কলকাতা: শতবর্ষ প্রাচীন পাথুরিয়াঘাটা রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। থিম আর আলোকসজ্জার থেকে বহুদূরে দেবীর আরাধনাই এই পুজোর প্রাণ। রাজবাড়ির প্রতিটি খিলানে রয়েছে ইতিহাস, রয়েছে ঐতিহ্য। এ রাজবাড়ির ঠাকুরদালান টেনে নিয়ে যায় ইতিহাসের সরণিতে। যেখানে বোনা রয়েছে আদি-প্রাচীন কোনও নকশিকাঁথা। শোনা যায়, এ পুজোয় শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস দেব এসেছিলেন, এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধীও। ষষ্ঠীর সকাল থেকে উৎসবের মেজাজ পাথুরিয়াঘাটা রাজবাড়িতে। ষষ্ঠীকল্পাদি পুজো দিয়ে শুরু হয় দেবীর আবাহন। সন্ধ্যায় হবে অধিবাস, নবপত্রিকা স্থাপন।
প্রাচীন রীতিনীতি, আচার নিষ্ঠা মেনেই হয় এই পুজো। চারদিন ধরে মহাস্নান, সপ্তমীবিহিত পুজো অষ্টমী, সন্ধিপুজো, নবমীতে কুমারী পুজো, পুণ্য হোম। পাথুরিয়াঘাটা রাজবাড়ির পুজোর অন্যতম আকর্ষণ দশমীতে কনকাঞ্জলি। এই রাজবাড়ির পুজোর বিশেষ ঐতিহ্যও বটে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দুর্গা প্রতিমার মতো এই রাজবাড়ির প্রতিমার ক্ষেত্রে সিংহের মুখ ঘোড়ার মুখের আদলে। দেবী দুর্গাকে শাক্ত মতে পুজো করা হয় এখানে।
থিম-সাবেকিয়ানা-নান্দনিকতায় মিলেমিশে একাকার ষষ্ঠীর সকাল। সকাল থেকেই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে মানুষের ভিড়। মণ্ডপে ধূপ ধুনোর গন্ধ, ঢাকের বোল আর, মায়ের অপরূপ মূর্তি। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব একেবারে জমজমাট। উত্তর কলকাতায় বিভিন্ন বাড়ির পুজো ঘিরেও একইরকম উন্মাদনা। সে রাজবাড়ির পুজো হোক বা জমিদার বাড়ির পুজো, একইরকম প্রাণের ছোঁয়া প্রাণের পুজোয়।