কলকাতা: সিসিটিভি নিয়ে শোরগোল চলছেই। এরইমধ্যে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তুলেছেন কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ। কাঠগড়ায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এক্স হ্যান্ডেলে একগুচ্ছ প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন শুভেন্দু। সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘সঙ্কটকালে কাটমানি খেতে তৃণমূল বরাবরই সিদ্ধহস্ত।’ সিসিটিভি বসানোর খরচের বহর নিয়েই মূল প্রশ্ন শুভেন্দুর। এ নিয়ে শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে স্বাস্থ্য মহলের অন্দরে। স্বাস্থ্য ভবনের দাবি, “সিসি ক্যামেরা বসানোর খরচ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। সরকারি দু’টি সংস্থা সিসি ক্যামেরা পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ তদারকি করেছে।” এমনকী কাজ কতদূর হয়েছে তাঁর খতিয়ানও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজ্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজে ৬১৭৮টি সিসি ক্যামেরার জন্য ৫৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য জানিয়েছিল, নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য পরিকাঠামো নির্মাণে ১২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সিসি ক্যামেরার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৫৯ কোটি টাকা।
কী বলছে স্বাস্থ্য ভবন?
স্বাস্থ্য ভবন জানাচ্ছে, ই-টেন্ডারের মাধ্যমে রাজ্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজে ৬১৭৮টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। খরচ যা দেখানো হয়েছে তা একটি ক্যামেরা কেনার খরচ শুধু নয়। এর মধ্যে কন্ট্রোল রুম তৈরি করে সিসি ক্যামেরাগুলি মনিটর করার জন্য যে পরিকাঠামো দরকার তারও খরচ ধরা রয়েছে। স্বাস্থ্য ভবন বলছে, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজের ক্যাম্পাসগুলি অনেক বড়। একটি বিল্ডিং থেকে আরেকটি বিল্ডিংয়ের দূরত্ব রয়েছে। তার জন্য পরিকাঠামো তৈরির খরচও ক্যামেরা পিছু ধরা রয়েছে। পাশাপাশি, সব জায়গায় এক ধরনের সিসি ক্যামেরা বসানো হয়নি। মূল প্রবেশ পথের সিসি ক্যামেরার তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল চত্বরের ক্যামেরার গুণমানের তফাৎ রয়েছে। কোথাও ১৮০ ডিগ্রি তো কোথাও ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ফলে খরচেরও তফাৎ হয়েছে। সোজা কথায়, স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের স্পষ্ট দাবি, স্বচ্ছতা বজায় রেখেই সব কাজ হয়েছে। কোন মেডিকেল কলেজে কত টাকায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে সেই খতিয়ানও সামনে এসে গিয়েছে বিতর্কের আবহে। যেমন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের তরফে চাওয়া হয়েছিল ২৯৬টি সিসি ক্যামেরা। দেওয়া হয়েছে ৩২০টি। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের তরফে চাওয়া হয়েছে ১১৫টি। সব ক’টি ক্যামেরাই দেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রেও ছবিটা এক। চাওয়া হয়েছিল ২৬৩ ক্যামেরা। বসেছেও তাই।