
এশিয়া কাপে এখনও অবধি সব ম্যাচে জয়। সুপার ফোরে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনালে ভারত। গ্রুপ পর্বে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছিল ভারত (Indian Cricket Team)। সুপার ফোরেও জয় দিয়ে অভিযান শুরু করেছিল বিশ্বের এক নম্বর টিম। পাকিস্তানের পর বাংলাদেশকে দুরমুশ করল ভারত। নতুন বলে দুর্দান্ত বোলিং জসপ্রীত বুমরার (Jasprit Bumrah)। ভরসা দিলেন স্পিনাররাও। ভারতের দেওয়া ১৬৯ রান তাড়ায় ১২৭ রানেই অলআউট বাংলাদেশ। তবে গৌতম গম্ভীর, সূর্যকুমার যাদবদের (Suryakumar Yadav) মাথাব্যথা থাকলোই। পাকিস্তানের পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও একঝাঁক ক্যাচ মিস ভারতের। বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে যা বড় ধাক্কা বলা যায়। শুক্রবার সুপার ফোরে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলবে ভারত। এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) সুপার ফোর পর্বে ভারত বনাম বাংলাদেশ (India vs Bangladesh) ম্যাচের সমস্ত আপডেট পাবেন এই লিঙ্কে।
ফাইনালে জায়গা করে নিল ভারত। টুর্নামেন্টে একমাত্র দল যারা সব ম্যাচ জিতেছে। সুপার ফোরে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ট্রফির ম্যাচে। বিস্তারিত ম্যাচ রিপোর্ট পড়ুন: একঝাঁক ক্যাচ ফসকেও ফাইনাল নিশ্চিত ভারতের, জিতলেই ‘নয়’
পুরো ২০ ওভার ব্যাট করতে পারল না বাংলাদেশ। ১৯.৩ ওভারে ১২৭ রানে অলআউট। ৪১ রানের জয়। ফাইনালে জায়গা করে নিল ভারত। এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশের কোচ বলেছিলেন, ভারতকে যে কোনও দল হারাতে পারে! তারই যেন জবাব দিলেন সূর্যরা।
তিলক ভার্মার দুর্দান্ত ক্যাচে সইফুদ্দিনের উইকেট। এরপরের ডেলিভারিতে গুগলিতে তানজিদ হাসানকে ক্লিন বোল্ড। হ্য়াটট্রিকের সামনে কুলদীপ যাদব। ফের গুগলি। যদিও হ্য়াটট্রিক হল না।
হাই ক্যাচ, গ্লাভস হাতে সঞ্জু স্যামসন। কিন্তু জাজমেন্ট ঠিকঠাক হয়নি। সেট ব্যাটার সইফ হাসানের ক্যাচ মিস। ম্যাচ ক্লোজ হতে পারে।
শিবম দুবে ও হার্দিক পান্ডিয়ার ভুল বোঝাবুঝিতে ক্যাচ ড্রপ হয়। যদিও ২ বলের ব্যবধানেই উইকেট। এ বার তিলকের ক্যাচে ফিরলেন সইফুদ্দিন। জয়ের পথ ক্রমশ সহজ হচ্ছে ভারতের।
একটা উইকেট, ফাইনালের পথে একধাপ। ভারতের কাছে এই ম্যাচ তাই। ভারতীয় বোলাররা এখনও অবধি ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতেই রেখেছেন। ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ। ক্রিজে এলেন ক্যাপ্টেন জাকের আলি। আস্কিং রেট অনেকটাই বেশি। আক্রমণের সম্ভাবনা যেমন প্রয়োজন, তাতে উইকেটের সুযোগও বেশি।
টার্গেট ১৬৯। প্রথম দশ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৬৫ বাংলাদেশের। ভারতের কাছে দারুণ সুযোগ। এখনও ১০৪ রান প্রয়োজন। ওভার প্রতি ১০ রান এখানে সহজ নয়। শিবম দুবেকে বোলিংয়ে ব্যবহার করা প্রয়োজন এ বার।
ব্যাট হাতে হতাশ করেছিলেন অক্ষর। বোলিংয়ে পুষিয়ে দিচ্ছেন। পরিকল্পনা থেকে সরেননি। ছয় খাওয়ার পর দারুণ কামব্যাক। বড় শট খেলার চেষ্টায় তৌহিদ হৃদয়ের উইকেট।
