Akshaya Tritiya 2024: এই দেবীর অনুমতি না মিললে তৈরি হয় না জগন্নাথের রথ! অক্ষয় তৃতীয়ায় কীভাবে রথ নির্মাণ শুরু হয়, জানুন

Puri Jagannath Temple: মন্দিরের নিয়ম অনুসারে, পুরুষোত্তম জগন্নাথকে ‘দারুব্রহ্ম’ও বলা হয়ে থাকে। দারু কথার অর্থ হল কাষ্ঠ , আর সেই কাষ্ঠ হল নিমকাঠ। জগন্নাথ-সুভদ্রা ও বলরামের কলেবরও তৈরি হয় এই পবিত্র নিমকাঠ দিয়ে। পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, প্রতি বছর আষাঢ় মাসে ভগবান জগন্নাথের রথযাত্রা বের করা হয়। এই রথ যাত্রার জন্য গোটা প্রস্তুতিপর্ব শুরু হয় অক্ষয় তৃতীয়ার মধ্যে দিয়ে।

Akshaya Tritiya 2024: এই দেবীর অনুমতি না মিললে তৈরি হয় না জগন্নাথের রথ! অক্ষয় তৃতীয়ায় কীভাবে রথ নির্মাণ শুরু হয়, জানুন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 08, 2024 | 7:02 PM

সারা বছরের মধ্যে যে যে শুভ দিনগুলি রয়েছে, তার মধ্যে অক্ষয় তৃতীয়া হল অন্যতম। এইদিনটি এতটাই শুদ্ধ ও শুভ, যে শাস্ত্র ও ধর্মমতে প্রতিটি কাজেই মেলে সাফল্য। এদিন থেকেই খুলে দেওয়া হয় কেদারনাথ-সহ উত্তরাখণ্ডের বিখ্যাত চারধামের দরজা। শুধু তাই নয়, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকেই পুরীর জগন্নাথ ধামের বিশ্ববিখ্যাত রথযাত্রার প্রস্ততি শুরু হয়। প্রতি বছর জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরামের তিনটি রথ তৈরি করে মাসির বাড়ি রওনা দেওয়া হয়। আর সেই রথযাত্রার জন্য কাঠ কাটা থেকে শুরু করে, সেই কাঠ পুজো করা ও কাঠামো নির্মাণপর্ব শুরু হয়ে যায় এদিন থেকেই। এবছর অক্ষয় তৃতীয়া পালিত হতে চলেছে আগামী ১০ মে।

জগন্নাথের রথ তৈরির জন্য প্রায় ৫ ফুট লম্বা কাঠের টুকরো মন্দিরে পৌঁছায়। একই সঙ্গে বন থেকে কাঠ বাছাইয়ের প্রক্রিয়াটিও অত্যন্ত আকর্ষণীয়। কথিত আছে, রথ তৈরির জন্য কাঠ আনা হয় নয়াগড় জেলার দাসপাল্লা ও মহিপুরের জঙ্গল থেকে। এই জঙ্গলে সাধারণের প্রবেশ করা নিষিদ্ধ। আবার সকলেই এই বন থেকে গাছ কেটে কাঠ কাটতে পারেননা।

মন্দিরের নিয়ম অনুসারে, পুরুষোত্তম জগন্নাথকে ‘দারুব্রহ্ম’ও বলা হয়ে থাকে। দারু কথার অর্থ হল কাষ্ঠ , আর সেই কাষ্ঠ হল নিমকাঠ। জগন্নাথ-সুভদ্রা ও বলরামের কলেবরও তৈরি হয় এই পবিত্র নিমকাঠ দিয়ে। পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, প্রতি বছর আষাঢ় মাসে ভগবান জগন্নাথের রথযাত্রা বের করা হয়। এই রথ যাত্রার জন্য গোটা প্রস্তুতিপর্ব শুরু হয় অক্ষয় তৃতীয়ার মধ্যে দিয়ে। নিয়ম অনুসারে, ভগবান জগন্নাথের জন্য রথের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যায় অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকেই। রথ তৈরিতে ব্যবহৃত কাঠ কাটা হয় একটি সোনার কুড়াল দিয়ে।

জগন্নাথের রথ তৈরির জন্য নির্দিষ্ট জঙ্গল থেকে কাঠ আনা হয়। পুরীর নয়াগড় বাঁখণ্ডের বনদেবী ​​পুজোর স্থান রয়েছে। এ সময় জগন্নাথ মন্দিরের অন্যতম প্রধান সদস্যের কথায়, প্রতি বছর পৌষ মাসের ষষ্ঠীতে মন্দিরে যাওয়া হয়। সেখানে বনদেবীকে জগন্নাথের পোশাক ও ফুল উপহার দেন। শুধু তাই নয়, কাঠ কাটার অনুমতি নেওয়া হয় দেবীর কাছ থেকে। একই সময়ে, সেখানে বিশেষ রীতিতে পুজো করা হয়ে থাকে। তারপর মন্দির চত্বরে দুই-তিন ঘণ্টা ভজন ও কীর্তন হয়।

কথিত আছে, পুজোয় কোনও বাধা না থাকলে কাঠ কাটতে মায়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হয়। মালি গোষ্ঠীর বাসিন্দারা প্রায় ১০০বছরেরও বেশি সময় ধরে এই গাছগুলি পাহারা দিয়ে চলেছেন। রথ তৈরির জন্য নির্দিষ্ট জঙ্গল থেকে কাঠ আনা হয়। সেই নিম গাছের জঙ্গলের কাঠ নির্বাচন করার সময় মন্দির কমিটির কর্মীরা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে সেই তথ্য পাঠান। গাছের কাঠগুলি রথ তৈরিতে ব্যবহার করা হবে, সেই গাছগুলিকে পুজো করা হয় আগে। পুজোর পর সেই গাছগুলি সোনার কুড়ুল দিয়ে কাটা হয়। নিয়ম মেনে সোনার কুঠার প্রথমে ভগবান জগন্নাথের মূর্তির কাছে স্পর্শ করা হয়, তারপর সোনার কুড়ুল দিয়ে গাছ কাটার কাজ করা হয়ে থাকে।

মালি গোষ্ঠীর পরিবারের সকল সদস্য সঠিক ও বাছাই করা গাছের সামনে মাথা নত করে গাছ কাটার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। মনে করা হয়,  পূর্বপুরুষরা হাজার হাজার বছর ধরে গাছগুলিকে পাহারা দিয়ে চলেছেন। মন্দিরের নিয়ম অনুসারে, যাত্রা শেষে তিনটি রথের জন্য ব্যবহৃত কাঠ পুরীধামের ভগবানের রান্নাঘরে রাখা হয়। সেগুলি পুড়িয়ে সারা বছর ভগবানের মহাপ্রসাদ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

কথিত আছে যে প্রতি বছর ভগবান জগন্নাথ, বোন সুভদ্রা এবং ভাই বলভদ্রের জন্য তিনটি পৃথক রথ তৈরি করা হয়। সেজন্য মোট ৮৬৫টি কাঠের টুকরো ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এবার মাত্র ৮১২টি কাঠের টুকরা ব্যবহার করা হবে। কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে, গত বছর ৫৩টি কাঠ সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত রথ তৈরির জন্য প্রায় ২০০ টুকরো কাঠ মন্দিরে পৌঁছে গিয়েছে।