বাঁকুড়া: জল্পনা চলছিল, দলবদল করতে পারেন তিনি। তিনি অর্থাত্ শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি (Chandana Bauri)। TV9 বাংলা ডিজিটালের প্রতিনিধিকে তিনি ফোন করে স্পষ্টই জানান তিনি দলবদল করছেন না। সোমবার, শোনা যায়, দলবদল করে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন চন্দনা।
নিতান্ত সাদামাটা ছাপোষা বলেই বিধায়ক হয়েও তিনি মন জয় করেছিলেন অগুনতি মানুষের। সম্প্রতি, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণেই চর্চায় এসেছেন শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক। সোমবার সকালে শোনা যায়, তিনি দলবদল করতে চলেছেন। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন চন্দনা।শুধু তাই নয়, এদিনই বিষ্ণুপুরে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করতে চলছেন শুভেন্দু অধিকারী। কেন এই তড়িঘড়ি বৈঠক? সংশ্লিষ্ট মহলের অনুমান, ‘বেসুর’ বিধায়কদের ধরে রাখতেই সংগঠনে নজর দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। এই ‘বেসুর’ বিধায়কদের তালিকায় নাম উঠে আসে চন্দনারও। কিন্তু, সেই জল্পনায় কি যতিচ্ছেদ? যদিও খোদ বিধায়ক চন্দনা TV9 বাংলা ডিজিটালকে বলেন, “আমি কোনওভাবেই দল বদল করছি না। কোনও পরিস্থিতিতেই দলবদলের সিদ্ধান্ত নিইনি। এই ধরনের খবর কেন সম্প্রচার করা হবে! এই ধরনের ভুল খবর সম্প্রচার অনভিপ্রেত।”
এদিকে আজই বিষ্ণুপুরে বৈঠকে যাচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধায়কদের সঙ্গে এই তড়িঘড়ি বৈঠকের কারণ কী? সে প্রসঙ্গে চন্দনা বলেন, “শুভেন্দুবাবু আসছেন তা দলের কর্মসূচির জন্য। এর সঙ্গে দলবদলের কোনও সম্পর্ক নেই। শুভেন্দুবাবু কাজে আসতেই পারেন।” তবে, কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল, তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাঁকে দলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই কোনও উত্তর দেননি শালতোড়ার বিধায়ক। একটি বাক্যে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন তিনি। আপাতত কোনওভাবেই দলবদল করছেন না চন্দনা।
বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর তাঁকে ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন খোদ শুভেন্দু অধিকারী। বাঁকুড়া বিজেপির সাংগঠনিক হাল-হকিকতে নজর দিতে সোমবারই বিষ্ণুপুরে আসছেন শুভেন্দু। এদিনই তাঁর বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের অনুমান ভাঙন রুখতেই রাজ্য বিজেপির তড়িঘড়ি এই পদক্ষেপ।
চন্দনা বাউরিকে তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে, সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন অধিকারী পুত্র। নন্দীগ্রামের বিধায়কের স্পষ্ট অভিযোগ, “চন্দনা বাউরিকে পুলিশ সরাসরি তৃণমূলে যোগ দিতে বলেছে। কিন্তু ভাঙা ঘরে থাকা তফসিলি পরিবারের মহিলা চন্দনা বাউরি আত্মসমর্পণ করেননি। তিনি আগেও বিজেপির সঙ্গে ছিলেন, এখনও বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন। চন্দনাকে পুলিশ সরাসরি বলেছে ‘৬ মাস জেল খাটুন।’ বিজেপির হাজার হাজার কর্মীরা জেলে আছেন কারণ তাঁরা এই মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বিজেপির ঝাণ্ডা ধরেছেন।”
একের পর এক এভাবে বিধায়কদের ‘বেসুর’ হওয়ার নেপথ্য় কি কেবল শাসক শিবিরের ‘চাপ’-ই রয়েছে নাকি, এর পেছনে দায়ী বিজেপির সাংগঠনিক পরিকাঠামো? উত্তর খুঁজতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বকে। বারবার বিধায়কদের সঙ্গে এভাবে বৈঠক করার কারণ যে কিছুটা হলেও দলের অন্দরের রুটম্যাপ তৈরির প্রস্তুতি তাও মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। আরও পড়ুন: Exclusive Manoj Jha: মমতা বড় নাম, তবে মুখের রাজনীতি চান না আরজেডি-র ‘ভাইরাল সাংসদ’ মনোজ ঝাঁ