায় সিপিএমের এমন কোনও হোলটাইমার ছিলেন না, যাঁদের পরিবারের কেউ না কেউ সরকারি চাকরি পাননি। কুণালের পর বাম আমল নিয়ে কাটাছেঁড়ার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। তিনি জানিয়েছেন, সিপিএম আমলে কোন নেতার পরিবারে কে চাকরি পেয়েছিলেন, তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার তৃণমূল নেতাদের। দলের তরফে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এবার সেই একই কথা বললেন খোদ মমতা। সূত্রের খবর, তিনি নাকি জানিয়েছেন বাম আমলের দুর্নীতি নিয়ে পোস্টমর্টেম হবে। সে সময় কাদের চাকরি হয়েছিল, কোন পর্যায়ে হয়েছিল স্বজনপোষণ, তা খুঁজে বের করাই হবে তৃণমূলের লক্ষ্য।
বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী আগেই এ ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ করেছেন রাজ্য সরকারকে। তিনি দাবি করেছেন, বাম আমলের এমন কোনও তালিকা প্রকাশ করতে পারবে না তৃণমূল, কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে তাঁরা দেখবেন বাম আমলে সবার চাকরি স্বচ্ছতার সঙ্গেই হয়েছিল। বামেরা যে এমন বার্তায় ভয় পাচ্ছে না, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন সুজন চক্রবর্তী।