Amarnath Yatra 2023: অক্সিজেনের ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও অমরনাথ গুহায় আজও উড়ে বসে দুধসাদা জোড়া পায়রা! রয়েছে আরও রহস্য
Mythology: মনে করা হয়, অমরনাথের শিবলিঙ্গ দর্শন করলে সব পাপ ধুয়ে যায়। এক দর্শনেই মোক্ষলাভের আশায় ঘোড়ায় চেপে, পায়ে হেঁটে সেই যাত্রায় সামিল হন। প্রতি বছর অমরনাথ গুহায় বরফ চুঁইয়ে সুন্দর ও অনন্য শিবলিঙ্গ তৈরি হয়, একে স্বয়ম্ভুও বলা হয়।
শুরু হয়েছে হিন্দু পবিত্র ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অমরনাথ যাত্রা। বলা চলে, অমরনাথ হিন্দুদের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান। প্রতি বছর প্রায় লক্ষাধিক ভক্ত অমরনাথ গুহার বরফের শিবলিঙ্গ দর্শনের জন্য ছুটে যান। দুর্গম ও কঠিন পথ হিসেবে সুপরিচিত এই অমরনাথ যাত্রা। তবুও সব প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে অমরনাথ যাত্রায় সামিল হন বাচ্চা থেকে বুড়ো, সকলেই। মনে করা হয়, অমরনাথের শিবলিঙ্গ দর্শন করলে সব পাপ ধুয়ে যায়। এক দর্শনেই মোক্ষলাভের আশায় ঘোড়ায় চেপে, পায়ে হেঁটে সেই যাত্রায় সামিল হন। প্রতি বছর অমরনাথ গুহায় বরফ চুঁইয়ে সুন্দর ও অনন্য শিবলিঙ্গ তৈরি হয়, একে স্বয়ম্ভুও বলা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই গুহায় ভগবান শিব দেবী পার্বতীকে অমরত্বের কাহিনি বর্ণনা করেছিলেন। তাই একে অমর্ত্য নামেও পরিচিত। অনেকেই জানেন না, অমরনাথ যাত্রার সময় পবিত্র গুহায় একজোড়া পায়রা উড়ে এসে বসে। গুহায় শিবলিঙ্গের পাশাপাশি ওই জোড়া পায়রা দর্শন করাও অত্যন্ত শুভ।
অমরনাথ গুহার রহস্য
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, অমরনাথের এই পবিত্র গুহায় দেবী পার্বতীকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন দেবাদিদেব। এ সময় ভোলেনাথ ও দেবী পার্বতীর মধ্যে কথোপকথন চলে। কিংবদন্তি অনুসারে, একবার পার্বতী ভগবান শিবের কাছ থেকে মুক্তির পথ জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। সেই সময় ভোলেনাথ এক নির্জন স্থানে দেবীকে নিয়ে যান। আর সেই জায়গা এমন একটা, যেখানে আর কেউ উপস্থিত নেই। ভোলেবাবা ও পার্বতীর মধ্যে যে সংলাপ চলবে, তা তৃতীয় কেউ শুনতে পাবে না। ভগবান শিব যখন পার্বতীকে এই অমৃত বাণী বা সংলাপ বর্ণনা করছিলেন, সেই সময় একই গুহায় একজোড়া পায়রা উপস্থিত ছিল। সেই দম্পতিও শুনলেন মুক্তির পথ সম্পর্কিত নানা কাহিনি। কথিত আছে, এই কাহিনি শোনার পর জোড়া পায়রা অমরত্ব লাভ করেছিলেন। সেই দিনের পর থেকে এখনও অবধি পবিত্র গুহায় তাদের দেখা যায়।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল অমরনাথ গুহা বা তার আশেপাশে অক্সিজেনের বড্ড বেশি ঘাটতি। খাওয়া-দাওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। অমরনাথ যাওয়ার আগে ভক্তদের বয়স ও শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। কঠিন পথ ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে মাঝেমধ্যেই অমরনাথের পথ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে অমরনাথ গুহায় স্বাভাবিক ভাবে উপস্থিত থাকে পায়রা দুটি। হিন্দুদের বিশ্বাস, বরফের শিবলিঙ্গ দেখার পাশাপাশি ওই জোড়া পায়রা দর্শন করা অত্যন্ত শুভ।
অন্য কাহিনি
অন্য আরেকটি কিংবদন্তি অনুসারে, মহাদেব যখন দেবী পার্বতীকে অমৃত জ্ঞানের বর্ণনা করছিলেন, ঠিক সেইসময় গুহায় একটি শুক অর্থাৎ সবুজ গলার তোতাও উপস্থিত ছিল। সেও সেই বাণী বা সংলাপ শুনেছিল। কাহিনি শুনতে শুনতে একটা সময় ঘুমিয়ে পড়েন। এই অবস্থায় মহাদেব পার্বতীর পরিবর্তে ওই তোতা গুনগুন করতে থাকে। ভগবান শিব এ কথা জানার পর শুককে হত্যা করার জন্য দৌড়ে যান। কিন্তু দৌড়াবার সময় শিব তাঁর ত্রিশূলটি ভুলে ফেলে চলে যান।
মহাদেবের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে তিন জগতে ছুটে বেড়ায় শুক। শেষমেষ বেদব্যাসের আশ্রমে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখানে একেবারে ছোট্ট রূপ ধারণ করে ব্যাসের স্ত্রীর মুখে প্রবেশ করে। মুখের ভিতরে প্রবেশ করার পর ব্যাসের স্ত্রীর গর্ভে চলে যায় ওই ছোট্ট শুক। কিংবদন্তি অনুসারে, টানা ১২ বছর ধরে একই গর্ভে লুকিয়ে ছিল শুকপাখি। সেই সময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং এসে শুককে আশ্বস্ত করে বলেন যে, ‘তুমি বাইরে এলে তোমার ওপর মায়ার কোনও প্রভাব পড়বে না।’ এরপরে তিনি গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসেন। বেরিয়ে আসার পর তাঁকে ব্যাসের পুত্র নামে পরিচিত হয়। এও উল্লেখ রয়েছে, শুক গর্ভেই বেদ, উপনিষদ, দর্শন ও পুরাণ ইত্যাদিরও জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি কঠোর তপস্যা করেন ও পরবর্তীকালে ‘শুকদেব মুনি’ নামে বিশ্বে প্রসিদ্ধ হন।