WB Fever: দশ রকমের জ্বর কাঁপুনি ধরাচ্ছে বাংলায়, কী লক্ষণ, কী করবেন জেনে নিন
Child Fever in WB: কলকাতা ও তার সংলগ্ন জেলাগুলিতে জ্বরের কারণ খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেছে প্রায় ১০ রকমের জ্বর। তারমধ্যে কোথাও করোনা, কোথাও সোয়াইন ফ্লু, দু'একটি ক্ষেত্রে স্ক্রাব টাইফাস, ইনফ্লুয়ে়ঞ্জা -এ, ইনফ্লুয়েঞ্জা -বি, আরএসভি ধরা পড়েছে।
রাজ্য: করোনা সংকট এখনও কাটেনি। তারই মধ্যে উত্তরবঙ্গে হু হু করে ছড়াচ্ছে অজানা জ্বর। আজও জলপাইগুড়িতে মৃত্যু হয়ছে ১ শিশুর। আলিপুরদুয়ার,শিলিগুড়ি,জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, রায়গঞ্জ, মুর্শিদাবাদ প্রতিটি জেলার ছবি প্রায় এক। শুধু উত্তরবঙ্গই নয় জ্বর ছড়িয়েছে দক্ষিণবঙ্গেও। তবে উত্তরবঙ্গের মতো অতটাও খারাপ পরিস্থিতি নয় দক্ষিণবঙ্গে। সূত্রের খবর, কলকাতা ও তার সংলগ্ন জেলাগুলিতে জ্বরের কারণ খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেছে প্রায় ১০ রকমের জ্বর। তারমধ্যে কোথাও করোনা, কোথাও সোয়াইন ফ্লু, দু’একটি ক্ষেত্রে স্ক্রাব টাইফাস, ইনফ্লুয়ে়ঞ্জা -এ, ইনফ্লুয়েঞ্জা -বি, আরএসভি ধরা পড়েছে। কিন্তু উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে পরীক্ষার পরিমাণ অত বেশি ছিল না। যেই কারণে জ্বরের কারণ অ-জানাই থেকে যাচ্ছিল। হাহাকার দেখা দিয়েছে বেড নিয়ে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে সরকারি হাসপাতালের একএকটি বেডে এক দু’জন করে শিশুর ঠাঁই মিলছে।
কেন হচ্ছে সংক্রমণ? প্রথমদিকে সংক্রমণের কারণ খুঁজতে গিয়ে রীতিমত বেগ পেতে হয়েছিল পরীক্ষকদের। বোঝাই যাচ্ছিল না ঠিক কী কারণে এত দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে শিশুদের মধ্যে। এরপর কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সেখানেও জ্বরের কারণ ধরা না পড়ায় নমুনা পাঠানো হয় পুণের ভাইরোলজিক্যাল ল্যাবে। নমুনা পরীক্ষা করার অবশেষে মিলল কারণ। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে পরীক্ষার রিপোর্টে মিলেছে ডেঙ্গি, স্ক্রাব টাইফাস ও করোনার। ইতিমধ্যে ৬ জনের শরীরে ধরা পড়েছে স্ক্রাব টাইফাস, ডেঙ্গি আক্রান্ত ৫ শিশু, করোনা আক্রান্ত ১।
ডেঙ্গির লক্ষণ কী? এই রোগে তিন থেকে চার দিন থাকছে জ্বর। জ্বর কমলেই গায়ে হাতে অসহ্য যন্ত্রণা। পাশাপাশি জন্ডিস, গায়ে র্যাশও বের হওয়ার সম্ভবনা থাকে। শিলিগুড়িতে যে জ্বর দেখা দিয়েছে তার লক্ষণ তিন থেকে চারদিন থাকছে জ্বর। তারপর শুর হচ্ছে কাশি। কখনও বা শ্বাসকষ্ট। কোনও কোনও সময় আবার নাক মুখ থেকে রক্তপাতও ঘটার সম্ভবনা থাকছে।
করোনার লক্ষণ জ্বর, গা হাতে ব্যথা,বমি, ডায়ারিয়া,শ্বাসকষ্ট, মাথায় যন্ত্রণা, আচ্ছন্নতা থাকবে। স্ক্রাব টাইফাসের লক্ষণ প্রচন্ড জ্বর থাকবে। শরীরে র্যাশ বেরতে পারে। গ্ল্যান্ড ফুলে ওঠে। ৪-৫ দিনের জ্বরেই শরীর কাহিল পড়ে ছোটোদের। পাশাপাশি লিভার,প্লীহা বড় হয়ে যেতে পারে।
জাপানি এনসেফ্যালাইটিস এটি একটি মশাবাহিত রোগ। জ্বর হবে সঙ্গে থাকবে ঝিমুনিভাব। শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে তীব্র ব্যাথা। কখনও কখনও খিঁচুনি হয়। যার প্রভাব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর পড়ে।
কোন জেলায় আক্রান্ত কতজন? জলপাইগুড়িতে জেলা হাসপাতালে ভর্তি ৮৮ জন। অন্যদিকে,রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে ১৭ জন। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ৮০ জন শিশু ভর্তি। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে রয়েছে ১৫২ জন। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ৮০। তমলুক মহকুমা হাসপাতালে ৩০ জন ও আসানসোল জেলা হাসপাতালে ১৪৮ জন ভর্তি রয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে শিশুর সুরক্ষার জন্য কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন? এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ( আলিপুরদুয়ার) ডঃ সুবর্ণ গোস্বামী জানিয়েছেন, অ-জানা জ্বর বলে কিছুই হয় না। যেহেতু এখনও বোঝা যাচ্ছে না ঠিক কী কারণে এই রোগ ছড়াচ্ছে সেই জন্য সুরক্ষার বিষয়টিও সঠিক ভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে ১) মশার থেকে দূরে থাকা ২) রাতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো ৩) শুয়োর থেকে দূরে থাকা। ৪) অবশ্যই চিকিৎকের পরামর্শ নেওয়া
একই কথা বলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ প্রিয়ঙ্কর পাল। তিনিও বারবার বলেছেন, যে মুহুর্তে জ্বর হবে ঘরোয়া পদ্ধতি ছেড়ে সেই মুহুর্তে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। প্রয়োজনে শিশুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে হবে।