IPL 2021: শিষ্য পন্থকে হারিয়ে ফাইনালে গুরু ধোনি

দুবাইতে ফিরলেন ফিনিশার ধোনি। চার মেরে দলকে জিতিয়ে ফাইনালে পৌঁছে দিলেন মাহি।

IPL 2021: শিষ্য পন্থকে হারিয়ে ফাইনালে গুরু ধোনি
IPL 2021: শিষ্য পন্থকে হারিয়ে ফাইনালে গুরু ধোনি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 10, 2021 | 11:46 PM

দিল্লি ক্যাপিটালস ১৭২-৫ (২০ ওভার) চেন্নাই সুপার কিংস ১৭৩-৬ (১৯.৪ ওভার) ৪ উইকেটে জয়ী চেন্নাই

দুবাই: এ বারের আইপিএলের (IPL) প্লে অফে কোয়ালিফাই করা প্রথম দলটা ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির (MS Dhoni) চেন্নাই সুপার কিংস (Chennai Super Kings)। এ বারের ফাইনালে ওঠা প্রথম দলটাও হল সেই চেন্নাই। দুবাইতে গত বারের রানার্স দিল্লি ক্যাপিটালসকে (Delhi Capitals) হারিয়ে আইপিএল-১৪-র প্রথম ফাইনালিস্ট হলেন জাডেজারা।

এ বারের আইপিএলে আগের ৫টা ম্যাচে টসে জেতার পর ম্যাচও জেতেন ধোনি। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল আজও। দুবাইতে আইপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ারে টসে জিতে ঋষভ পন্থের দিল্লিকে ব্যাটিং করতে পাঠান ধোনি। দিল্লির শুরুটা ভালো হলেও মাত্র ৩৬ রানের মধ্যে দিল্লিকে প্রথম ধাক্কা দেন জস হ্যাডেলউড। ৪ ওভারে মাত্র ৭ রান করে মাঠ ছাড়েন দিল্লির ওপেনার শিখর ধাওয়ান। তারপর ক্রিজে আসেন শ্রেয়স আইয়ার। তবে তিনি আজ দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেননি। নামের পাশে মাত্র ১ রান তুলে জস হ্যাজেলউডের শিকার হন শ্রেয়স। চার নম্বরে আজ নেমেছিলেন অক্ষর প্যাটেল। তবে দলের হয়ে রান করার পাশাপাশি কঠিন পরিস্থিতিতেও হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দিল্লির অপর এক ওপেনার পৃথ্বী শ। ২৭ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি। ওই সময় পৃথ্বী শ-র সঙ্গে সবেমাত্র জুটিতে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন (২৭ রানের পার্টনারশিপ), কিন্তু সেই সময় দিল্লিকে তৃতীয় ধাক্কা দেন মইন আলি। ১০ রান করে আউট হন বাপু।

এর পর ক্রিজে আসেন দিল্লির ক্যাপ্টেন ঋষভ পন্থ। কিন্তু পন্থ-পৃথ্বী জুটিকে সেট হওয়ার কোনও সুযোগই দেননি রবীন্দ্র জাডেজা। ৩৪ বলে ৬০ রানের দুরন্ত ইনিংসের (৭টি চার, ৩টি ছয়) পর পৃথ্বী ফিরে যান সাজঘরে। ছ’নম্বরে নামেন শিমরন হেটমায়ার। পন্থ-হেটমায়ার জুটিই এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দিল্লিকে। এই জুটিকে থামানোর জন্য রীতিমতো বেগ পেতে হয় চেন্নাইয়ের বোলারদের। ৫০ বলে ৮৩ রানের পার্টনারশিপের পর পন্থ-হেটমায়ার সুপারহিট জুটিকে থামান ডোয়েন ব্র্যাভো। ২৪ বলে ৩৭ রান করে মাঠ ছাড়েন হেটমায়ার। এর মাঝেই হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দিল্লির নেতা পন্থ। শেষমেশ ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৭২ রানে থামে পন্থের দিল্লি।

রান তাড়া করতে নেমে আজ সিএসকের ওপেনিং জুটি ফ্লপ। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই এনরিক নর্টজের শিকার হন চেন্নাইয়ের ওপেনার ফাফ দু প্লেসি। মাত্র ১ রানে সাজঘরে ফেরেন দু প্লেসি। তিন নম্বরে নামেন রবীন উথাপ্পা। গায়কোয়াড়-উথাপ্পা জুটি দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। উইকেটের খোঁজে বোলিংয়ে পরিবর্তন আনলেও হতাশ হতে হচ্ছিল পন্থকে। ৭৭ বলে ১১০ রানের সুপারহিট পার্টনারশিপ গড়েন ঋতু-রবীন। ৪৪ বলে উথাপ্পার ৬৩ রানের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ২টি ছয়। টম কারান ১৪ ওভারের তৃতীয় বলে ফেরান উথাপ্পাকে। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও ফিল্ডিংয়ে নজর কেড়েছেন শ্রেয়স আইয়ার। বাউন্ডারি লাইনের সামনে উথাপ্পার দুর্দান্ত ক্যাচ নেন আইয়ার। নিঃসন্দেহে ওই ক্যাচ সকলেরই নজর কেড়েছে। ওই ওভারের শেষ বলে চেন্নাইকে তৃতীয় ঝটকা দেন টম কারান। রবীন উথাপ্পার পর শার্দূল ঠাকুরের ক্যাচও নেন শ্রেয়স।

বাউন্ডারি লাইনের সামনে শ্রেয়স আইয়ারের রবীন উথাপ্পার ক্যাচ নেওয়ার ব্যাপারে প্রাক্তন অজি ক্রিকেটার ম্যাথু হেডেন (Matthew Hayden) বলেন, “আমি নিশ্চিত নই যে ফ্রেড অ্যাস্টায়ার নিজেও এর চেয়ে বেশি সুন্দর ক্যাচ নিতে পারতেন।”

তৃতীয় উইকেট হারানোর পর ১৫ ওভারে শ্রেয়স আইয়ারের থ্রোকে দুরন্ত গতিতে স্টাম্পে ছুইয়ে দেন কাগিসো রাবাডা। প্রাপ্তি রান আউট অম্বাতি রায়ডু। এরপর মাঠে আসেন মইন আলি। ঋতুর সঙ্গে ৩০ রানের পার্টনারশিপের পর ১৯ ওভারের প্রথম বলেই ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের উইকেট তুলে নেন আবেশ খান। সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে এসে ঋতুর ক্যাচ নেন অক্ষর প্যাটেল। ৫০ বলে ৭০ রানের ইনিংস গায়কোয়াড় সাজিয়েছিলেন ৫টি চার ও ২টি ছয় দিয়ে।

ঋতু ফেরার পর ক্রিজে আসেন চেন্নাই ক্যাপ্টেন ধোনি। মইন আলির সঙ্গে ১১ রান জোড়েন মাহি। শেষ ওভারের প্রথম বলে মইন আলির উইকেট তুলে নিয়ে চেন্নাইকে ঝটকা দেন টম কারান। কিন্তু ক্রিজে তখনও ছিলেম মাহি। মইনের ফেরার পর আসেন রবীন্দ্র জাডেজা। তবে একটিও বল খেলেননি তিনি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন মাহিকে ম্যাচ জেতাতে। দুবাইতে ফিরলেন ফিনিশার ধোনি। মাহি শেষ ওভারে ২ বল বাকি থাকতেই ছক্কা না হলেও চার মেরে দলকে জেতালেন। পাশাপাশি এ বারের ফাইনালে পৌঁছে দিলেন ৩ বারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইকে। ১৮ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়লেন ক্যাপ্টেন কুল।