Politics around Kolkata Metro: প্রকল্প এক, দাবিদার তিন! মেট্রো তুমি কার?
Kolkata Metro: কৃতিত্বের দাবি ও ভোট রাজনীতি নিয়ে যখন দুই ফুলের টক্কর, তখন সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে কৃতিত্বের কাড়াকাড়িতে আসরে বামেরাও। পশ্চিমবঙ্গ সিপিএমের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে শিলান্যাসের ছবি।

কলকাতা: তিন নয়া রুটে মেট্রোর উদ্বোধন তো হল। কিন্তু কৃতিত্ব কার তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে দড়ি টানাটানি। তীব্র তরজা রাজনৈতিক মহলে। উদ্বোধনের আগে তো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের ছবি শেয়ার করে কুণাল ঘোষ তো স্পষ্টই লিখে দিলেন, “বাংলাকে উজাড় করে নতুন রুট, লাইন, ট্রেন, স্টেশন, প্রকল্প, কর্মসংস্থান দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ প্রধানমন্ত্রী যা উদ্বোধন করবেন, সেগুলিও মমতাদির ভাবা, অনুমোদন আর্থিক বরাদ্দ করা।”
এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলায় এলেন। সবুজ পতাকা দেখালেন। শহরের গতি আরও বাড়ল। ১৯৮৪ সালে বাম জমানায় কলকাতায় গড়িয়েছিল মেট্রো রেলের চাকা।১৯৮৪ থেকে কাট টু ২০২৫। বাম জমানাকে বাম পাশে রেখে রাজ্য এখন জোড়া ফুলের দখলে। কলকাতার এই গতির কৃতিত্ব কি তাহলে জোড়া ফুলের? কিন্তু কৃতিত্বের দাবি যে পদ্মফুলও ছাড়তে নারাজ। কিছুটা ব্যতিক্রমী হয়ে বামেরাও নেমেছে আসরে। মেট্রো তুমি কার? কৃতিত্বের কাড়াকাড়ি তুঙ্গে।
সোশ্যাল মাধ্যমে পোস্ট মুখ্যমন্ত্রীর
সোশ্যাল মাধ্যমে পোস্ট করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নস্টালজিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘ভারতের রেলমন্ত্রী হিসাবে কলকাতায় অনেকগুলি মেট্রো রেল করিডরের পরিকল্পনা করা ও অনুমোদন দেওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। এটা বলতে আমার কোনও দ্বিধা নেই যে এই শহরের বিভিন্ন প্রান্তকে একটি মহানাগরিক মেট্রো গ্রিড-এ সংযুক্ত করার জন্য যাবতীয় কাজ, তার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা, প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা করা, সময়ে কাজ শুরু করা, সব কিছুরই সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।’ এরপরই তাঁর সংযোজন, ‘রেলমন্ত্রী হিসাবে যে পরিকল্পনাগুলি করেছিলাম, সেগুলি ফিল্ডে যাতে সঠিকভাবে শেষ হয় তার ব্যবস্থা আমরাই করেছিলাম। এই সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। মেট্রো পরিকাঠামো সম্প্রসারণ আমার একটি দীর্ঘ সফরের অন্যতম অংশ। আজ আমাকে কিছুটা স্মৃতিকাতর হতে দিন।’
ভারতের রেলমন্ত্রী হিসেবে কলকাতায় অনেকগুলি মেট্রো রেল করিডরের পরিকল্পনা করা ও অনুমোদন দেবার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। এটা বলতে আমার কোনো দ্বিধা নেই যে, এই শহরের বিভিন্ন প্রান্তকে একটি মহানাগরিক মেট্রো গ্রিড-এ সংযুক্ত করার জন্য যাবতীয় কাজ, তার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করা, প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা করা, সময়ে কাজ শুরু করা, সব কিছুই করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। রেলমন্ত্রী হিসেবে যে পরিকল্পনাগুলো করেছিলাম, সেগুলো ফিল্ডে যাতে সঠিকভাবে শেষ হয় তার ব্যবস্থাও আমরাই করেছিলাম, এই সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। মেট্রো পরিকাঠামো সম্প্রসারণ আমার একটি দীর্ঘ সফরের অন্যতম অংশ। আজ আমাকে কিছুটা স্মৃতিকাতর হতে দিন।
কী বলছে বিজেপি?
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম যেমন বলছেন, “এই সবক’টা প্রজেক্টের যদি শ্রেয় কারও থাকে তাহলে তার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রজেক্টকে ১০ বছর দেরি করিয়ে দিয়ে, এখন এসে নির্বাচনের সময় বাংলা প্রেম ওরা দেখাতে পারে। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভিজবে না।” তবে মুখ্যমন্ত্রীর নস্টালজিক বার্তা, বা ফিরহাদের আক্রমণ, কোনও কিছুই পাত্তা দিতে নারাজ বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলছেন, “যদি সত্যি উন্নয়নের কথা ভাবতেন তাহলে চিংড়িহাটাতে যে ৩০০ মিটারের কাজ হত। মেট্রো রেলের সঙ্গে সহযোগিতা করা হলে আজ এয়ারপোর্টের সঙ্গে সরাসরি দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়ার যোগাযোগ হয়ে যেত।”
কী বলছে বামেরা?
কৃতিত্বের দাবি ও ভোট রাজনীতি নিয়ে যখন দুই ফুলের টক্কর, তখন সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে কৃতিত্বের কাড়াকাড়িতে আসরে বামেরাও। পশ্চিমবঙ্গ সিপিএমের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে শিলান্যাসের ছবি, আর লেখা ‘কলকাতার ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো করিডর – বামফ্রন্ট সরকারের দূরদর্শী পরিকল্পনার ফসল। মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়, রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী, সাংসদ সুধাংশু শীল, অমিতাভ নন্দী, তড়িৎবরণ তোপদার, মহম্মদ সেলিম সহ বহু বিশিষ্ট মানুষের উপস্থিতিতে এই প্রকল্পের শিলান্যাস হয়।’ সোজা কথায়, প্রকল্প এক, দাবিদার তিন। জনতা কার দাবিতে সবুজ সংকেত দেবে? ভোটের বাক্স কি সেই উত্তর দিতে পারবে? প্রশ্ন ঘুরছে।
