AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে বিজেপির মুখ কে? তৃণমূলে ঢুকেই বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস সৌমিত্র-পত্নীর

তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা

মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে বিজেপির মুখ কে? তৃণমূলে ঢুকেই বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস সৌমিত্র-পত্নীর
তৃণমূলে যোগ দিলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা
| Edited By: | Updated on: Dec 21, 2020 | 3:00 PM
Share

কলকাতা: বিজেপির কাছ থেকে তাঁর পাওয়া না পাওয়া, ক্ষোভ, গ্লানি- সব কিছু ধরা পড়েছে তাঁর প্রতিটা কথায়।  বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা (Sujata Khan Mondal) যোগ দিলেন তৃণমূলে।  কুণাল ঘোষ আর সৌগত রায়কে পাশে নিয়ে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন তিনি। দলত্যাগের পরই উগরে দেন প্রাক্তন দল গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশে মনের ক্ষোভ। তবে তার সিংহভাগই জুড়ে ছিল শুভেন্দু প্রসঙ্গ। সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে ফাঁস করলেন একুশের লড়াইয়ে বিজেপির মুখ কে হবে, সে তথ্য।

ছেড়ে আসা দল সম্পর্কে নানা কথা বলতে বলতেই সুজাতা প্রকাশ্যে বলে ফেললেন, “৬ জন মুখ্যমন্ত্রীর তালিকা , ১৩ জন উপ মুখ্যমন্ত্রীর তালিকা বিজেপির কাছে।”  বিজেপির মুখ কে? সে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ” আমাদের বারবার দেখাতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকেই। পরিবারের মুখিয়াই ঠিক নেই, তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্বের লোক দেখাচ্ছে বিজেপি।”

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই অবশ্য শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শুরু করেছিলেন তিনি। বলেন, “শুভেন্দু সুযোগসন্ধানী। আমি ওঁকে নেতা বলে মনেই করি না। দশ বছর তৃণমূল সরকারে থেকে সেখান থেকে সব সুবিধা নিয়ে এখন বিজেপিতে যোগ দিলেন।”

প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক মাস ধরেই রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছিল সৌমিত্রর সঙ্গে তাঁর স্ত্রী বনিবনা হচ্ছিল না। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও মতের অমিল ছিল। সেইদিক থেকেই সুজাতার দলবদলের সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এখনই সৌমিত্রর এবিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

সোমবার বেলা একটা নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে সুজাতা মণ্ডল খাঁ-র হাতে দলের পতাকা তুলে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্নের আগেই সুজাতা বলতে থাকেন বিজেপির প্রতি নিজের ক্ষোভের কথা। বললেন, “এতটা বিজেপির জন্য প্রাণপাত করল যে মেয়েটি, কট্টর বিজেপি মেয়েটি হঠাৎ কেন এই চ্যালেঞ্জ নিল? সেটা একবার ভেবে দেখবার রয়েছে।” নিজেই আবার সে প্রশ্নের উত্তর দেন। বলেন, ” সবকিছুর পরেই আমরা চাই সম্মান পেতে। দলিত সম্প্রদায়ের মেয়ে হয়ে, তফশিলির মেয়ে হয়ে বিষ্ণুপুরের মানুষের যে ভালবাসা পেয়েছিথেকেই তাই আমার প্রাপ্তি।”

কথা প্রসঙ্গে ফের একবার শুভেন্দুকে খোঁচা তাঁর। বললেন, “সুযোগসন্ধানীদের মতো ঝুলিয়ে রাখিনি। দলের দুঃসময়ে দল থেকে বেরিয়ে যাব বা সুসময়ে অন্য দলে ঝাঁপ দেব এমন নই আমি।” তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই শুভেন্দু প্রসঙ্গে তাঁর গলায় ধরা পড়েছে ক্ষোভের সুর। বেলা যত বেড়েছে, ক্ষোভ যেন উগরে এসেছে আরও বেশি! সাংবাদিক বৈঠকে আরও একবার শুভেন্দু প্রসঙ্গ। নাম না করেই অধিকারীকে তুলনা করলেন ‘পচা আলু’র সঙ্গে। বললেন, “একটা আলু যদি পচা হয়, তাহলে বাকি আলুও পচে যায়। সেরকম তৃণমূলে যারা পচা আলু, বিজেপিতে গিয়ে কি তারা সাফ হয়ে যাবে? এমনটা আবার হয় নাকি!”

আরও পড়ুন- ‘সুজাতা তোমাকে ডিভোর্স নোটিস পাঠাচ্ছি’, সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ করলেন সৌমিত্র খাঁ

শুভেন্দুর বিজেপি যোগ নিয়ে প্রথম থেকেই দলের একস্তরের মধ্যে ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। আশঙ্কাও ছিল অনেকের। শুভেন্দুকে তাই মেদিনীপুরের সভা থেকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “খবরদারিও করব না, মাতব্বরিও করব না। আমাকে বিশ্বাস করুন।” শুভেন্দুর এই কথা যে সুজাতাকে আশ্বস্ত করতে পারেনি, তা এদিন প্রমাণ মিলল সৌমিত্র অর্ধাঙ্গিনীর গলাতেই। বললেন, “উড়ে এসে জুড়ে বসা ধান্দাবাজরা টপমোস্ট হয়ে যাচ্ছে।”

আরও পড়ুন: ‘ডবল ডিজিট পেরবে না বিজেপি, সেভ করে রাখুন আমার টুইট’, প্রশান্ত হুঙ্কার

বিজেপি-র প্রতি ক্ষোভ, না পাওয়ার গ্লানি এখানেই শেষ হয়নি তাঁর। বলতে থাকেন, “যে দলে প্রতিনিয়ত অন্য দল থেকে পচা আলু এসে যোগ দিচ্ছে, সেই দলের আর কী হবে!” শুভেন্দুকে বললেন, ‘দুষ্টু গরুও।’ বললেন, ‘দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল।’ রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তবে কি শুভেন্দুর প্রবেশেই তাঁর দল ছাড়া? দলে গুরুত্বহীন বলে মনে করতে শুরু করেছিলেন সুজাতা? নাকি এটা সৌমিত্র খাঁ নয়া ভোট-স্ট্র্যাটেজি!