কলকাতা : প্রত্যেক মানুষের চোখের মণি আলাদা। প্রত্যেকের হাতের ছাপ আলাদা। তেমনই প্রত্যেক মানুষের হাঁটার ধরনও আলাদা। এমনই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই কোনও ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ থাকলে, ওই ঘটনায় ধৃত ব্যক্তিই অপরাধ ঘটিয়েছেন কি না, তা বলা যাবে হাঁটার ধরন মিলিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির চত্বরে ঢুকে পড়া ব্যক্তি আর ওই ঘটনায় ধৃত হাফিজুল মোল্লা একই ব্যক্তি কি না, তা জানতে এবার হাঁটার ধরন মিলিয়ে দেখবে পুলিশ। যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে, তাকে বলা হয় GAIT প্রযুক্তি।
এর আগে কলকাতায় দুটি ঘটনায় এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। কাঁকুলিয়া রোডে ব্যবসায়ী সুবীর চাকী খুনের মামলায় এই পদ্ধতির ব্যবহার করা হয়েছিল। আর বিজেপি নেতা রাকেশ সিংকে মাদক মামলায় গ্রেফতারের ঘটনায়ও এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। ফলে কলকাতা পুলিশের কাছে এই প্রযুক্তির ব্যবহার একদম নতুন নয়। পুলিশের বক্তব্য, শুধু তদন্তের ক্ষেত্রে নয়, বিচারের সময় এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হয়ে ওঠে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁটার সময় একজন মানুষ পায়ের পাতার উপর কতটা জোর দেন, কতটা ঝুঁকেন, কতটা দূরত্বে পা ফেলেন, তা সবার ক্ষেত্রে আলাদা। GAIT প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধৃত ব্যক্তির হাঁটাচলা দেখে বোঝা যাবে তিনি কতটা দূরে পা ফেলছেন। পায়ের পাতার উপর কতটা জোর দিচ্ছেন। এরপর সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া ছবি মিলিয়ে দেখা হবে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যায় বলে পুলিশের বক্তব্য।
গত ৩ জুলাই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির চত্বর থেকে এক যুবককে ধরে কালীঘাট থানার হাতে তুলে দেয় পুলিশ। ধৃত ওই যুবকই হাফিজুল মোল্লা। নিরাপত্তার বেষ্টনী এড়িয়ে হাফিজুল মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে ঢুকে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় একটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া ব্যক্তি আর হাফিজুল একই ব্যক্তি কি না, তা নিশ্চিত হতে আজ আদালতে GAIT প্রযুক্তি ব্যবহারের আবেদন করেন সরকারি আইনজীবী। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। ফলে কলকাতায় তৃতীয় কোনও ঘটনায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার হতে চলেছে।