Overuse of Smartphones Aging Faster: গ্যাজেটস ছাড়া আমাদের এখন আর এক মুহূর্তও চলে না। 24 ঘণ্টা, 7 দিন স্মার্টফোন থেকে শুরু করে ইয়ারফোন, স্মার্টওয়াচের মতো গ্যাজেটগুলি আমাদের জীবনের সঙ্গে একপ্রকার মিশে গিয়েছে। আট থেকে আশি সবার হাতে কমন গ্যাজেটটার কথা যদি বলি, সেই স্মার্টফোন ছাড়া একটা সেকেন্ড কল্পনা করতে পারেন আপনি? কিন্তু এখন যদি বলি, সেই সর্বক্ষণের সঙ্গী আপনার স্মার্টফোনই আপনাকে বুড়ো করে দেওয়ার মূলে? তাহলে কী ভাববেন? এতদিন যদি না ভেবে থাকেন, তাহলে এবার কিন্তু সময়টা এসে গিয়েছে। অন্তত ভাবা প্র্যাকটিস করার বিষয়টা শুরু করে দিতে হবে। কারণ, সত্যিই স্মার্টফোন আপনার বয়স বাড়িয়ে দিচ্ছে। শুধু বাড়িয়ে দিচ্ছেই নয়, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতদিন যাবৎ আমরা যেমনটা শুনতাম যে, স্মার্টফোন চোখের উপরে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এখন জানা যাচ্ছে, শুধু চোখের উপরে নয়। স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ বা যে কোনও গ্যাজেট আমাদের বার্ধক্য প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করতে পারে।
‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন এজিং’ শীর্ষক জার্নালে প্রকাশিত প্রাণী-মডেল সংক্রান্ত গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে, স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপের মতো গ্যাজেটগুলি থেকে নীল আলোর অত্যধিক এক্সপোজ়ার বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে হু হু করে বাড়িয়ে দিতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওরিগন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণার সহ-লেখক জাডউইগা গিবাল্টোউইচ বলছেন, “টিভি, ল্যাপটপ এবং ফোনের মতো দৈনন্দিন ডিভাইসগুলি থেকে নীল আলোর অত্যধিক এক্সপোজ়ার আমাদের শরীরের বিভিন্ন কোষ— ত্বক, চর্বির কোষ থেকে শুরু করে সংবেদনশীল নিউরন পর্যন্ত সবকিছুর উপরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।” তাঁর কথায়, “আমরাই প্রথম দেখাই যে, সঠিকভাবে কোষের কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট মেটাবোলাইটের মাত্রাগুলি, রাসায়নিকগুলি নীল আলোর সংস্পর্শে এলে Fruit Fly-তে পরিবর্তিত হয়।”
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সব Fruit Flyগুলি আলোর সংস্পর্শে আসে, তারা নিজেদের স্ট্রেস-প্রোটেক্টিভ জিনগুলিকে ‘চালু’ করে। পরবর্তীতে সেগুলিকে দীর্ঘ সময়ের জন্য অন্ধকারে রাখা হয়। বিজ্ঞানীরা লাগাতার দুই সপ্তাহের জন্য নীল আলোর সংস্পর্শে আসা মাছিগুলির মেটাবোলাইটের পরিমাণকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা মাছিগুলির সঙ্গে তুলনা করেছেন, যাতে বোঝা যায় কোন কারণে উচ্চ শক্তির নীল আলো Fruit Flyদের বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করে।
Fruit Flyগুলির মাথার কোষ পরীক্ষা করে গবেষকরা দেখেছেন যে, নীল আলোর সংস্পর্শে আসার পর দুটি সেটে বিপাকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। তাঁরা আবিষ্কার করেছেন যে, গ্লুটামেটের মাত্রা হ্রাস পেয়েছে কিন্তু সাক্সিনেটের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর গবেষকদের এই পর্যবেক্ষণই ইঙ্গিত দেয় যে, মাছিদের কোষগুলি তাদের অপর্যাপ্ত কার্যকারিতার ফলে অকালে মারা গিয়েছিল। পাশাপাশি এখান থেকে তাঁদের আগের আবিষ্কারেরও ব্যাখ্যা মেলে যে, নীল আলো বার্ধক্যের গতি বাড়ায়।
খুব সংক্ষেপে এই গবেষণাটি পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, মাছিগুলির মেটাবোলাইটের কার্যকারিতার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, একটি পদার্থ যা টিস্যু ভেঙে ফেলার জন্য শরীর দ্বারা ব্যবহৃত হয়। নীল আলোর বেশি এক্সপোজ়ার মানুষের মধ্যেও স্ট্রেস হরমোনকে ট্রিগার করতে পারে। এটি কোষগুলির কার্যকারিতাকে ট্রিগার করার মধ্যে দিয়েই আমাদের দ্রুত বয়স্ক করে তোলে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্যাজেট থেকে নীল আলো ঘুমের জন্য দায়ী মেলাটোনিনের উৎপাদনকে দমন করে। সুতরাং, গ্যাজেটের ব্যবহার যদি কমিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে তা আখেরে আপনাকে ঘুমাতে এবং তার মধ্যে দিয়ে ডিজিটাল স্ট্রেইনও কমাতে সাহায্য করবে।