Dhotrey: সিঙ্গলিলার কোলে পক্ষীপ্রেমীদের স্বর্গোদ্যান ধোত্রে, কীভাবে যাবেন?
Darjeeling: মানেভঞ্জন থেকে মাত্র ৪৫ মিনিটের রাস্তা এই পাহাড়ি গ্রাম। সান্দাকফু-ফালুট ট্রেকের গেটওয়ে হল ধোত্রে। ধোত্রের পাইনে ঘেরা জঙ্গলের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ট্রেকিং। সান্দাকফু না গেলেও ধোত্রে থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাওয়া যায় টংলু। ২ ঘণ্টার হাঁটা পথ টংলু।

ডক্টর মধুসূদন সাহা, পর্যটক
সান্দাকফু—অনেক ভ্রমণপ্রেমীরই প্রথম ট্রেক। আর এই সান্দাকফু ট্রেকিং শুরুই হয় ধোত্রে থেকে। ধোত্রের নাম খুব একটা অচেনা নয় ভ্রমণপিপাসুদের কাছে। সান্দাকফু ট্রেক ছাড়াও অনেকেই ছুটিতে কাটাতে চান ধোত্রেতে। সিঙ্গলিলা জাতীয় উদ্যানের মধ্যে পাইনে ঘেরা ছোট্ট গ্রাম ধোত্রে। প্রায় ৮,৫০০ ফুট উচ্চতায় দার্জিলিং জেলায় অবস্থিত এই পাহাড়ি গ্রাম ছবির মতো সুন্দর। যত দিন যাচ্ছে, ধোত্রেতে বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা।
মানেভঞ্জন থেকে মাত্র ৪৫ মিনিটের রাস্তা এই পাহাড়ি গ্রাম। সান্দাকফু-ফালুট ট্রেকের গেটওয়ে হল ধোত্রে। ধোত্রের পাইনে ঘেরা জঙ্গলের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ট্রেকিং। সান্দাকফু না গেলেও ধোত্রে থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাওয়া যায় টংলু। ২ ঘণ্টার হাঁটা পথ টংলু। সেখান থেকে যাওয়া টুমলিং। এই টুমলিং কিন্তু নেপালে অবস্থিত। তবে, মানেভঞ্জন থেকে ধোত্রের ১৮ কিলোমিটারের রাস্তা গাড়ি করেই যাওয়া যায়। যদি ট্রেকিংয়ের ইচ্ছে হয় ধোত্রের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে টংলু যেতে পারেন।
ধোত্রেতে খুব বেশি হলে ৫০টি বাড়ি রয়েছে। তাও সেগুলো ১০০ মিটারের মধ্যে ছড়িয়ে। তার মধ্যে রয়েছে হোম-স্টেও। আর এই হোম-স্টেগুলো এমনভাবেই তৈরি যে, ঘরে বসেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাবে। আমরা ছিলাম পাদমা হোম-স্টেতে। আর ধোত্রে গেলে ভুলেও মিস করবেন না মোমো।
কাঞ্চনজঙ্ঘার পাশাপাশি ধোত্রের ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখা যায় কুম্ভকর্ণ, পানদিমের মতো তুষারাবৃত পর্বতের চূড়া। এছাড়া ধোত্রেতে ঘুরে দেখতে পারেন শিব মন্দির, মনাস্ট্রি ও বায়োডায়ভার্সিটি হেরিটেজ সাইট। তবে, এই ধোত্রের আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে রয়েছে এখানকার উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের মধ্যে। ধোত্রের জঙ্গলে বিভিন্ন ধরনের হিমালয়ান পাখি দেখা যায়। মানেভঞ্জনের পর গুরদুম পার করার পরই পুরো ল্যান্ডস্কেপ পরিবর্তন হয়ে যায়। তখন শুধুই নির্জনতা আর পাখিদের ডাক। আর ধোত্রে পৌঁছেই আপনি কম করে ৬-৮ প্রজাতির পাখি দেখতে পাবেন।
শীতকালে ধোত্রের তাপমাত্রা কখনও কখনও শূন্যের নীচেও নেমে যায়। সেই সময় গোল্ড ক্রেস্ট, হিমালয়ান ব্লু টেইল, বিভিন্ন টিটস অ্যান্ড ফিঞ্চস, মেরুন ব্যাকড অ্যাকসেন্টর, রেড ভেন্টেড ইউহিনার মতো পাখি দেখা যায়। আবার বসন্তের সময় ধোত্রের জঙ্গল সেজে ওঠে লাল, গোলাপি রডোডেনড্রনে। তখন ফায়ার টেইলড সানবার্ড, লিটল বান্টিং, গ্রিন টেইলড সানবার্ড, চেস্টনাট টেইলড মিনলা, হুইসলার ওয়ারব্লার, ব্যারেড ওয়ারব্লার, রুফাস সিবিয়ার মতো পাখিদের দেখা পাওয়া যায় এখানে। এছাড়া সারাবছরই ফুলভেটাস, সানবার্ড, ওয়ারব্লার, ক্রসবিল, ম্যাগপাই, মিনলাস, থ্রাশস, ফ্লাইক্যাচারের মতো পাখিদের আনাগোনা লেগে থাকে ধোত্রের জঙ্গলে।

শিলিগুড়ি থেকে ধোত্রে যাওয়ার শেয়ার গাড়ি পাওয়া যায়। খরচ পড়ে মাথাপিছু ৬০০ টাকা। এছাড়া মানেভঞ্জন, সুখিয়াপোখরি, রিমবিক, ঘুম থেকেও ধোত্রে যাওয়ার শেয়ার গাড়ি পাবেন। ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো ভাড়া।
