IPL এর স্পেশাল আউট, মনে পড়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ‘মানকাডিং’ কাহন?
Ravichandran Ashwin: আইপিএল তেমন এক মঞ্চ, যেখানে প্রতি ম্যাচে কিছু না কিছু নজরকাড়া ঘটনা ঘটে থাকে। কোনও ম্যাচের উত্তেজনা এতটাই বেশি হয় যে, আলোচনার মাত্রা তীব্রতার শিখরে পৌঁছে যায়। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে ২০১৯ সালে তেমনই এক কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

২২ গজে মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যা পরে গল্পের আকারে ক্রিকেট প্রেমীদের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। আইপিএল তেমন এক মঞ্চ, যেখানে প্রতি ম্যাচে কিছু না কিছু নজরকাড়া ঘটনা ঘটে থাকে। কোনও ম্যাচের উত্তেজনা এতটাই বেশি হয় যে, আলোচনার মাত্রা তীব্রতার শিখরে পৌঁছে যায়। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে ২০১৯ সালে তেমনই এক কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। যার পর ক্রিকেট মহলে তাঁকে নিয়ে বলাবলি হত যে, ক্রিকেটের রুল-বুক অশ্বিনের কাছে যেন জলভাত! তাঁকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের ঢল বয়েছিল সেই সময়।
আন্তর্জাতিক থেকে শুরু করে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের ম্যাচে ব্যাটারদের ব্যাটে নানা ধরনের শট দেখা যায়। বোলারদের কারসাজিও দেখা যায়। এক এক ক্রিকেটারের আউট হওয়ার নানা ধরনও নজরে পড়ে। বেশ কয়েকটি পরিচিত আউটের কথা যদি বলা হয় প্রথমেই আসবে বোল্ড, এরপর কট, লেগ বিফোর উইকেট, স্টাম্পড, হিট উইকেট, রান আউট, অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড, টাইমড আউট রয়েছে। এ ছাড়াও থাকে রিটায়ার্ড আউট। আর একটা আউটের কথা না বলেই নয়, তা হল মাঁকড়ীয় আউট। যা অবশ্য এমসিসির নিয়ম অনুযায়ী আইসিসি রান আউট হিসেবে গণ্য করে। আজ আপনাদের শোনাই আইপিএলের ইতিহাসে এই মাঁকড়ীয় আউট করে শোরগোল ফেলা রবিচন্দ্রন অশ্বিনের গল্প।
তুখোড় ক্রিকেট সেন্স থাকলে চকিতে কোনও ক্রিকেটারকে আউট করা যায়। এ কথা অনেকেই বলেন। আর ক্রিকেটে যদি উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগানো যায়, তা হলে অশ্বিনের মতো কীর্তিমানের তালিকায় ঢুকে পড়া যায়। এ বার ফেরা যাক ২০১৯ সালের আইপিএলে। এতটা দূরে কেন? তা না হলে যে আপনাদের আইপিএলের মশলাদার আউটের গল্প শোনানো যাবে না। বেশ শুরু করা যাক। সালটা যে ২০১৯, তা আগেই বলেছি। এ বার তারিখে আসি। তারিখ পে তারিখ, তারিখ পে তারিখ… না না এত তারিখ দেব না। দিনটা ছিল ২৫ মার্চ। সে বারের আইপিএলের চতুর্থ ম্যাচে নেমেছিল কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। বর্তমানে যে দল পঞ্জাব কিংস নামে আইপিএলে খেলে। প্রতিপক্ষ রাজস্থান রয়্যালস। পিঙ্ক আর্মির ইনিংসের ১৩তম ওভারে আউট হন জস বাটলার। এতটা শুনে স্বাভাবিকই লাগছে নিশ্চয়ই! এ বার আসা যাক আসল টুইস্টে। আর সেই টুইস্ট বাটলারের আউটকে কেন্দ্র করেই। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বোলার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ওই ম্যাচে বাটলারকে মাঁকড়ীয় আউট করেছিলেন। এরপর অনেকের রোষানলে পড়েছিলেন ভারতীয় তারকা। কিন্তু তিনি যে নিয়মের দিক থেকে আদ্যোপান্ত ঠিক, তা প্রমাণ হয়েছিল।
ঘটনাটি ঠিক কী? আসলে সেই ম্যাচে রাজস্থানের ওপেনার জস বাটলার নন-স্ট্রাইকার এন্ডে ছিলেন। বোলিং ক্রিজ ছেড়ে বেশ কিছুটা এগিয়ে ছিলেন। যাতে কুইক সিঙ্গল নিতে হলে অ্যাডভান্টেজে থাকতে পারে। সেই সুযোগে বোলার অশ্বিন বোলিং অ্যাকশন কমপ্লিট করেই বল উইকেটে লাগিয়ে বাটলারকে আউট করে দেন। এই ভাবে আউট করাকে বলে মাঁকড়ীয় আউট বা মানকাডিং। সেই ম্যাচে বাটলার ৬৯ রান করেন। ম্যাচটি ১৪ রানে জেতে পঞ্জাব। ওই ম্যাচে অশ্বিনের মানকাডিং নিয়ে পরবর্তীতে বিরাট চর্চা হয়েছে। অনেকে অশ্বিনের বিরুদ্ধে মত পোষণ করেছিলেন। এক দলের কথায়, ক্রিকেটীয় ও স্পোর্টসম্যান স্পিরিট জলাঞ্জলি দিয়ে এ কাজ করেছিলেন অশ্বিন। অপর দলের কথায়, নিয়ম মেনেই এই আউট করেছেন অশ্বিন। এই বিতর্কের কারণ, অনেক সময়ই দেখা গিয়েছে, সুযোগ থাকলেও অনেক ক্রিকেটার এই আউট থেকে বিরত থেকেছেন।
নিয়মটা আগে থেকেই ছিল। তবে এই আউটের নাম কেন মাঁকড়ীয়? ১৯৪৭ সালে সিডনি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিল ব্রাউনকে এই ভাবে আউট করেছিলেন ভারতের বিনু মাঁকড়। তারপর থেকেই এই আউট মাঁকড়ীয় আউট বলে পরিচিত হয়ে ওঠে। এটা কেন্দ্র করে বিতর্কের কারণ আউটের নিয়ম বৈধ হলেও খেলোয়াড়চিত মানসিকতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন। ২২ গজে বিভিন্ন ম্যাচে এই ধরনের আউটের পর বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। তাই পরবর্তীতে এমসিসি-র পরামর্শ মেনে আইসিসি এই আউটকে রান আউটের নিয়মের সঙ্গেই জুড়ে দেয়। এখন মাঁকড়ীয় আউট হলেও স্কোর বোর্ডে রান আউট হিসেবেই উল্লেখ থাকে।
