Woman’s Private Photo: প্রাইভেসিকে এক্কেবারে টাটা বাই-বাই করে দিন! কারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আপনার গোপনীয়তার বারোটা বাজাতে তৈরি! প্রযুক্তিকে বাথরুম পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবেন না নিশ্চয়। কিন্তু আপনি না নিয়ে গেলে কী, সে তো নাছোড়বান্দা। আপনার প্রাতঃকৃত্য সারার সময় সে যেন ‘বিন বুলায়ে মেহমান’! প্রতিদিনের মতোই প্রকৃতির ডাকে বাথরুমে গিয়েছিলেন এক যুবতী। কিন্তু তাঁর টয়লেটের ছবিই ফেসবুকে চলে এসেছে। যে ছবি তিনি তোলেনইনি। তাহলে কে তুলল? এক ভ্যাকুম ক্লিনিং রোবটই এই ভয়ঙ্কর কাজটি করে দিয়েছে। হ্যাঁ, সেই রোবট যাঁকে তিনি বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে ঘর সাফাইয়ের জন্য নিয়ে এসেছিলেন। সেই রোবটই কিনা শেষমেশ…
iRobot-এর Roomba J7 ভ্যাকুম ক্লিনারের জন্যই এমনতর বিপদে পড়েছেন যুবতী। যদিও কোম্পানি বলছে, তাঁর তথ্য সুরক্ষিত রয়েছে। তাহলে কী এমন হল? ওই ভ্যাকুম ক্লিনার রোবটের বিটা ভার্সনের কনজ়িউমার টেস্টের ভলান্টিয়ার হিসেবে সাইন আপ করেছিলেন এক যুবতী। iRobot-এর তরফ থেকে বলা হচ্ছে, অংশগ্রহণকারীরা খুব ভাল করেই জানেন এই ধরনের রোবটগুলি কীরকম ডেটা কালেক্ট করে। তার থেকেও বড় কথা হল, এই রোবটগুলিতে ব্রাইট গ্রিন লেবেল রয়েছে, যা বলে দিতে পারে যে, ‘ভিডিয়ো রেকর্ডিং হচ্ছে।’ সংস্থাটি আরও যোগ করে বলছে, “এটা পেইড ইউজারদের উপরে নির্ভর করে, কোন স্পর্শকাতর জায়গায় তাঁরা রোবটটিকে সরিয়ে দেবে, যাতে গোপনীয় মুহূর্তে রোবটটি যেন কোনও ছবি তুলতে না পারে।”
ভ্যাকুম ক্লিনারের দৌলতে টয়লেটে নগ্ন অবস্থায় যুবতীর যে ছবিগুলি উঠেছিল, সেগুলিকে স্কেল AI ল্যাবে পাঠানো হয়। অডিও, ভিডিয়ো লেবেল করা থেকে শুরু করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া এই সব জরুরি কাজের জন্য ল্যাবটি দুনিয়ার বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে কোলাবরেশন করে। এখন এই Roomba যে সব জায়গায় যা যা ছবি তুলেছে, সেগুলির সবই কোনও ক্রমে ফেসবুকের একটি ক্লোজ়ড গ্রুপে চলে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে ঘর, সেই ঘরের আসবাবপত্র, রান্নাঘরের জিনিসপত্র, দেওয়াল এবং ছাদের যাবতীয় ছবি। এই স্ক্রিনশটগুলির মধ্যে একটি ছিল, ল্যাভেন্ডার শার্ট পরিহিত ওই যুবতীয় টয়লেটে বসে থাকার ছবি।
আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে ডেটা সংগ্রহ করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আমাদের জীবনকে আরও আক্রমণাত্মক করে তুলেছে। এগুলি নিছকই কোনও যন্ত্র নয়। তার থেকেও কয়েক ধাপ এগিয়ে ডেটা সংগ্রহের ড্র্যাগনেট বলা যেতে পারে এদের। প্রযুক্তি ছিল, আছে এবং থাকবেও। যত দিন যাবে তত তা আরও উন্নত হবে। আর যত উন্নত হবে, ততই তা মানুষের গোপনীয়তায় আরও বেশি করে আঘাত হানবে। তাই, প্রযুক্তির রাশটা কোথায় টানতে হয় তা একমাত্র মানুষের হাতেই। আপনি বা আপনার যে কোনও তথ্য সরকার দ্বারা সংগৃীহত হলে আপনার আর কিছু করার থারহে না।
তবে কনজ়িউমার টেকনোলজি এবং অনলাইন পরিষেবাগুলি ব্যবহারের সময় আপনাকে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। এআই, রোবট বা এই ধরনের অন্যান্য ডেভেলপড প্রযুক্তিগুলির উপরে মানুষের খুব একটা বেশি হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। পাশাপাশি এই প্রযুক্তিগুলি যাতে আমাদের পেশাদার জীবনকে প্রভাবিত না করে, তা কমানোর জন্যও এদের উপর আরও কড়া নিয়ম প্রয়োগ করা প্রয়োজন। ততক্ষণ পর্যন্ত একটু চোখ কান খুলে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে চলাফেরা করুন। ইন্টারনেট যাই দেখছেন, তাতেই সাইন আপ করা বন্ধ করুন।