সইফ হাসান ও পারভেজ হোসেন ইমনের পার্টনারশিপ বড় হচ্ছিল। পাওয়ার প্লে শেষ হতেই কুলদীপকে আক্রমণে আনা হয়। ব্রেক থ্রুও দিলেন। স্লগ সুইপে খেল খতম ইমনের। ক্যাচ নেন অভিষেক। ক্রিজে তৌহিদ হৃদয়।
পাওয়ার প্লে-তেই তিন ওভার করানো হল জসপ্রীত বুমরাকে দিয়ে। ভারত পাওয়ার প্লে-তে তুলেছিল ৭২ রান। যদিও পাওয়ার প্লে শেষ হতে বিপর্যও এসেছিল। প্রথম দু-ওভারে বুমরা মাত্র ৮ রান দিয়েছিলেন। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে দুর্দান্ত শটে ছয় মারেন ইমন। পাওয়ার প্লে-তে ১ উইকেটে ৪৪ রান তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ৩ ওভারে মাত্র ১৭ রান বুমরার।
জসপ্রীত বুমরা চাপ তৈরি করেছিলেন। বরুণের ওভারে তিন বাউন্ডারিতে হতাশা। এর মধ্যে শর্ট থার্ডে ক্যাচও মিস। চাপ হালকা হয়ে গেল অনেকটা। বুমরার চার ওভারের উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে।
গত ম্যাচে ৪ ওভারের স্পেলে ৪৩ রান দিয়েছিলেন। উইকেটের খাতা ছিল শূন্য। জসপ্রীত বুমরার কাছে এই বোলিং অবিশ্বাস্য। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিজের দ্বিতীয় ডেলিভারিতেই উইকেট।
ব্যাটিং অর্ডারে ব্যাপক রদবদল। সঞ্জু স্যামসন নামারই সুযোগ পেলেন না। শেষ ওভারে ডট বল খেলেন অক্ষর প্যাটেল। হার্দিক শেষ ডেলিভারিতে স্ট্রাইকে ছিলেন। ছয় মারার চেষ্টায় আউট। শেষ ওভারে মাত্র ৪ রান করল ভারত। ফলে ১৬৮ রান অবধি পৌঁছনো গেল। ভারতীয় বোলিং আক্রমণের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ এই রান ডিফেন্ড করা।
বাকি আর মাত্র সাড়ে তিন ওভার। কিন্তু স্লগ দেখা যাচ্ছে না। ক্রিজে অক্ষর-হার্দিক। নামা বাকি সঞ্জু স্যামসনের। রানের গতি না বাড়ালে চাপ আরও বাড়বে।
ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব জানিয়েছিলেন, ওপেনিং ছাড়া বাকি ব্যাটিং লাইন আপ পরিবর্তন হতে পারে। প্রতি ম্যাচেই ব্যাটিং অর্ডারে কিছু না কিছু পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। সেটাই কি বিপদ ডেকে আনল? বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ওপেনিং জুটি অক্ষত থাকলেও এরপর পরিবর্তন। ওপেনিংয়ে ৭৭ রানের পার্টনারশিপ। পরপর উইকেট হারিয়ে চাপ বাড়ল ভারতীয় শিবিরে। এখান থেকে ২০০ হওয়া কঠিন। ক্রিজে হার্দিক-অক্ষর।
মুস্তাফিজুর রহমানের খারাপ ডেলিভারি। লেগ সাইডে অনেকটা বাইরে। ওয়াইড হত। বলের দিক পরিবর্তন দেখা যায়। অন ফিল্ড আম্পায়ার যদিও আউট দেননি। হয়তো ভেবেছিলেন থাইপ্যাডে বল লেগেছে। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। ব্যাটেই সংযোগ। কট বিহাইন্ড সূর্যকুমার যাদব। ভারতের ছন্দপতন।
বিধ্বংসী ব্যাটিং করছিলেন অভিষেক শর্মা। সেঞ্চুরি যেন সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু তা আর হল না। ছোট্ট ভুলে উইকেট। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে খেলেছিলেন সূর্যকুমার যাদব। রান নিতে দৌড়েছিলেন অভিষেক। বোলার মুস্তাফিজুরের হাতে থ্রো। ফিরতে পারেননি অভিষেক। রান আউট হয়ে ফিরতে হল। মাত্র ৩৭ বলে ৭৫ রানের অনবদ্য ইনিংস।
