কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতির আবহে যেখানে রোজই নতুন করে অস্বস্তি বাড়ছে শাসক তৃণমূলের সেখানে এবার সিপিএমের (CPIM) লোকাল কমিটির প্যাডের কাগজে লেখা চাকরির ‘সুপারিশপত্র’ (সেটি টিভি-৯ বাংলা যাচাই করেনি) ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media)। শুরু হয়েছে শোরগোল। ময়দানে নেমে পড়েছেন তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতারা। টুইটেই চিরকুট পোস্ট করে তদন্তের দাবি করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের জুনের মাঝামাঝি এই চিঠিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসে। সেই সময়েও বামেদের দুর্নীতির প্রসঙ্গ সামনে এনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। আবার এই পর্বেও সেই একই চিঠি সামনে আসায় তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে।
এটা নিয়ে তখন বামেরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিল। স্পষ্ট বলা হয়েছিল এই চিঠি পুরোপুরিই ভিত্তিহীন। এদিকে এই ভাইরাল চিঠিতে খুঁটিয়ে পড়লে দেখা যাচ্ছে চিঠিটি ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর কমরেড খগেন্দ্রনাথ মাহাতোর উদ্দেশে লেখা হয়েছে। সেখানে লেখা, ‘কমরেড, আমি শ্রী মোহিতলাল হাজরা গ্রাম পালজাগুল পোস্ট জাগুল জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর জানি ও চিনি। এবং খুব দুঃস্থ পরিবারের ছেলে। বামপন্থী আন্দোলনের সাথে যুক্ত। একে আপনার কাছে পাঠালাম। ধেড়ুয়া অঞ্চল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গ্রুপ ডি পদে যে লোক নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে যাহাতে একে নেওয়া যায়, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করছি। পরে আপনার সাথে সাক্ষাৎ করে নেব।’ নীচে প্রেরকের নামের জায়গায় লেখা জয়জীম আহাম্মদ।
সিপিএমের চিরকুট। তদন্ত হোক। pic.twitter.com/2d2NGcaf90
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) March 17, 2023
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কুণাল ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন, সিপিএম (CPIM) জমানায় এমন কোনও হোলটাইমার ছিলেন না, যাঁর বাড়িতে কেউ সরকারি চাকরি করতেন না। সেই বক্তব্যকে সমর্থন করে একদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বামেদের দুর্নীতির শ্বেতপত্র তৈরি করবেন বলে জানিয়েছেন। বাম আমলের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে পোস্টমর্টেম হবে। বলেছেন মমতাও। যদিও পাল্টা ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুড়েছে বামেরাও। করেছেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা কটাক্ষবাণ শানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলছি প্রকাশ করুন। পুরোটা প্রকাশ করুন। এই তালিকায় প্রকাশ এলে মানুষ বুঝতে পারবে বাম আমলে চাকরির নামে আসলে কতটা স্বচ্ছতা ছিল।” তোপ দেগেছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ীও। মমতার সরকারকে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, “১২ বছরে বামেদের দুর্নীতির ফাইল অনেক দেখিয়েছিন। ৪ ডজন কমিশন করেছেন। কোটি কোটি টাকা খরচ করলেন। কিছু কী বার করতে পেরেছেন? এখন গোটা শিক্ষা দফতরটাই জেলে। কেন শিক্ষা দফতর জেলে সেটার আগে জবাব দিন। তদন্ত করতে চাইলে তদন্ত করুন না। কে আটকেছে। আগেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে এই চিরকুট কতটা জাল। গোটা পার্টিটাই জাল পার্টি, নিয়োগপত্রও জাল করছে। এখন চিরকুটও জাল করছে। জাল পার্টির থেকে এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না।”