Kohinoor Diamond History: ব্রিটিশদের ‘ভুল’, ফিরবে কোহিনূর?
Facts about British Reign: ১২৫ বছর আগে এই হিরে লন্ডনে নিয়ে আসে ব্রিটিশরা। এরপর এলগিন ডায়মন্ডের কথায় আসি। গ্রিস থেকে চোখ ধাঁধানো এই হিরে চুরি করে আনেন বড়লাট লর্ড এলগিন। অ্যাথেন্স শহরে দেবী এথেনার মন্দিরের দেওয়াল থেকে এই হিরে খুলে এনেছিলেন এলগিন। হিরের বাজারদরের নিরিখে প্রথম পাঁচে থাকবে টিপু সুলতানের আংটি। কোনও এক ব্রিটিশ সেনাপতি যা দেখে মন্তব্য করেছিলেন আংটি নয়, এতো উজ্জ্বল আলোকবৃত্ত।
প্রায় ২০০ বছর ধরে ভারতে অবাধে লুঠপাট চালিয়েছে ব্রিটিশরা। এ নিয়ে আমি আগেই আপনাদের ডিটেলে জানিয়েছি। তবে শুধু ভারত নয়, সমস্ত সাবেক ব্রিটিশ কলোনিতেই একই ব্যাপার। দুনিয়ার অন্যতম সেরা এবং মহার্ঘ্য ৫টা হিরে ব্রিটেনের দখলে। দখলে বলছি কেননা ৫টাই চুরি করা। বিশ্বের সবচেয়ে উজ্জ্বল হিরে বলে মনে করা হয় দ্য গ্রেট স্টার অফ আফ্রিকান ডায়মন্ডকে। ওজন ৫৩০ ক্যারাট। দক্ষিণ আফ্রিকার সম্পত্তি। ১২৫ বছর আগে এই হিরে লন্ডনে নিয়ে আসে ব্রিটিশরা। এরপর এলগিন ডায়মন্ডের কথায় আসি। গ্রিস থেকে চোখ ধাঁধানো এই হিরে চুরি করে আনেন বড়লাট লর্ড এলগিন। অ্যাথেন্স শহরে দেবী এথেনার মন্দিরের দেওয়াল থেকে এই হিরে খুলে এনেছিলেন এলগিন। হিরের বাজারদরের নিরিখে প্রথম পাঁচে থাকবে টিপু সুলতানের আংটি। কোনও এক ব্রিটিশ সেনাপতি যা দেখে মন্তব্য করেছিলেন আংটি নয়, এতো উজ্জ্বল আলোকবৃত্ত। এ জিনিস কেউ কখনও দেখেনি। আর দেখবেও না। ১৭৯৯ সালে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে মৃত্যু হয় টিপুর। তখন তাঁর আঙুল থেকে আংটি খুলে নিয়েছিলেন ব্রিটিশ সেনারা। ১৮০৫ সালে লন্ডনের এক ধনকুবের সেটা কিনে নেন। তখনই দাম পড়ে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার পাউন্ড। এখন এর দাম হতে পারে দেড় হাজার কোটি টাকা। ১৮০০ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধের পর রোসেটা স্টোন চুরি করে ব্রিটিশরা। অনেকের মতে, নিখুঁত কাটিংয়ের নিরিখে রোসেটা এখনও দুনিয়ার অন্যতম দামি হিরে। তবে লুঠপাটের বিষয়টা শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নেই। নাইজেরিয়ার বেনিনের রাজপ্রাসাদ থেকে কয়েক হাজার ব্রোঞ্জের মূর্তি, সোনার থালা-বাসন এমনকি দেওয়ালে বসানো দুর্লভ পাথরও চুরি করেছিল ব্রিটিশরা।
আবার নিউজিল্যান্ডের মাওরি উপজাতিদের মৃতদেহও ওদেশ থেকে নিয়ে আসা হয় ইংল্যান্ডে। মাওরি উপজাতির অভিজাত পুরুষদের মৃত্যুর পর বিশেষ পদ্ধতিতে তাঁদের মাথা সংরক্ষণ করে রাখা হতো। অনেকটা মিশরের মমির মতো। তবে এখানে সংরক্ষণের পদ্ধতিটা একেবারে আলাদা। অন্য মানুষের মাথা থেকে ঘিলু বের করে রাখা হতো। তারপর যে মাথা সংরক্ষণ করা হচ্ছে, তাতে ভাল করে মাখানো হতো। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, এতেই হাজার বছর পরেও ওই মাথায় পচন ধরেনি বা কোনও ক্ষতিও হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরেই এগুলো ফেরত চেয়ে ব্রিটেনের কাছে দাবি জানাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। এমনকি মিশরও তাঁদের দেশ থেকে ব্রিটিশদের চুরি করা মমিগুলো ফেরত পেতে মরিয়া। কমনওয়েলথের সদস্য দেশগুলিও তাদের দেশ থেকে চুরি যাওয়া জিনিস ফিরিয়ে আনতে আটঘাঁট বেঁধে নামছে। ভারতেও কয়েকজন গবেষক দেশের জিনিস দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছেন। যা আমি আগেই বলেছি। ব্রিটিশরা ভারত থেকে কী, কী নিয়ে গিয়েছে, সেই তালিকা অনেক, অনেক লম্বা। তবে এখানে প্রথমেই যে বিশেষ জিনিসটার কথা আসে, সেটা নিয়ে কোনও বিতর্ক থাকতে পারে না। কোহিনুর, কোহিনুর ও শুধুই কোহিনুর। কোহিনুর নিয়ে এর আগেও চাপ দিয়েছে ভারত। লাভ হয়নি। তবে, সম্প্রতি ব্রিটিশদের একটা ভুলই আমাদের হাতে বড় অস্ত্র তুলে দিয়েছে। ২০২৩ সালে টাওয়ার অফ লন্ডনে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সেখানে আরও ১২০টা বিরল সামগ্রীর সঙ্গে কোহিনুরও ছিল। সঙ্গে নোটে লেখা ছিল লাহোর চুক্তির শর্ত হিসাবে ব্রিটিশদের হাতে কোহিনুর তুলে দিয়েছিলেন মহারাজা দলীপ সিং। অথচ ১৯৯৬ সালে ভারতের দাবির প্রেক্ষিতে ঠিক উলটো কথা বলেছিল ব্রিটিশ সরকার। তখন তারা দাবি করেছিল যে ব্রিটেনের রানিকে কোহিনুর উপহার দিয়েছিলেন দলীপ সিং। ভারত যদি নতুন করে কোহিনুর নিয়ে দাবি জানায়, তাহলে হাতে আইনি যুক্তি থাকছে। ব্রিটেনের সরকারি প্রদর্শনীতে ব্রিটিশ সরকারের স্বীকারোক্তি।