AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

জামাইষষ্ঠীর শুরু হয়েছিল কীভাবে? নেপথ্যে রয়েছে সামাজিক রীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গল্প

জামাইষষ্ঠী প্রথার সূচনা নিয়ে নানা কাহিনীর প্রচলন রয়েছে। এখানে বলে রাখা ভাল, এটি কিন্তু মূলত একটি বাঙালি আচার। অবাঙালিদের মধ্যে এই প্রথা খুব একটা দেখা যায় না। কেউ কেউ বলেন এই প্রথার শুরু হয়েছিল বৈদিক যুগেই। কেউ কেউ আবার বলেন এই প্রথা অতটাও পুরনো নয়। তবে সে তর্ক সাপেক্ষ। সেই বিতর্কে না যাওয়াই ভাল। কী ভাবে শুরু হল এই প্রথা?

জামাইষষ্ঠীর শুরু হয়েছিল কীভাবে? নেপথ্যে রয়েছে সামাজিক রীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গল্প
| Updated on: Jun 01, 2025 | 2:00 PM
Share

জামাইষষ্ঠী পালনের ঘনঘআ চারিদিকে। বিশেষ করে যাঁদের নতুন বিয়ে হয়েছে তাঁদের উন্মাদনা আরও বেশি। জামাইয়ের জন্য মাছ-মাংস-ডিম, মিষ্টি, ফল কত রকমের এলাহী আয়োজন। কিন্তু কী ভাবে শুরু হল জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথি পালনের এই প্রথা? নেপথ্যের কারণগুলো জানা আছে?

জামাইষষ্ঠী প্রথার সূচনা নিয়ে নানা কাহিনীর প্রচলন রয়েছে। এখানে বলে রাখা ভাল, এটি কিন্তু মূলত একটি বাঙালি আচার। অবাঙালিদের মধ্যে এই প্রথা খুব একটা দেখা যায় না। কেউ কেউ বলেন এই প্রথার শুরু হয়েছিল বৈদিক যুগেই। কেউ কেউ আবার বলেন এই প্রথা অতটাও পুরনো নয়। তবে সে তর্ক সাপেক্ষ। সেই বিতর্কে না যাওয়াই ভাল। কী ভাবে শুরু হল এই প্রথা? তার পিছনে প্রচলিত রয়েছে মেয়ের প্রতি বাবা-মায়ের ভালবাসা এবং সামাজিক রীতিকে মাত করার এক মজার কাহিনি।

শোনা যায় এক সময় ভারত তথা গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় একবার মেয়ের বিয়ে হয়ে শ্বশুর বাড়ি চলে গেলে ততদিন তাঁর বাবা-মা মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে যেতে পারত না, যতদিন না কন্যা অন্তঃসত্ত্বা হচ্ছেন। তাই মেয়ের সঙ্গে দেখাও হত না বাবা-মায়ের।

এদিকে মেয়ে দেখতে না পেয়ে আকুল হত বাবা-মায়ের প্রাণ। শাস্ত্র মতে সন্তান এবং পরিবারের মঙ্গল কামনায় ষষ্ঠীদেবী আরাধনা করার চল রয়েছে। তাই জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে মেয়ে-জামাইয়ের সন্তান কামনা করে এবং তাঁদের মঙ্গল কামনা করে ষষ্ঠী পুজোর আয়োজন করা হয়। মেয়েদের বাবা গিয়ে পুজোর নিমন্ত্রণ করে আসেন জামাইকে। এই ভাবেই মেয়ে পুজো অছিলায় বাপের বাড়িতে আসলে তাঁর সঙ্গে দেখাও হয়ে যেত। সেই থেকেই জামাইষষ্ঠী পালনের প্রথা শুরু বলে মনে করা হয়।

ষষ্ঠী দেবীর ব্রতকথায় উল্লেখ আছে আরেক কাহিনি। শোনা যায় এক লোভী পুত্রবধু, রোজই রান্নাঘর থেকে মাছ চুরি করে খেত। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলেই দোষ দিত অবলা বিড়ালের উপর। কিছু না করেও দোষের ভাগীদার হওয়ায় মনে দুঃখ নিয়ে সেই কথা বলল মা ষষ্ঠীকে। নিজের বাহনের অপমানে রুষ্ট হলেন মা ষষ্ঠী। আর তাতেই বাঁধল গোল। একের পর এক সন্তানকে হারালেন লোভী বউমা। হারানো সন্তানদের ফিরে পেতে গভীর জঙ্গলে গিয়ে ষষ্ঠীদেবীর আরাধনা করেন। দেবীর কৃপায় নিজের সন্তানদের ফিরে পান। তবে চুরির অপরাধে ভদ্রমহিলার শ্বশুরবাড়ির লোকজন শাস্তি হিসেবে পিতৃগৃহে যাওয়ার অনুমতি চিরকালের জন্য বন্ধ করে দেন।

অন্যদিকে ভদ্রমহিলার পিতৃগৃহের পরিজন তাদের মেয়েকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন । তাই ষষ্ঠী পুজোর দিন মেয়েকে দেখার জন্য জামাইকে আমন্ত্রণ করেন । আর এই ঘটনা থেকেই জামাইষষ্ঠী প্রথার উদ্ভব হয়।