কলকাতা : রাত তখন অনেকটাই বেশি। আচমকা থানায় হাজির হলেন এক ব্যক্তি। পুলিশকে নিজেই জানালেন দাদা খুন করে এসেছেন তিনি। মুখে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে ফেলেছেন দাদাকে। এমন কথা শুনে হকচকিয়ে যান পুলিশ কর্মীরাও। তাঁরা কিছুটা অবাক হয়ে যান। প্রথমটায় কথাটা প্রলাপ বলে মনে হলেও, বারবার ওই ব্যক্তি বলতে থাকায় সন্দেহ বাড়ে। তারপর ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ওই ব্যক্তির বাড়িতে প্রবেশ করেই পুলিশ দেখেন এক ব্যক্তি অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
কলকাতার বাঁশদ্রোণী থানা এলাকার নিরঞ্জন পল্লীর ঘটনা। দাদাকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে বাঁশদ্রোণী থানায় গিয়েই আত্মসমর্পণ করেন আততায়ী ভাই। পুলিশ জানতে পেরেছে মৃতের নাম দেবাশিস চক্রবর্তী। আর বছর ৪৮-এর দেবাশিসকে খুন করেছেন তাঁর নিজের ভাই শুভাশিস চক্রবর্তী। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই গ্রেফতার করা হয়েছে শুভাশিসকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মাস খানেক আগে বাঁশদ্রোণীর নিরঞ্জন পল্লীতে একটি বাড়ি ভাড়া নেন ওই দুই ভাই। এলাকার মানুষজনের সঙ্গে কথাবার্তাও বলতেন তাঁরা। প্রতিবেশীরা তাঁদের বিষয়ে খুব বেশি কিছু না জানলেও এটুকু বলছেন যে দুই ভাইয়ের সম্পর্ক খারাপ ছিল না। এক প্রতিবেশী জানান, দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য হতে কখনও দেখেননি তাঁরা। পাড়ার দোকান তেকে জিনিসপত্র কিনতে প্রায়ই আসতেন ওই দুই ভাই। তবে অভাব যে ছিল, এ কথা বুঝতে পেরেছিলেন পাড়াল লোকজন।
দুই ভাইয়ের আসল বাড়ি কোথায়, তা এখনও জানা যায়নি, তবে এর আগেও অন্য একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন তাঁরা। তাঁদের পেশা কী, কী ভাবে তাঁরা উপার্জন করতেন, তা জানা যায়নি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, খুনের পিছনে অন্যতম কারণ হতে পারে আর্থিক অনটন। ধৃত ওই ব্যক্তিও অভাবের কথা জানিয়েছেন পুলিশি জেরায়। দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। ধৃত শুভাসিস চক্রবর্তীর মানসিক ভারসাম্য ঠিক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে পুলিশ।