Nick Kyrgios: আত্মহত্যাপ্রবণ, নেশায় চুরমার, মানসিক হাসপাতালে ঠাঁই; অজি তারকার অজানা গল্প হঠাৎ প্রকাশ্যে!
খেলার যাঁরা আইকন, আমরা তাঁদের শুধু সাফল্যের কারণে চিনি। কার ঝুলিতে কত রান, কার অ্যাকাউন্টে কত ট্রফি, রেকর্ডে ছয়লাপ কাদের কেরিয়ার --- এই সব নিয়েই যত আলোচনা চলে খেলার দুনিয়ায়। আসলে খেলা আমজনতাকে মোটিভেট করে এই সব গল্প দিয়ে। কিন্তু সাফল্যের আলোয় থাকা মানুষজনের জীবনের কোণে কতটা অন্ধকার লেগে রয়েছে, অনেক সময় খোঁজই রাখি না আমরা।
সিডনি : হার মানুষকে কতটা ধাক্কা দেয়? কেউ কেউ মানতে পারেন না। কেউ কেউ হারের অন্ধকারে ডুবে যান চিরকালের জন্য। এই হার কারও কারও মনে পাকাপাকি ক্ষত রেখে যায়। যে ক্ষত থেকে রক্ত ঝরে অবিরাম। এমন যাঁদের হয়, তাঁরা অনেকক্ষেত্রেই হারিয়ে ফেলেন নিজেদের। আর এই অপ্রত্যাশিত সময়ে মানুষের আত্মহত্যা-প্রবণতাও বেড়ে যেতে পারে। হার ভোলার জন্য নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। অনেক সময় এই তাঁদেরকেই আশ্রয় নিতে হয় মানসিক হাসপাতালে। এমন কত গল্প আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত ঘটছে। এমন কত কাহিনি আমাদের চেনা তারকাদেরও। সম্প্রতি নেটফ্লিক্সের একটি ডকুফিল্মে এক অস্ট্রেলিয়ান (Australia) তারকা মন খুলে তাঁর খারাপ সময়ের কথা শুনিয়েছেন। যে সময়টা ছিল শুধুই অন্ধকার। কী নাম এই তারকার? বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
খেলার যাঁরা আইকন, আমরা তাঁদের শুধু সাফল্যের কারণে চিনি। কার ঝুলিতে কত রান, কার অ্যাকাউন্টে কত ট্রফি, রেকর্ডে ছয়লাপ কাদের কেরিয়ার — এই সব নিয়েই যত আলোচনা চলে খেলার দুনিয়ায়। আসলে খেলা আমজনতাকে মোটিভেট করে এই সব গল্প দিয়ে। কিন্তু সাফল্যের আলোয় থাকা মানুষজনের জীবনের কোণে কতটা অন্ধকার লেগে রয়েছে, অনেক সময় খোঁজই রাখি না আমরা। নিক কির্গিওস তেমনই এক দুরন্ত প্লেয়ার, যাঁকে টেনিস আইকন হিসেবে ধরা হয়। রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদাল, নোভাক জকোভিচদের ঠিক পরবর্তী জায়গাটাই তাঁর। এই নিকের চার বছর আগের গল্প যদি শোনেন, হয়তো চমকে যাবেন। মনে হতেই পারে, চূড়ান্ত সাফল্য না এলে মানুষ কতটা ভেঙে পড়তে পারে।
চার বছর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালের উইম্বলডন ফাইনালে রাফায়েল নাদালের কাছে হেরেছিলেন নিক কির্গিওস। অল ইংল্যান্ড ক্লাবে চূড়ান্ত সাফল্যের জন্য মুখিয়ে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান টেনিস তারকা। প্রতিপক্ষ কে, দেখতে চাননি। হিসেব মেলাতে চেয়েছিলেন ট্রফি জিতে। ভেঙে পড়ার গল্প ওখান থেকেই শুরু। দুরন্ত লড়াই সত্ত্বেও নাদালকে টপকানো সম্ভব হয়নি। তারপর, নাদালের কাছে ওই হারও টপকে যেতে পারছিলেন না নিক কির্গিওস। ফাইনালের পরদিন সকাল এখনও মনে গেঁথে রয়েছে তাঁর। ঘুম থেকে উঠে দেখেছিলেন বাবা বসে রয়েছেন তাঁর বিছানায়। লন্ডনের ওই সকাল তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল সবকিছু। আগের সন্ধেয় নাদালের কাছে হেরেছেন, তখনও মেনে নিতে পারছিলেন না। চোখে মুখে হতাশা আর যন্ত্রণা খেলা করছিল। নিকের বাবা যা দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন। অজি তারকা নিজেই বলেছেন, ‘জীবনে এত চাপ কখনও অনুভব করিনি। শুধু মনে হচ্ছিল বোধহয় আত্মহত্যা করলে ওই হার ভুলতে পারব। তার আগে কোনওদিন এতখানি ভেঙে পড়িনি। এত ম্যাচ খেলেছি, এত বার কোর্টে নেমেছি, জিতেছি-হেরেছি কিন্তু আমাকে এভাবে ভেঙেচুরে দেয়নি কোনও ফলাফল। বাবাকে দেখে মনে হচ্ছিল আমি বোধহয় শেষ হয়ে গিয়েছিল।’
এইরকম হেরে যাওয়া মানুষরা নেশার খাতায় নাম লেখান। আসলে দিন ও রাতের চলন ভোলার জন্য নেশাই হয়ে ওঠে সহজ পথ। নিকও তাই করেছিলেন। আস্তে আস্তে নেশা গ্রাস করে ফেলছিল তাঁকে। হয়ে পড়ছিলেন নির্বান্ধব। দূরে সরে যাচ্ছিলেন পরিবার থেকে। নিজেকে সামলাতে, নিজেকে ফিরে পেতে লন্ডনের মানসিক হাসপাতালে গিয়েছিলেন নিক। তাঁর কথায়, ‘জীবনে এক এক সময় মানুষ সমস্ত ফোকাস রাখে শুধুমাত্র তার প্রত্যাশায়। আর সে যখন হারে তখন সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। আমি নিজেকেই মেনে নিতে পারছিলাম না সেই সময়। বাধ্য হয়েছিলাম লন্ডনের মানসিক হাসপাতালে যেতে।’
নিকের মনোবিদ পর্যন্ত ওই কঠিন সময়ের গল্প শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন কীভাবে হারিয়ে যেতে যেতে আবার নিজের স্বপ্ন জড়ো করা শুরু করেছিলেন টেনিস তারকা। হার মেরুদণ্ড ভেঙে দেয় অনেক সময়। হার অনেক সময় মানতেও শেখায়। সময় লাগলেও নিক ওই হার হজম করতে পেরেছিলেন। তাই কোর্টে ফিরে শোনালেন তাঁর জীবনের অজানা গল্প।