কলকাতা: বেসরকারি হাসপাতালে (Private Hospital) গিয়ে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা কতক্ষণ কাজ করছেন তা সবিস্তারে জানতে চাইল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর (Swasthya Bhawan)। চিকিৎসকের নাম, সরকারি হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট ওই চিকিৎসকের পদমর্যাদা ও বেসরকারি হাসপাতালে তিনি কতক্ষণ সময় দিচ্ছেন সেই তথ্যই বিস্তারিত ভাবে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এই নির্দেশে অমান্য হলে ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিকক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট ২০১৭ মেনে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে।
যদিও, স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশিকা মোটেই ভালভাবে মেনে নেয়নি চিকিৎসক সংগঠনগুলি। নির্দেশিকার সমালোচনায় সরব হয়েছে তারা। চিকিৎসক সংগঠনগুলির দাবি, এই নির্দেশিকা সরকারি চিকিৎসকদের উপরে নজরদারির সামিল। নির্দেশিকার বয়ান অপমানজনক। তাই কেন এমন নির্দেশিকা জারি করা হল সেই বিষয়ও স্পষ্ট করা জরুরি বলে মনে করছে চিকিৎসক সংগঠনগুলি।
অপরদিকে, এই বিষয়ে সরব হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলিও। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের একাংশের বক্তব্য, জেলায় সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাই বেসরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের মেরুদণ্ড। এ ভাবে নজরদারি চালালে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বেসরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিষেবা দেওয়ার প্রশ্নে পিছিয়ে যেতে পারেন। ধাক্কা খেতে পারে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পও। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও কেন গ্রাম বাংলায় বেসরকারি হাসপাতালে রোগীরা আসেন সেটাও স্বাস্থ্য ভবনের একবার খতিয়ে দেখা উচিত।
আচমকা এই নির্দেশিকা কেন জারি করা হয়েছে তার কারণও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন। তাদের বক্তব্য, সরকারি হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো আগের থেকে ভাল হয়েছে। কিন্তু সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার না করে রোগীদের নার্সিংহোমগুলিতে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করছেন।
তবে চিকিৎসক সংগঠনগুলি বিষয়টি সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দিয়েছে। তাদের দাবি, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকায় এখন গ্রাম বাংলার মানুষ পরিচ্ছন্ন পরিষেবা পাওয়ার জন্য নার্সিংহোমগুলিতে যাচ্ছেন। তার জন্য সরকারকে বিপুল অঙ্কের টাকা বিল বাবদ মেটাতে হচ্ছে। তাই ঘুরপথে সরকারি চিকিৎসকদের উপরে নির্দেশিকার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ জারি করে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে খরচের বহর কমাতে চাইছে রাজ্য। এমনটাই অভিযোগ চিকিৎসক সংগঠনগুলির।