সকালেও ছিলেন, আচমকা বেপাত্তা! কালো পতাকা দেখে শীতলকুচিতে পৌঁছেও নিহতের বাড়ির লোকের দেখা পেলেন না রাজ্যপাল
কোচবিহারের (Cooch Behar) হিংসা কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)।
কোচবিহার: কোচবিহারের (Cooch Behar) হিংসা কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। বৃহস্পতিবার মাথাভাঙা যান রাজ্যপাল। সেখানে তাঁকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের পরিজনরা। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তাঁর কাছে ক্ষোভ উগরে দেন আক্রান্ত পরিবারগুলো। রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর বলে দাবি রাজ্যপালের। তবে লক্ষ্যণীয়ভাবে নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে গিয়ে দেখা পেলেন না কারোরই। সকালেও ছিলেন, হঠাৎ গেলেন কোথায়? প্রশ্ন তুলছেন নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারের প্রতিবেশীরাই।
শুরু থেকেই রাজ্যপালের কোচবিহার সফর ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। বৃহস্পতিবার নিশীথ প্রামাণিককে সঙ্গে বিয়ে কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। মাথাভাঙার বেশ কিছু জায়গা পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল। উল্লেখ্য, যে রাস্তা দিয়ে রাজ্যপালের কনভয় যায়, তারই দুপাশে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর, হামলার নিদর্শন স্পষ্ট ছিল। একটি এলাকায় পৌঁছতেই দেখা যায়, রীতিমতো রাজ্যপালের পায়ের কাছে পড়ে যান আক্রান্ত পরিবারের এক মহিলা। বিচার চেয়ে কাঁদতে থাকেন তিনি। আরও এক মহিলাকে রাজ্যপালের পায়ে পড়তে দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত অন্যান্য মহিলা আধিকারিকরা দু’জনকে সরিয়ে নেন। এলাকায় বিপর্যস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
শীতলকুচি যাওয়ার পথে বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যপাল। দিনহাটা শহরে বিজেপি নেতার ভাঙা বাড়ি দেখে রাস্তায় ওঠার মুখেই কিছু যুবক রাজ্যপালকে কালো পতাকা দেখান। এরপর গাড়ি থেকে নেমে পড়েন রাজ্যপাল। পুলিশকে ডেকে জানতে চান, ‘এসব কী হচ্ছে।’ দিনহাটার এসডিপিওকে ধমক দেন। রাজ্যপালের রোষের মুখে পরে দিনহাটা থানার আইসি স্বয়ং। তাঁকেও ডেকেও রাজ্যপাল জানতে চান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমন কেন দিনহাটা জুড়ে? এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর জেলা সফরে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর কথায়, অপমানিত, আহত বোধ করছেন তিনি। কোনও চাপের কাছে মাথা নত নয় বলে সাংবাদিকদের সামনে স্পষ্ট করে রাজ্য সরকারকে বার্তা দেন রাজ্যপাল।
শীতলকুচিতে মূলত ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার বিজেপি কর্মী মানিক মৈত্রের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যপাল। কিন্তু লক্ষ্যণীয়ভাবে তাঁরা কেউই বাড়িতে ছিলেন না। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সকালেও তাঁদের প্রত্যেককেই বাড়িতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু আচমকাই কোথায় বেপাত্তা হয়ে যান সকলের অলক্ষ্যে, তা কেউই ঠাওর করতে পারছেন না। মানিক মৈত্রের পরিবারের সদস্যদের হঠাৎ বেপাত্তা হওয়ার খবরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক ধোঁয়াশা।