IPL 2022: হার্দিকের গুজরাতের বিজয়রথ থামাল উইলিয়ামসনের হায়দরাবাদ

জয়ে ফিরেছে নিজামের শহরের দল। আজ ৮ উইকেটে গুজরাত টাইটান্সকে হারাল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

IPL 2022: হার্দিকের গুজরাতের বিজয়রথ থামাল উইলিয়ামসনের হায়দরাবাদ
IPL 2022: হার্দিকের গুজরাতের বিজয়রথ থামাল উইলিয়ামসনের হায়দরাবাদImage Credit source: IPL Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 11, 2022 | 11:31 PM

গুজরাত টাইটান্স ১৬২-৭ (২০ ওভারে)

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৬৮-২ (১৯.১ ওভারে)

মুম্বই: এ বারের আইপিএলের (IPL 2022) নতুন দল গুজরাত টাইটান্স (Gujarat Titans) দুরন্ত ছন্দে এগিয়ে যাচ্ছিল। জয়ের হ্যাটট্রিকে ভর করে ভরপুর আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে আজ মাঠে নেমেছিল টাইটান্সরা। তবে আজ দিনটা হার্দিকদের ছিল না। ব্যাটে-বলে হার্দিক অধিনায়কের দায়িত্বটা ঠিক মতো পালন করলেও, দলকে জেতাতে পারলেন না। গুজরাত টাইটান্সের বিজয়রথ থামালো কেন উইলিয়ামসনের সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (Sunrisers Hyderabad)। দুটো ম্যাচে পর পর হারার পর গত ম্যাচে সিএসকেকে হারিয়েছিল অরেঞ্জ আর্মি। ফলে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জয়টা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল উইলিয়ামসনদের। আজ সেই আত্মবিশ্বাসে ভর করেই টাইটান্সদের হারাল অরেঞ্জ আর্মি।

টসে জিতে শুরুতে হার্দিক পান্ডিয়াদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন অরেঞ্জ আর্মির নেতা কেন উইলিয়ামসন। গুজরাতের ওপেনার শুভমন গিল গত ম্যাচে দুরন্ত ছন্দে ছিলেন। পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে টাইটান্সদের শেষ ম্যাচে দুর্ধর্ষ ৯৬ রান করেছিলেন গিল। কিন্তু আজ তিনি শুরুতেই আটকে যান ভুবনেশ্বর কুমারের কাছে। ৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন পঞ্জাব তনয়। গিল ফিরলে ওয়েডকে সঙ্গ দিতে আসেন সাই সুদর্শন। তবে তিনিও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। টি নটরাজন তুলে নেন সুদর্শনের (১১) উইকেট। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে ৫২ রান তোলে টাইটান্সরা। এর মধ্যে ওয়েডের ক্যাচ হাতছাড়া করেন অভিষেক। তবে ওপেনার ম্যাথু ওয়েড বড় ইনিংস খেলে যেতে পারেননি। কাশ্মীরি তারকা উমরান মালিক তুলে নেন ওয়েডের (১৯) উইকেট। ওয়েড ফিরলে কিছুটা শ্লথ গতিতে খেলছিলেন ডেভিড মিলার। তবে ক্যাপ্টেন হার্দিক পান্ডিয়া ফর্মে ছিলেন। চতুর্থ উইকেটে ওঠে ৪০ রান। ১৪ ওভারের মাথায় মার্কো জ্যানসেনকে উইকেট দিয়ে বসেন মিলার (১২)।

