মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান জানেন না, তাই প্রধান বিচারপতিকে চিঠি: সায়ন্তন
কৃষ্ণনগরের বিধায়ককে সায়ন্তনের (Sayantan Basu) কটাক্ষ, "তাহলে কি মুকুল রায়ের সঙ্গে প্রেতাত্মাদের যোগাযোগ হচ্ছে?''
শিলিগুড়ি: “মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান জানেন না, তাই প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছেন।” বিচারপতির কৌশিক চন্দের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে পাঠানো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) চিঠি প্রসঙ্গে কটাক্ষ সায়ন্তন বসুর (Sayantan Basu)।
শুক্রবার বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক বলেন, “আমিও গুনে গুনে বহু নাম বলতে পারি যাঁরা আইনজীবী থাকাকালীন কংগ্রেসের হয়ে মামলা লড়লেও পরে বিচারপতি হয়েছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী যে বিচারপতির প্রসঙ্গে বলছেন তিনি বিজেপির কেউ ছিলেন না।”
প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর জয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর করা মামলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, বিচারপতি খোদ বিজেপির ‘সক্রিয় কর্মী’ ছিলেন। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালকে চিঠিও পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী। এ নিয়ে সায়ন্তনের দাবি, বিচারপতি চন্দ কখনওই সক্রিয় বিজেপি কর্মী ছিলেন না। তিনি বিজেপির হয়ে কয়েকটা মামলা লড়েছেন মাত্র। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী যে বিচারপতির প্রসঙ্গে বলছেন তিনি বিজেপির কেউ ছিলেন না। তবে বিজেপির হয়ে আইনজীবী হিসাবে মামলা লড়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান জানেন না, তাই প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছেন।”
অন্যদিকে এদিন কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে নিয়ে দলের অন্দরে বিক্ষোভের দায় তৃণমূলের ঘাড়ে ঠেলেন সায়ন্তন। তাঁর দাবি, এসব তাঁর দলের কারও কাজ না। সবই ‘তৃণমূলের ফন্দিফিকির’। পাশাপাশি মুকুল রায়ের বিজেপি ত্যাগের পর রাজ্যজুড়ে বিজেপি নেতাকর্মিদের তৃণমূলে যোগদানের হিড়িককে কার্যত অগ্রাহ্য করেছেন সায়ন্তন। তাঁর মন্তব্য, “মুকুল রায়ের চেয়ে বিজেপিতে বড় নেতা ছিলেন তপন শিকদার। তপন শিকদার রাজ্য ও কেন্দ্রের নেতা ছিলেন। তিনি দু’বছরের জন্য বিজেপি ছাড়েন। তখন কেউ যাননি তার সঙ্গে। তাহলে মুকুল রায়ের সঙ্গে যাবেন কেন? যারা বলছেন, বিধায়কেরা মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তাঁরা নাম বলুন। নাম কেউ বলছেন না।” বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কৃষ্ণনগরের বিধায়ককে সায়ন্তনের কটাক্ষ, “তাহলে কি মুকুল রায়ের সঙ্গে প্রেতাত্মাদের যোগাযোগ হচ্ছে?”
এদিকে সায়ন্তন বসুকে পালটা আক্রমণ করেছেন জেলা তৃণমূল মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত। তিনি বলেন, “আইনজীবী থাকাকালীন ওই বিচারপতি (বিচারপতি কৌশিক চন্দ) বিজেপির হয়ে মামলা লড়েছেন। তাই বিচারপতি হিসেবে তিনি ওই সম্পর্কিত মামলা শুনবেন না এটাই নৈতিকতা। তাই দলের সিদ্ধান্তেই প্রধান বিচারপতিকে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিজেপি নেতারা আগে আইন, নৈতিকতা এবং শিষ্টাচার জানুন।”