কলকাতা: সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারগুলিতে রাখা বইয়ের মান নিয়ে সম্প্রতি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly) যে প্রশ্ন উসকে দিয়েছেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে। এক গ্রন্থাগারের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বলেছেন, কিছু ‘অখাদ্য পুস্তক’ গ্রন্থাগারগুলিতে সরবরাহ করা হয়। নিজের বক্তব্যের সময় কোনও লেখকের নাম না করে একটি কবিতার একাংশ তুলে ধরে বলেন, ‘এপাং ওপাং ঝপাং আমরা সবাই ড্যাং ড্যাং। এই যদি কবিতার বই হয়, কেউ পড়বে?’ তারপর নিজেই বলেন, ‘আমার মনে হয় কেউ পড়বে না।’ বিচারপতি কারও নাম না করলেও, যে কবিতার অংশটির কথা তিনি বলেছেন, সেটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা। আর এই নিয়েই বেজায় বিরক্ত তৃণমূল শিবির।
মমতার ক্যাবিনেটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে বিচারপতির মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সুকুমার রায়ের কবিতার তুলনা টেনে আনেন। বললেন, ‘রাম গরুড়ের ছানা যদি কেউ পড়েন, তাহলে এটাও পড়বেন।’ তাঁর স্পষ্ট কথা, ছোটদের জন্য এই ধরনের কবিতা লেখা হয়। প্রত্যেক মানুষকে নিজস্ব ক্ষেত্রে বাকসংযম বজায় রাখা উচিত বলেও মনে করছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বললেন, কেউ কোনও পদ পেয়েছেন বলে যা খুশি তাই করবেন, এটি ঠিক নয়। কারও কোনও লেখা বা কোনও বক্তব্য যাতে অন্য কারও আত্মমর্যাদায় আঘাত না করে, সেই বিষয়টির উপরেও নজর রাখা উচিত বলে মত বর্ষীয়ান রাজনীতিকের।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশ কিছু কবিতার বই ইতিমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ছোটদের জন্য লেখা কবিতাও। সেই ধরনেরই একটি কবিতা হল এপাং-ওপাং-ঝপাং শীর্ষক কবিতাটি। কলকাতা বইমেলাতেও মুখ্যমন্ত্রীর একাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। সেই নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি অতীতে একাধিকবার খোঁচাও দিয়েছে। তবে এবার হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখেও শোনা গেল কবিতা নিয়ে মন্তব্য, যা নিয়ে ইতিমধ্য়েই বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে।