বোলপুর: বিশ্বভারতীর (Visva-Bhrati) পাঠভবনে (Patha Bhavan) ‘অনৈতিক’ ভাবে অধ্যক্ষের (Principal) পদে বসে থাকার কারণে সরিয়ে দেওয়া হল বধিরূপা সিনহাকে। শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই খবর জানিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এর আগে বধিরূপা দেবীকে শো-কজ় করা হয়। তাঁর নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলায় এমন পদক্ষেপ হয়েছিল। এবার বিশ্বভারতী পাঠভবনের অধ্যক্ষের পদ থেকে বধিরূপা সিনহাকে অপসারণের নির্দেশ দিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বভারতীর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য প্রথম অভিযোগ তুলেছিলেন যে বিশ্বভারতীর পাঠ ভবনের অধ্যক্ষ বধিরূপা সিনহা কে অনৈতিক ভাবে অধ্যক্ষের পদে নিয়োগ করা হয়েছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সাসপেন্ড করা হয় অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে। আবার তাঁরই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবার সরানো হল পাঠভবনের অধ্যক্ষ বধিরূপা সিনহাকেও!
শনিবার বিশ্বভারতীয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে একটি নোটিস দিয়ে জানানো হয় বিশ্বভারতী পাঠভবনের অধ্যক্ষ বধিরূপা সিনহাকে তাঁর পদ থেকে সরানো হল। তাঁর জায়গায় অধ্যক্ষের দায়িত্ব আনা হচ্ছে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক সুরজিৎ সেনকে। বিশ্বভারতী তরফে এও জানা গিয়েছে, সুদীপ্ত ভট্টাচার্য অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাঠভবনের অধ্যক্ষ বধিরূপা সিনহার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির নির্দেশে কর্মসমিতির বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর অধ্যক্ষের পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল বধিরূপা সিনহাকে।
যদিও কোন অনিয়ম বা ঠিক কোন কারণে অক্ষ্যক্ষের পদ থেকে বধিরূরপা দেবীকে সরানো হল সে বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এদিকে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফা (VBUFA) তরফে দাবি, ঠিক কেন বধিরুপা সিনহাকে সরানো হল তা স্পষ্ট করুক বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষকে সরানোর মতো এত বড় সিদ্ধান্ত বিশ্বভারতীতে ইসি মিটিং না করেই কী ভাবে নেওয়া হল, সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংগঠন।
উল্লেখ্য, বধিরূপা দেবীর নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ করে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফার সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ ছিল, ২০০৫ সালে পাঠভবনের অধ্যক্ষ পদে বধিরূপা দেবীর যে নিয়োগ হয়েছিল তা নিয়ম মেনে হয়নি। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ জানাচ্ছেন, সম্প্রতি বেশ কিছু বিষয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরোধিতা করেন বধিরূপা সিনহা। তার পর শনিবার তাঁর অপসারণে সরগরম বিশ্বভারতী।
যদিও এই বিষয় নিয়ে বধিরুপা সিনহার সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে হলেও তাঁর কাছে পৌঁছনো যাইনি। আবার একই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যও কোন কথা বলতে চাননি। অন্যদিকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরাও এই বিষয়ে আলাদা করে কিছুই বলতে চান না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন।