মুম্বই: ‘নয়ে নয়’ করে বিশ্বকাপের শেষ ল্যাপে ভারত। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে মাত্র চারটি দল। ম্যাচ বাকি দুটি করে। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ এখন এই দুটিই। লিগ পর্বে একটা ম্যাচ হারলে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকত। এখানে তা নেই। জিতলে স্বপ্ন পূরণের পথে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। কিন্তু সেমিফাইনালে শক্ত গাঁট নিউজিল্যান্ড। আইসিসি টুর্নামেন্টে বরাবরই ভারতের কাছে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বিশ্বকাপেও সেমিফাইনালে দেখা হয়েছিল দু-দলের। লিগ পর্বে অনবদ্য খেলা ভারতকে সেমিফাইনালেই ছিটকে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। এ বারও ফেভারিটের মতো খেলছে ভারত। ওয়াংখেড়েতে ফাইনালের টিকিট পেতে ভারতীয় দলের বড় ভরসা হয়ে উঠতে পারে ‘মুম্বই বয়েজ’। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
ক্রিকেট দলগত খেলা। এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। অনেক ক্ষেত্রে কিছু ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও নির্ভর করে। প্রতি ম্যাচে দলের এগারোজনই পারফর্ম করতে পারবেন, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রে এক দু-জনের পারফরম্যান্সই পার্থক্য গড়ে দেয়। ওয়াংখেড়েতে অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান লিগের ম্যাচটাই ধরা যাক! রান তাড়ায় ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। একার হাতেই ম্যাচ জিতিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
ভারতের প্রতিটা ক্রিকেটারই দেশের নানা ভেনুতে খেলেন। কোনও ভেনুই অচেনা নয়। ওয়াংখেড়েও সবার কাছে চেনা। অনেকের কাছে তুলনায় বেশি চেনা। যদি প্রশ্ন করা যায়, টিম ইন্ডিয়ার বিশ্বকাপ স্কোয়াডের কোন সদস্য চেন্নাইয়ের পিচকে সবচেয়ে ভালো চেনেন? নিঃসন্দেহে উত্তরটা আসবে রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তারপরই নেওয়া হবে রবীন্দ্র জাডেজার নাম। একই ওয়াংখেড়ে সম্পর্কে মুম্বইয়ের প্লেয়াররা তুলনামূলক ভালো জানবেন, এটাই স্বাভাবিক। অধিনায়ক রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদব, শ্রেয়স আইয়ারদের কাছে এই মাঠ সেই প্রবাদের ভাষায়, ‘হাতের তালুর মতো’ চেনা। একই ভাবে বলতে হয় জসপ্রীত বুমরার কথাও। আইপিএলের সৌজন্যে ওয়াংখেড়ে তাঁর ঘরের মাঠ।
গত বিশ্বকাপের মতো তেইশের বিশ্বকাপেও ভারতীয় ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা রোহিত শর্মা। ওয়াংখেড়েতে হাইভোল্টেজ সেমিফাইনাল ম্যাচে তিনি যদি ভালো একটা শুরু দিতে পারেন, মিডল অর্ডার ভরসা পাবে। গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শ্রেয়স আইয়ারের ওপরও নির্ভর করবে ভারতের ব্যাটিং পারফরম্যান্স। আর সূর্যকুমার যাদব! আন্তর্জাতিক কেরিয়ার খুব বড় না হলেও এটুকু বলা যায়, ম্যাচের রং বদলে দিতে পারেন। আর এই মাঠে তো তাঁর বেড়ে ওঠা!
বিরাট কোহলির কাছে ওয়াংখেড়ে হোমগ্রাউন্ড না হলেও স্মৃতির মাঠ অবশ্যই। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল হয়েছিল এই মাঠেই। ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পেয়েছিলেন বিরাট। এ বার যে ছন্দে রয়েছেন, যেন কোনও মিশনে নেমেছেন। তাঁর কাছে মাঠ বা প্রতিপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ নয়, ছন্দে থাকা বিরাট যে কোনও মাঠেই ভারতের ভরসা। বিরাট কোহলির বাসস্থান যে এখন মুম্বই! তাঁকেও কি ‘মুম্বইকর’ বলা যায় না?