AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Chhath Puja 2021: ছটপুজোয় রয়েছে শ্রীরামের যোগ! এবছর পুজোর শুভ মুহূর্ত কখন, জানুন এক ক্লিকেই

ছট পূজায় কোনও মূর্তি উপাসনার স্থান নেই। এতে ডুবিত এবং উদিত সূর্যকে পূজা করা হয়। আজকাল পূজা অনুষ্ঠিত করা কমিটিগুলিকে সকল ঘাটের কাছে সূর্য এবং ঊষার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে দেখা যায়।

Chhath Puja 2021: ছটপুজোয় রয়েছে শ্রীরামের যোগ! এবছর  পুজোর শুভ মুহূর্ত কখন, জানুন এক ক্লিকেই
ছবিটি প্রতীকী
| Edited By: | Updated on: Nov 06, 2021 | 9:10 AM
Share

কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দীপাবলি শেষে কার্তিক শুক্লা চতুর্থী থেকে কার্তিক সপ্তমী অবধি চারদিন ধরে ছটপুজো করা হয়। সূর্যদেব ও তাঁর স্ত্রী উষার আরাধনার মাধ্য়মে এই পুজো করা হয়ে থাকে। প্রধাণত উত্তরভারত তথা বিহার , ঝাড়খণ্ডে এই পুজোর বিশেষ প্রচলন রয়েছে। এছাড়া ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও এই পুজোর প্রচলন রয়েছে। মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও নেপালেও এই পুজো নিয়ম মেনে পালন করা হয়।

কার্তিক মাসে ছট পূজা অনুষ্ঠিত হয় বলে একে কার্তিক ছট পূজা বলা হয়। হিন্দু পুরানুযায়ী ছট পূজা হল সূর্য পত্নী ছঠি মাইয়ার পূজা (ছট মায়ের পূজা), ছট মাতাকে উষা বলে সম্বোধন করা হয়। ছটে কোনও মূর্তি পূজা করা হয় না। ছট পুজোর মাধ্যমে সূর্য ভগবান এবং সূর্য পত্নী ছঠি মাইয়ার (উষার) পুজো করা হয়। র হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ হিন্দু পঞ্জিকা মতে ২০২১ সালে নভেম্বরের ১০ তারিখ বুধবার ছটপুজো উদযাপন করা হবে।

ঋগ্বেদের শ্লোকসমূহে সূর্য্যবন্দনার স্পষ্ট নিদর্শন আছে। ভারতীয় সভ্যতার সঙ্গে গ্রীক, রোমান, মিশরীয় ইত্যাদির সভ্যতাসমূহেও সূর্য্য মূখ্য দেবতা ছিলেন। সেভাবে ঊষাও বৈদিক দেবী। বেদে উল্লেখ থাকা মতে, তিনি হলেন পূর্বের দেবী এবং অশ্বিনীকুমারদের মাতা। অগ্নি, সোম এবং ইন্দ্র ইত্যাদি দেবতা সকলের পরে তিনি হলেন অন্যতম উল্লেখযোগ্য বৈদিক দেবী। রাত্রি হল তার ভগ্নী যাকে হয়তো পরে পৌরাণিক যুগে সন্ধ্যা এবং ছায়ারূপে কল্পিত করা হয়েছে।

কাহিনি

একটি প্রচলিত কাহিনি মতে, শ্রীরাম শ্রীলঙ্কায় রাবণ বধের পর দীপাবলির দিন অযোধ্যায় ফিরে আসেন। সেইরাতে রাজ্যের সকল প্রজারা মিলে রাজ্য জুড়ে ঘি-এর প্রদীপ জ্বালিয়েছিলেন। এরপর রামের রাজ্যাভিষেক হয় ও রামরাজ্য স্থাপনের উদ্দেশ্যে শ্রীরাম ও সীতা কার্তিক মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে উপবাস করে সূর্য দেবতার আরাধনা করেন। সপ্তমীর সূর্যোদয়ে আবার সূর্য আরাধনা করে রামরাজ্যের সূচনা করেন।

রামায়ণে উল্লেখ থাকা মতে, রামের কুলদেবতা সূর্য্যের জন্য রাম এবং সীতা এই পূজা করেছিলেন। মহাভারতে উল্লেখ থাকা মতে, দ্রৌপদী ধম্য ঋষির উপদেশ মতে সূর্য্যকে আরাধনা করে অক্ষয় পাত্র লাভ করেছিলেন। সঙ্গে মহাবীর কর্ণের কোমর পর্যন্ত জলে নেমে সূর্য্যের উপাসনা করা উল্লেখ আছে। আজও ছট পূজা উদ্‌যাপন করা সকল মানুষকে কোমর পর্যন্ত জলে নেমে সূর্য বন্দনা করতে দেখা যায়। অন্য এক আখ্যান মতে, পাণ্ডু ঋষি হত্যার পাপের প্রায়শ্চিত্তের কারণে পত্নী কুন্তীর সঙ্গে বনে থাকায় পুত্র প্রাপ্তির জন্য সরস্বতী নদীর পারে সূর্য্য উপাসনা এবং ব্রত করেছিলেন।

