কলকাতা: ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (National Medical College Hospital) প্রসূতির রহস্যমৃত্যুতে তৈরি হয়েছে পাঁচ সদস্যর তদন্ত কমিটি। স্বাস্থ্য ভবনেও জানানো হয়েছে বিস্তারিত। হাসপাতালের তরফে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করার পাশাপাশি পুলিশের তরফেও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তভার নিয়েছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নিহত আচিয়া বিবির ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি হবে। পরিবারের তরফে এদিনই একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে খবর।
গত বুধবার কন্যাসন্তানের জন্ম দেন আচিয়া বিবি। রবিবার দুপুর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। সোমবার সকালে স্ত্রী রোগ বিভাগের পিছন থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ওয়ার্ডেই খুন করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, পিছমোড়া করে আচিয়ার হাত বাঁধা ছিল। পরিবারের অভিযোগ, আচিয়ার কান, হাতের একাধিক জায়গায় মাংস খুবলে নেওয়ার চিহ্ন রয়েছে।
পাঁচ সদস্যর তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। ওয়ার্ড থেকে কীভাবে রোগী উধাও হয়ে গেলেন তা নিয়ে তদন্ত চলছে। এদিন দুপুরেই আসেন ফরেন্সিক বিভাগের আধিকারিকরা। অকুস্থল ঘুরে দেখেন তাঁরা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এই ঘটনা খুন নাকি আত্মহত্যা। জানা গিয়েছে, আচিয়া বিবির প্রথমে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এরপর পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। তৃতীয় সন্তান মেয়ে।
এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠছে। এক, রবিবার দুপুর ১টায় নিখোঁজ হন আচিয়া। অন্তত হাসপাতাল সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় স্ত্রীরোগ বিভাগের পিছনে উদ্ধার হয় ৩২ বছর বয়সী আচিয়ার দেহ। প্রশ্ন, ২১ ঘণ্টা ধরে কোথায় ছিলেন তিন সন্তানের মা? নিখোঁজের কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, পুলিশকে জানানো হয়েছিল? আচিয়ার সন্ধান পেতে পুলিশের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছিল? হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ কি খতিয়ে দেখা হয়েছিল? রোগীর পরিজনেরা এ নিয়ে ইতিমধ্যে দাবি করেছেন, সে সব কিছুই হয়নি।
প্রশ্ন উঠছে, হাসপাতালের রক্ষীদের চোখে ফাঁকি দিয়ে প্রসূতি মা উধাও হলেন কীভাবে? শৌচাগারে কী খোঁজ করা হয়েছিল? স্ত্রীরোগ বিভাগের পিছনে দেহ এল কীভাবে? স্ত্রীরোগ বিভাগের যে বিল্ডিংয়ের নীচে দেহ পড়েছিল তার সবকটি জানলায় গ্রিল দেওয়া। তাহলে দেহ নীচে পড়ল কী ভাবে? পরিজনদের দাবি, দেহে মাংস খুবলে নেওয়ার চিহ্ন রয়েছে। কী ভাবে এল এই আঘাত? কুকুর-বিড়াল খুবলে খেয়েছে দেহ?