কলকাতা: গেস্ট হাউজ়ের একটা নির্দিষ্ট রুম থেকে মধ্যরাতে বিভৎস চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। বাকি অতিথিদের অসুবিধা হচ্ছিল। একাধিকবার গেস্ট হাউজের কর্মীরা বারণ করলেও শোনেননি তাঁরা। বাধ্য হয়েই ফোন যায় থানায়। পুলিশও আসে। পুলিশ গিয়ে যখন ওই রুমের বেল বাজায়, তখন বিবস্ত্র অবস্থায় বেরিয়ে আসেন এক যুবতী। দৃশ্য দেখে রীতিমতো হতভম্ভ হয়ে যান পুলিশকর্মীরা।
রুমের ভিতর আরও ভয়ানক দৃশ্য। ঘরের ভিতরেই পড়ে রয়েছে এক যুবকের দেহ। সল্টলেকের এই ঘটনা ঘিরে ঘনীভূত হয়েছে রহস্য।
গেস্ট হাউজ় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২মাস ধরে নাম ভাঁড়িয়ে একই গেস্ট হাউজ়ে লিভ ইন পার্টনার হিসাবে থাকছিলেন ওই যুগল। পুলিশ সূত্রে খবর, বিধাননগর দক্ষিণ থানা অন্তর্গত একটি গেস্ট হাউজ় থেকে পুলিশের কাছে বুধবার রাতে ফোন আসে যে তাদের একটি রুমের মধ্যে থেকে প্রচণ্ড চিৎকার হচ্ছে, যার জন্যে অন্য গেস্টদের সমস্যার সন্মুখীন হতে হচ্ছে।
অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। পুলিশ গিয়ে দরজায় ধাক্কা দিতেই ভিতর থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় দরজা খুলে দেন এক যুবতী। পুলিশ ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পায়, ওই যুবকের গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থা নিথর পড়ে রয়েছে। তড়িঘড়ি যুবককে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুই মাস আগে ওই গেস্ট হাউসে এই রুমটি বুক করা হয় নির্ঝর চৌধুরী নামে। সেই সময় থেকেই এই রুমে পুরুলিয়ার বাসিন্দা রনি দত্ত এবং তাঁর প্রেমিকা অনুশীলা চৌধুরী বসবাস করতেন। বুধবার এই যুগলের মধ্যে বচসা হয় এবং মারধরের ঘটনা ঘটে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। ওই যুবতীর দেহে এবং যুবকের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। যুবতীকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার যুবকের দেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। কী কারণে এই যুবকের মৃত্যু হল সেটা তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ।
তবে অন্যের নামে কীভাবে এই যুগল এই গেস্ট হাউজ় রুম বুক করল, চেক ইন করার সময়েও যুবকের সচিত্র পরিচয় পত্র কেন দেখা হল না, সেই বিষয় নিয়েই ফের প্রশ্নের সন্মুখীন গেস্ট হাউজ় কর্তৃপক্ষ।
এই বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নন। সমস্ত বিষয়ে তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। পাশাপাশি গেস্টহাউজ়ের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন নাকি তাঁকে খুন করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।