Jalpaiguri News: পথ কুকুরের মানবিকতায় স্তম্ভিত মেডিক্যাল পড়ুয়া ছাত্রী
অসুস্থ ডাহুক পাখির ছানাকে সযত্নে মুখে করে এনে সটান মেডিক্যাল কলেজের লেডিস হোস্টেলে ঢুকে গেলো কালু নামে এক পথ কুকুর। এরপর ছানাটিকে এক লেডি ডাক্তারের হেফাজতে রেখে দিয়ে যায়।
কালু ও ডাহুক ছানার গল্প
অসুস্থ ডাহুক পাখির ছানাকে সযত্নে মুখে করে এনে সটান মেডিক্যাল কলেজের লেডিস হোস্টেলে ঢুকে গেলো কালু নামে এক পথ কুকুর। এরপর ছানাটিকে এক লেডি ডাক্তারের হেফাজতে রেখে দিয়ে যায়। পরে ওই লেডি ডাক্তার ছানাটিকে তুলে দেন পরিবেশ কর্মীর হাতে। পথ কুকুরের এহেন মানবিক মুখ দেখে স্তম্ভিত মেডিক্যাল পড়ুয়া ছাত্রীরা।
কালু ও ডাহুক ছানার গল্প এখন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ এলাকার লোকের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সব কিছু জানবার পর কালুর এখন যত্ন আত্তির অভাব হচ্ছেনা।যেই কালুকে দেখে আগে জল ছিটিয়ে তাড়িয়ে দিতো এলাকার মানুষ।এখন তার গল্প শুনবার পর তাকেই এখন আদর করে খাবার দিচ্ছে। সব মিলিয়ে কালু এখন এলাকার হিরো।
আসুন জেনে নিই ঘটনাটি ঠিক কী?
জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের অধীনে থাকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। এর ঠিক উল্টো দিকে রয়েছে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের লেডিস হোস্টেল।রবিবার সকালের দিকে কমন রুমে বসে পড়াশোনা করছিলেন অঙ্কিতা চক্রবর্তী নামে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী। সেইসময় আচমকাই হোস্টেলে ঢুকে যায় কালু। তার পায়ের কাছে ছেড়ে দিয়ে যায় অসুস্থ একটি ডাহুক ছানাকে। অসুস্থ ছানাটি দৌড়ে চলে আসে তার কাছে। এরপর তিনি ছানা টিকে একটি পিচবোর্ডের বাক্সে রেখে চিন্তা করতে থাকেন এর শুশ্রূষা কি ভাবে করবেন। তখন তিনি পরিবেশ কর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরীর ফোন নং যোগাড় করে তাকে ফোন করেন। খবর পেয়ে বিশ্বজিৎ বাবু এসে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।
অঙ্কিতা চক্রবর্তী বলেন আমি কমন রুমে পড়ছিলাম। হঠাৎ ছুটে আসে আমাদের হোস্টেলের কাছে থাকা পথ কুকুরটি। সে মুখে করে পাখির ছানাকে নিয়ে এসে আমার কাছে এনে ছেড়ে দেয়। ছানাটি আমার কাছে ছুটে আসে। কিন্তু পাখির ছানাকে আমি কি ভাবে হোস্টেলে রাখবো। তাই আমি বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরীকে ডেকে দিয়ে দেই। একটি পথ কুকুরের এমন মানবিকতা আমাকে অবাক করে দিয়েছে।
বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী বলেন এই ঘটনা আবার প্রমান করলো পশুদের মধ্যেও মানবিকতা রয়েছে। এখন রাস্তায় কোনও অসুস্থ মানুষ পড়ে থাকলে পথ চলতি মানুষ পাশ কাটিয়ে যায়। একটা কুকুরের এমন উদ্যোগ সত্যি শিক্ষনীয়। আমি ছানা টিকে বাড়িতে নিয়ে এসে শুশ্রূষা শুরু করতে গিয়ে দেখতে পাই তার মুখের কাছে ফোস্কা জাতীয় চিহ্ন রয়েছে। আমার ধারনা ডাহুক ছানার পক্স হয়েছে। কারন আমার বাসায় একটি অসুস্থ ঈগল পাখি রয়েছে। তার শরীরেও এমন চিহ্ন রয়েছে। ঈগল পাখির পক্স হয়েছে। বিষয়টি আমি বনদপ্তর কে জানিয়েছি। আগামীকাল ছানাটিকে পশু হাসপাতালে দেখিয়ে তারপর বনদপ্তরের হাতে তুলে দেব।