Sovan Chatterjee: মমতার কানন কেন তৃণমূলে কোণঠাসা হয়েছিলেন?
Sovan Chatterjee: ২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় দখল করল। ওই বছর বেহালা পূর্ব থেকে জেতেন শোভন। মন্ত্রীও হন। তৃণমূলে প্রথম সারির নেতার তালিকায় উঠে আসেন তিনি। ২০১৫ সালেও কলকাতা পৌরনিগমে জয়ের পর তাঁকেই মেয়র করেন মমতা। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে জেড প্লাস ক্যাটেগরির সিকিউরিটিও দেওয়া হয় শোভনকে।

কলকাতা: একসময় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয়পাত্র ছিলেন তিনি। তাঁকে কানন বলে ডাকতেন মমতা। কলকাতা পৌরনিগমের দায়িত্ব তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। রাজ্য সরকারেরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু, বছর আটেক আগে তাঁর পারিবারিক দ্বন্দ্ব সামনে আসে। একসময় তৃণমূলের সঙ্গেও দূরত্ব বাড়ে। সেই দূরত্ব ঘুচে এতদিন পর ফের সরকারের একটি দায়িত্ব পেয়েছেন ‘কানন’ শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (NKDA)-র চেয়ারম্যান করা হয়েছে তাঁকে। রাজনৈতিক পরিসরে তাঁকে নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। এই আবহে দেখে নেওয়া যাক, কেন তৃণমূল ছেড়েছিলেন শোভন?
শোভনের জন্ম ১৯৬৪ সালে। ছাত্র রাজনীতিতে কংগ্রেসে হাতেখড়ি। মমতার ছত্রছায়াতেই কার্যত তাঁর রাজনৈতিক উত্থান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করার পর কংগ্রেস ছেড়ে তাঁর দলে যোগ দেন শোভন। ২০১০ সালে তৃণমূল কংগ্রেস কলকাতা পৌরনিগমে জয়লাভের পর শোভনকে মেয়র করেন মমতা। যে পদে ২০১৮ সালের ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ছিলেন তিনি।
২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় দখল করল। ওই বছর বেহালা পূর্ব থেকে জেতেন শোভন। মন্ত্রীও হন। তৃণমূলে প্রথম সারির নেতার তালিকায় উঠে আসেন তিনি। ২০১৫ সালেও কলকাতা পৌরনিগমে জয়ের পর তাঁকেই মেয়র করেন মমতা। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে জেড প্লাস ক্যাটেগরির সিকিউরিটিও দেওয়া হয় শোভনকে। ভারতের প্রথম কোনও শহরের মেয়র হিসেবে তিনি জেড প্লাস সিকিউরিটি পান।
সেই শোভনের সঙ্গেই একসময় দূরত্ব বাড়ে তৃণমূলের। ২০১৭ সালে স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে মামলা করেন শোভন। সেইসময় বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভনের সম্পর্ক নিয়েও জল্পনা বাড়তে থাকে। রত্নার বাবা দুলালচন্দ্র দাসও তৃণমূলের নেতা। সেইসময় অনেক তৃণমূল নেতা বলতে থাকেন, বৈশাখীর সঙ্গে সম্পর্কের জেরে দলের বিভিন্ন কাজে মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে শোভনের। ধীরে ধীরে দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রীর কানন। তারপরই কলকাতা মেয়রের পদ ছাড়েন।
২০১৯ সালের অগস্টে বৈশাখীকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। তবে বছর দুয়েক কাটার আগেই বিজেপি ছাড়েন। তারপর থেকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরেই থেকেছেন শোভন। তবে এই কয়েক বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ভাইফোঁটার দিন একাধিকবার দেখা গিয়েছে তাঁকে। অবশেষে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতার সঙ্গে বৈঠকের পর তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব ঘুচল। ফের কি তৃণমূলে আগের মতো সক্রিয় হতে দেখা যাবে তাঁকে? উত্তর দেবে ভবিষ্যৎ।