মহাভারতেও রয়েছে ছটপুজোর উল্লেখ। সূর্যপুত্র কর্ণই সূর্যোদয়ের সূর্যের পুজো শুরু করেছিলেন। পুরাণ মতে, ভগবান সূর্যের সর্বোচ্চ ভক্ত ছিলেন।

মাহাত্ম্য

ভারতে সূর্য্যোপাসনার জন্য প্রসিদ্ধ পার্বণ হল ছট পূজা। এটি বছরে দুবার পালিত হয় — প্রথমবার চৈত্র মাসে (চৈতী ছট) এবং দ্বিতীয়বার কার্তিক মাসে (কার্তিকী ছট)। পারিবারিক সুখ-সমৃদ্ধি তথা মনোবাঞ্ছিত ফল লাভের জন্য এটি পালন করা হয়। নারী-পুরুষ সমানভাবে এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন।

নিয়ম-আচার

ছট পূজায় কোনআ মূর্তি উপাসনার স্থান নেই। এতে ডুবিত এবং উদিত সূর্যকে পূজা করা হয়। আজকাল পূজা অনুষ্ঠিত করা কমিটিগুলিকে সকল ঘাটের কাছে সূর্য এবং ঊষার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে দেখা যায়। পূজার দুদিন আগে লাউ ভাত এবং একদিন আগে খির ভাত খাওয়ার সঙ্গে ৩৬ ঘণ্টার এক কঠোর ব্রত পালন করতে হয়। পূজায় সম্পূর্ণ সাত্বিক নৈবেদ্য ইত্যাদি কুলো, ডলা বা পাচিতে রেখে উৎসর্গ করা হয়। বিভিন্ন ফলমূল, মিঠাই ইত্যাদির সঙ্গে পরম্পরাগত বিহারী লোকখাদ্য “ঠেকুয়া” প্রস্তুত করে নৈবেদ্যরূপে প্রদান করা হয়।[৭] এই সময় নুন-মশলাবর্জিত সম্পূর্ণ নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ করা হয়। পূজার শেষে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীদের প্রসাদ বিতরণ এই পূজার অন্যতম নিয়ম। এই পূজায় অনেককে বাগরি নদীর ঘাটে গিয়ে পূজা করার দৃশ্যও দেখতে পাওয়া যায়। বর্তমানে এই পূজা এক সার্বজনীন রূপ পেয়েছে। বিভিন্ন ভাষাভাষী, ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষ এই পূজার মাহাত্ম্য উপলব্ধি করে পূজায় সামিল হতে শুরু করেছেন।

চারদিনের এই ব্রতের প্রথম দিনে ব্রতধারী বাড়িঘর পরিষ্কার করে স্নান সেরে শুদ্ধাচারে নিরামিষ ভোজন করেন (যাকে নহায়-খায় বলা হয়)। পরদিন থেকে উপবাস শুরু হয়; ব্রতী দিনভর নির্জলা উপবাস পালনের পর সন্ধ্যায় পূজার শেষে ক্ষীরের ভোগ গ্রহণ করেন (এটি খরনা নামে পরিচিত)। তৃতীয় দিনে নিকটবর্তী নদী বা জলাশয়ের ঘাটে গিয়ে অন্যান্য ব্রতীর সাথে অস্তগামী সূর্যকে অর্ঘ্য অর্থাৎ দুধ অর্পণ করা হয়। ব্রতের শেষদিনে পুনরায় ঘাটে গিয়ে উদীয়মান সূর্যকে পবিত্র চিত্তে অর্ঘ্যপ্রদানের পর উপবাসভঙ্গ করে পূজার প্রসাদরূপে বাঁশ নির্মিত পাত্রে সুপ, গুড়, মিষ্টান্ন, ক্ষীর, ঠেকুয়া, ভাতের নাড়ু এবং আখ, কলা, মিষ্টি লেবু প্রভৃতি ফল জনসাধারণকে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন:  Conch: পুজোতেই নয়, প্রতিদিন সন্ধ্যেতে শঙ্খ বাজালে ঘরে কোণ কোণ দিক পরিপূর্ণতা পায়, জানুন