এরপর হার্দিকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত হলেও গুরুত্বপূর্ণ জুটি বাঁধেন অভিনব মনোহর। বলতেই হবে আজ মনোহরের ভাগ্য তাঁর সঙ্গ দিয়েছে। দু’বার তাঁর ক্যাচ ফস্কান অরেঞ্জ আর্মির প্লেয়াররা। তবে তৃতীয় বার আর কোনও ভুল করেননি প্রাক্তন নাইট তারকা রাহুল ত্রিপাঠী। বাউন্ডারি লাইনের সামনে মনোহরের ক্য়াচ নেন তিনি। ২১ বলে ৩৫ রান করে যান অভিনব। যার মধ্যে ছিল ৫টি চার ও ১টি ছয়। এরপর ৬ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন রাহুল তেওয়াটিয়া। তবে শেষ অবধি ছিলেন টাইটান্স ক্যাপ্টেন। এবং অধিনায়োকচিত ইনিংস খেলে যান হার্দিক। ৪২ বল খেলে ৫০ রানে নট আউট থেকে মাঠ ছাড়েন হার্দিক।

হায়দরাবাদের সামনে ১৬৩ রানের টার্গেট রাখে টাইটান্সরা। রান তাড়া করতে নেমে শুরুর তিন ওভার একেবারেই ঝুঁকি না নিয়ে শ্লথগতিতে খেলেন উইলিয়ামসন-অভিষেকরা। তবে পাওয়ার প্লে-র শেষ ২ ওভারে ওপেনিং জুটি শুধু চার আর ছয়ের বন্যা বইয়ে দেন। ৬ ওভার শেষে অরেঞ্জ আর্মির স্কোর দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৪২। সামি-হার্দিকরা প্রথম ৩ ওভারে বেশ আটোসাঁটো বোলিং করেন। তবে উইকেটের খোঁজে থাকা গুজরাতকে বেশ খানিকটা অপেক্ষা করতে হয়। নবম ওভারে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে রশিদ প্রথম হাসি ফোটান টাইটান্সদের মুখে। আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা অভিষেক শর্মাকে ফেরান আফগান তারকা। ৩২ বলে ৪২ রান করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন অভিষেক। ৬টি ছক্কা ছিল অভিষেকের ইনিংসে।

অভিষেক ফিরলে উইলিয়ামসনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রাহুল ত্রিপাঠী। ভালো ছন্দেই দেখা যাচ্ছিল নাইট প্রাক্তনীকে। ১৪তম ওভারের প্রথম বলেই দুর্দান্ত একটি ছক্কা মারেন রাহুল ত্রিপাঠি। কিন্তু তার পরেই কাফ মাসেলের চোটের জন্য রাহুলকে অস্বস্তিতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে মাঠে ফিজিও আসে। কিন্তু ঝুঁকি না নিয়ে ১১ বলে ১৭ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তাঁর পরিবর্তে ক্রিজে আসেন ক্যারিবিয়ান তারকা নিকোলাস পুরান। উইকেটের খোঁজে বোলিংয়ে পরিবর্তন আনেন হার্দিক। এবং হায়দরাবাদের ক্যাপ্টেন উইলিয়ামসনের উইকেট অবশেষে তুলে নেন গুজরাতের ক্যাপ্টেন হার্দিক। ৪৬ বলে ৫৭ রান করে মাঠ ছেড়ে যান কেন উইলিয়ামসন। পুরানও আজ ছন্দে ছিলেন। শেষ বেলায় এইডেন মার্করামের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন নিকোলাস পুরান। চতুর্থ উইকেটে ১৮ বলে উঠেছে ৩৯ রান। ৮ বলে ১২ রানে নট আউট থাকেন মার্করাম এবং পুরান ১৮ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন। ৫ বল বাকি থাকতেই নিজামের শহরের দল নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ করে ফেলল। ৮ উইকেটে জয়ী উইলিয়ামসনরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: গুজরাত ১৬২-৭ (হার্দিক পান্ডিয়া ৫০*, অভিনব মনোহর ৩৫, ম্যাথু ওয়েড ১৯, ভুবনেশ্বর কুমার ২-৩৭, টি নটরাজন ২-৩৪)। হায়দরাবাদ ১৬৮-২ (কেন উইলিয়ামসন ৫৭, অভিষেক শর্মা ৪২, নিকোলাস পুরান ৩৪*, হার্দিক পান্ডিয়া ১-২৭, রশিদ খান ১-২৮)।