কলকাতা: নিয়োগের দাবিতে চাকরি প্রার্থীরা রাস্তায় বসে রয়েছেন ৬০০ দিন ধরে। অথচ এ রাজ্যের এক স্কুলে পাকা চাকরি সত্ত্বেও শিক্ষকরা ক্লাসে যাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে স্কুলের সামনে বিক্ষোভও দেখায় পড়ুয়ারা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) বিষ্ণুপুর (Bishnupur) থানার বিজয় রামপুর প্যারিচাঁদ হাইস্কুল। সেখানেই সোমবার বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্কুলের পড়ুয়া ও অভিভাবকরা।
অভিযোগ, শ্যামল মণ্ডল নামে এই স্কুলের এক শিক্ষক প্রায় ৬ মাস হতে চলল স্কুলে যান না। স্কুলে ৪৫০ জন পড়ুয়া। অথচ ৮ জন শিক্ষক। নেই প্রধান শিক্ষক বলেও অভিযোগ। অভিযোগ আরও আছে, ক্লাস নিয়মিত নেওয়া হয় না, রোল কলও হয় না রোজ। স্লিপে ছেলে মেয়েরা উপস্থিতি লিখে দিয়ে আসে বলে দাবি অভিভাবকদের। চরম অরাজকতা চলছে বলে অভিযোগ তুলে স্কুল ক্যাম্পাসেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা।
এমনও অভিযোগ, টিচার ইনচার্জ (TIC) গুরুদাস মণ্ডলকে বিষয়টি জানিয়েও সুরাহা হয়নি। যদিও গুরুদাসবাবু এ নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি সংবাদমাধ্যমের সামনে। তবে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বাবলু মণ্ডল অভিযোগ তোলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের বলেও হচ্ছে না। তাই ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস বন্ধ করে এই বিক্ষোভ দেখাচ্ছে।
বাবলু মণ্ডল বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ক্লাস নেন না স্যররা। সাতটা করে পিরিয়ড আছে। তিনটে কোনওদিন হয়। রোল কলও হয় না। অথচ এটা একটা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়। দায়িত্বে আছেন টিআইসি গুরুদাসবাবু। প্রধান শিক্ষক নেই অনেকদিন। বিভিন্ন সময় শিক্ষকরা আসেন না। স্কুলে না এসেই খাতায় উপস্থিত হয়ে যান। এইভাবে চলছে। কিন্তু বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষকরা যদি এভাবে স্কুলে না আসেন, ক্লাস না নেন, এভাবে উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে তিনটে করে ক্লাস ভাবা যায়? আমিও তো স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির লোক। আমি ৬ বছর ধরে আছি এই স্কুলের সঙ্গে। আমরা তো স্যরদের খারাপ কথা বলতে পারি না। কিন্তু বারবার আমরা সতর্ক করেছি। তাতেও কাজ হয়নি।”
অন্যদিকে স্কুলের প্রাক্তন কমিটির সেক্রেটারি গোষ্ঠবিহারী মণ্ডল বলেন, “পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল। ৮ জনের মতো শিক্ষক আছেন। হেড মাস্টারমশাইও নেই। পড়াশোনার মান খুবই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সরকার শিক্ষক বাড়াক এই স্কুলে। এভাবে তো চলতে পারে না। একজন স্যর তো ৬ মাস হয়ে গেল স্কুলেই আসেন না। তাই আন্দোলন হচ্ছে।”
স্কুলের ছাত্র মিনহাজউদ্দিন মোল্লার কথায়, “খুব জোর একটা ক্লাস হয়। রোল কলও রোজ হয় না। আমরা নাম লিখে দিয়ে এলাম, তারপর প্রেজেন্ট হল। আমি মাধ্যমিক পরীক্ষা দেব। ক’দিন পর পরীক্ষা। এখনও সিলেবাস অর্ধেকও পড়ানো হয়নি। কী করব আমরা?”