সাধারণত লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করেন। পাঁচ বছর পর তিনে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন শিবম দুবে। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না। মাত্র ২ রানেই ফিরলেন এই অলরাউন্ডার।
পাকিস্তানের পর বাংলাদেশ। ফের হাফসেঞ্চুরি অভিষেক শর্মার। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৭৪ রানে ফিরেছিলেন। আজ আরও একটা সেঞ্চুরির আক্ষেপ পূরণের অপেক্ষা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে কেরিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন অভিষেক।
পাওয়ার প্লে-র পর প্রথম ডেলিভারিতে বড় শট। সেই ধারা বজায় রাখতে চেয়েছিলেন। লেগস্পিনার রিশাদ হোসেনের ডেলিভারিতে ফের বড় শটের চেষ্টা। বল অনেকটা উঁচুতে উঠলেও দূরত্ব কমই থাকল। লং অফে ক্যাচ। ১৯ বলে ২৯ রানে ফিরলেন শুভমন গিল। তিন নম্বরে পাঠানো হল শিবম দুবেকে!
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাওয়ার প্লে-তে ৬৯ রান তুলেছিল ভারত। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শুরুটা সতর্কভাবে করেন। এরপরই তাণ্ডব। পাওয়ার প্লে-তে বিনা উইকেটে ৭২ রান তুলেছে ভারত।
টাফ চান্স! বলা যায়। কিন্তু উইকেটের পিছনে এটি নেওয়া উচিৎ ছিল। লিটনের অনুপস্থিতে কিপিং এবং ক্যাপ্টেন্সি করছেন জাকের আলি। আগেই ডানদিকে ঝুঁকেছিলেন। ফলে অভিষেকের আউট সাইড এজ লাগায় জায়গায় পৌঁছতে পারেননি। ডাইভ দিলেও বল গ্লাভস ছোঁয় মাত্র।
পিচে আগের তুলনায় বেশি বাউন্স দেখা যাচ্ছে। শুরুতে পেসারদের জন্য সুবিধা। ভারত রান তাড়ায় দুর্দান্ত পারফর্ম করছিল, এ দিন প্রথমে ব্যাটিং। হাত খোলার সময় নিচ্ছেন অভিষেক-শুভমন।
টস জিতে রান তাড়ার সিদ্ধান্ত জাকের আলির। বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাকের। তিনি জানালেন, প্র্যাক্টিসে চোট পেয়েছিলেন লিটন দাস। সে কারণে খেলতে পারবেন না। ভারতের একাদশ অবশ্য অপরিবর্তিত।
এ বারের এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি রান রয়েছে ভারতের তরুণ ওপেনার অভিষেক শর্মার। প্রতি ম্যাচেই বিধ্বংসী শুরু দিয়েছেন ভারতকে। তবে হাফসেঞ্চুরি পেরোতে পারছিলেন না। সুপার ফোরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাত্র ৩৯ বলে ৭৪ রান করেছিলেন অভিষেক। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কত রান যোগ করবেন অভি! ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের প্রত্যাশা বড় ইনিংসের।
গ্রুপের তিন, সুপার ফোরে এক। টানা চার ম্যাচে জয়। আজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করতে মরিয়া ভারত। বিস্তারিত পড়ুন: পাকিস্তানের পর বাংলাদেশকে ‘জবাব’-র অপেক্ষায় সূর্যরা!
এশিয়া কাপে ভারতকে এখনও অবধি অপ্রতিরোধ্য মনে হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের কোচ ফিল সিমন্স মনে করছেন, যে কেউ ভারতকে হারাতে পারে! বিস্তারিত পড়ুন: ভারতকে যে কেউ হারাতে পারে, বলছেন বাংলাদেশের কোচ