Mohammed Habib: বড়ে মিঁঞার মৃত্যুতে ময়দানের দিকপালদের মুখে একটাই কথা, ‘শৃঙ্খলা’

TV9 Bangla Digital | Edited By: দীপঙ্কর ঘোষাল

Aug 15, 2023 | 10:21 PM

Kolkata Football: মহম্মদ হাবিব প্রসঙ্গে বারবার উঠে আসছে শৃঙ্খলার কথা। তাঁর সমসাময়িক কিংবা পরবর্তী প্রজন্ম, বড়ে মিঁঞার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ময়দানের দিকপালরা।

Mohammed Habib: বড়ে মিঁঞার মৃত্যুতে ময়দানের দিকপালদের মুখে একটাই কথা, শৃঙ্খলা
Image Credit source: twitter

Follow Us

সুদূর হায়দরাবাদ থেকে এসেছিলেন। কিন্তু মহম্মদ হাবিব অজান্তেই যেন কলকাতার হয়ে গিয়েছিলেন। ময়দানের প্রিয় মানুষ। যতক্ষণ খেলার মধ্যে থাকতেন, মাঠ কামড়ে পরে থাকতেন। কিন্তু সকলের কাছে হাবিবদার ‘শৃঙ্খলার জীবন’ ছিল অন্যতম আলোচনার বিষয়। কার্যত প্রত্যেকের মুখেই মহম্মদ হাবিব প্রসঙ্গে বারবার উঠে আসছে শৃঙ্খলার কথা। তাঁর সমসাময়িক কিংবা পরবর্তী প্রজন্ম, বড়ে মিঁঞার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ময়দানের দিকপালরা। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।

প্রাক্তন ফুটবলার প্রশান্ত ব্যানার্জি বলছেন, ‘অবশ্যই ময়দানের বিরাট ক্ষতি। হাবিবদার ফুটবল কেরিয়ার নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। হাবিবদা ছিলেন ময়দানে অভিভাবকের মতো। কী ভাবে কেরিয়ার তৈরি করতে হয়, সেটা হাবিবদা দেখিয়েছিলেন। কলকাতায় খেলতে এসে চাকরি ছেড়েছিলেন। কারণ, চাকরি করলে খেলার ক্ষতি হয়ে যাবে। চাকরি পেয়েও করেননি। সব থেকে বড় বিষয়, খুবই শৃঙ্খল জীবন যাপন করত। ৯টা বাজলেই তাঁর ঘরের লাইট নিভে যেত। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্র্যাক্টিসে নেমে পড়ত। শৃঙ্খলা মানুষকে কোন জায়গায় নিয়ে যেতে পারে, সেটা হাবিবদাকে দেখে শিক্ষনীয়। আরও একটা বড় দিক, সব প্রতিপক্ষকে সমান নজরে দেখত এবং একই তাগিদ নিয়ে খেলত। বড় ম্যাচও ওর কাছে তাই ছিল। কোনও টিম কিংবা প্লেয়ারকে ভয় পায়নি। জুনিয়রদের দারুণ গাইড করত। আমার দুর্ভাগ্য, কেরিয়ারে শুধু ওর বিরুদ্ধেই খেলেছি, একসঙ্গে খেলার সুযোগ পাইনি।’

ভাস্কর গাঙ্গুলী, ‘এত বড় প্লেয়ার এবং একজন ভালো মানুষ চলে গেলেন, ক্ষতি তো অবশ্যই। আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি, ওনার বিরুদ্ধে যে্মন খেলেছি তেমনই একই দলের খেলারও সুযোগ হয়েছিল। তাঁর হাত ধরে অনেক ফুটবলার উঠে এসেছিল। ভালোবাসতেন, বকতেন, একজন অভিভাবক যেমন হন।’

শ্যাম থাপা, ‘ওর সঙ্গে কাটানো প্রচুর সময় ও স্মৃতি রয়েছে। এক সঙ্গে এত টুর্নামেন্ট খেলেছি। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি। মাঠে পুরো টিমকে ওই তাতাতো। এত সাফল্য পেয়েছি, এতে ওর কৃতিত্ব অনেক। এত সুন্দর বল বাড়িয়েছে। ওই ছিল টিমের লিডার। আমার কাজ ছিল গোল করা। বল তো বাড়িয়েছে ও। হাবিব, সুভাষদের সঙ্গে খেলেই তো শ্যাম থাপা হয়েছি। বাংলার হয়েও একসঙ্গে খেলেছি প্রচুর ম্যাচ।’

গৌতম সরকার বলেন, ‘ও এমন একটা চরিত্র, ওর সম্পর্কে বলা শেষ হবে না। ফুটবলকে কী ভাবে ভালোবাসতে হয়, আপন করে নিতে হয় হাবিবই শিখিয়েছে। মানুষের মৃত্যু তো অবধারিত। কিন্তু কিছু মানুষের মৃত্যু হলেও তারা অমর হয়ে থাকেন। হাবিব তেমনই একজন।’

অলোক মুখার্জি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগেই কৃষ্ণেন্দুর থেকে খবরটা জানতে পারলাম। কোনও মতেই বিশ্বাস হচ্ছে না। একদিন সকলকেই এ ভাবে চলে যেতে হয়। থেকে যায় তাঁর স্মৃতি। হাবিব দাকে কলকাতা কোনও দিনই ভুলতে পারবে না। খেলোয়াড় জীবনে খুব বেশি দিন তাঁকে পাইনি। যতটুকু পেয়েছি, বিশাল প্রাপ্তি। খুবই ভালো বাসতেন। কিছুদিন আগেও যখন মোহনবাগানে এসেছিলেন, দেখেই বলেন-তোমাকে প্রথম বার দেখেই বুঝেছিলাম, বড় ফুটবলার হবে। হায়দরাবাদে অফিস লিগ খেলতে গিয়েও তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা করেছি। বড্ড ভালো বাসতেন।’

কৃষ্ণেন্দু রায় বলেন, ‘হাবিব দার সঙ্গে খেলার সুযোগ হয়নি। তবে সেরা অনুভূতি হয়েছে কিংবদন্তি পেলের ম্যাচটা দেখা। ওই ম্যাচে মাঠে ছিলাম। একদিকে পেলে খেলছেন, অন্যদিকে হাবিব দা। সত্যি বলতে, কোন জন পেলে আর হাবিব দাকে আলাদা করতে পারছিলাম না। হাবিব দা কত বড় মাপের ফুটবলার ছিলেন এ আর নতুন করে বলার নেই। তবে তাঁর যে জীবন যাপনের শৃঙ্খলা, সেটা অনেকের কাছেই প্রেরণা।’

Next Article