হিমাচল প্রদেশের আনাচে কানাচে একাধিক মন্দির রয়েছে। তার মধ্যে নানা মন্দিরের রহস্য শুনলে যে কোনও ব্যক্তির গায়ে কাঁটা দেয়। অনেকে হিমাচল প্রদেশকে ‘দেবভূমি’ বলে থাকেন। মানুষের বিশ্বাস সেখানের মুক্ত বাতাসেও থাকে রহস্য। সেখানকার এক মন্দিরে জড়িয়ে রয়েছে এক অলৌকিক আখ্যান। হিমাচল প্রদেশে মহাদেবের এক মন্দির ‘বিজলি মহাদেব মন্দির’ খুবই বিখ্যাত। এই মন্দিরের পরতে পরতে রহস্যে মোড়ানো। জেনে নেওয়া যাক সেই রহস্যে আবৃত গল্প।
হিমাচল প্রদেশের কুলু-মানালিতে ৮০৭১ ফুট উঁচুতে অবস্থিত বিজলি মহাদেব মন্দির। কুলু উপত্যকায় বিয়াস ও পার্বতী নদীর সঙ্গমস্থলে এক সুউচ্চ পাহাড় রয়েছে। সেখানেই এই মন্দির। আর এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ইতিহাস খুবই চমকপ্রদ। কথিত আছে যে, পুরাকালে এই উপত্যকায় বাস করত কুলান্ত নামক এক দৈত্য। সেই দৈত্য একবার বিশালাকায় অজগরের রূপ ধারণ করেছিল। এরপর নিজের শরীরে দিয়ে বিয়াস নদীতে বাধা তৈরি করে। যাতে সেই জলের স্রোতে ভেসে যান গ্রামবাসীরা। এরপর প্রাণভয়ে সেখানকার মানুষজন মহাদেবকে স্মরণ করতে থাকেন। এরপর সকলকে বাঁচাকে সাড়া দেন মহাদেব। সেই অজগররূপী দৈত্যর সঙ্গে এক যুদ্ধ করেন মহাদেব। তারপর মহাদেব নিজের ত্রিশূল দিয়ে বধ করেন কুলান্তকে। এরপর বিশালাকায় সেই সাপ আকার নেয় পর্বতের। কুলান্তের ওই নাম থেকেই সেই এলাকার নাম হয় কুলু।
বিজলি মহাদেব মন্দিরের বিশেষত্ব প্রতি ১২ বছর পর পর সেখানে বজ্রপাত হয়। তাও আবার মহাদেবের শিবলিঙ্গে। আর তাতে শিবলিঙ্গ টুকরো টুকরো হয়ে যায়। কথিত আছে, মহাদেব নিজের উপর বজ্রপাতের মাধ্যমে ভক্তদের কষ্ট নিয়ে নেন। এই টুকরো হয়ে যাওয়া শিবলিঙ্গ জোড়া লাগান মানালিতে থাকা এক ব্রাহ্মণ পরিবারের সদস্যরা। যাঁর বাড়িতে কোনও সদস্য কখনও শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সক্ষম জন্মগ্রহণ করেননি। প্রত্যেকেই কিছু না কিছু দিক থেকে বিশেষভাবে সক্ষম। কথিত আছে, সেই বাড়ির ব্রাহ্মণ আশে পাশের বাড়ি থেকে মাখন নিয়ে আসেন। এক পাত্রতে তা জড়ো করে পাহাড়ের উপর ওঠেন। এবং শিবলিঙ্গের টুকরো গুলো একসঙ্গে জুড়ে তাতে মাখনের লেপ লাগান। তার কিছুক্ষণ পর শিবলিঙ্গে জল দিয়ে অভিষেক করেন। ঠিক আগের অবস্থায় এবং আকারে ফিরে আসে সেই শিবলিঙ্গ। যা দেখে কেউ ধরতেই পারেন না। যে শিবলিঙ্গটি টুকরো হয়েছিল কিনা।