শিলিগুড়ি: ইচ্ছামতো প্রাইভেটে প্র্যাক্টিস, অথচ আসেন না মেডিক্যালে। এমন অভিযোগকে সামনে রেখেই ২২ জন চিকিৎসকের বেতন আটকে দিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। বারবার বলা হলেও কাজে ইচ্ছামত অনুপস্থিতি, প্রাইভেট প্র্যাক্টিস বা যখন তখন কলকাতায় চলে যাওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ২২ জন সিনিয়র চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
দীর্ঘদিন ধরেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক দল চিকিৎসক খামখেয়ালি ভাবে কাজ করছেন। ইচ্ছামত আসছেন মেডিক্যালে, ছুটি নিচ্ছেন, বাইরে প্র্যাক্টিস করছেন বলে অভিযোগ উঠছিল। এমনও অভিযোগ, মেডিক্যাল কলেজে ক্লাস নেওয়া এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডে সিনিয়র এই চিকিৎসকদের দায়িত্ব থাকলেও তাঁদের অনেকেই তা যথাযথভাবে পালন করেন না বলে অভিযোগ।
কলকাতা থেকে বদলি হয়ে আসা বহু চিকিৎসক কার্যত কাজে যোগ দিলেও সপ্তাহের অধিকাংশ সময় কলকাতাতেই থাকেন বলেও অভিযোগ। সপ্তাহে একদিন এসে রেজিস্ট্রারে সই করে চলে যান বলে নজর করেছে কর্তৃপক্ষ। বারবার বলেও এসবে রাশ টানা যাচ্ছে না বলে খবর। এবার সেই অভিযোগ সামনে রেখে অন্তত ২২ জন প্রফেসর র্যাঙ্কের চিকিৎসকের বেতন আটকে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
এ প্রসঙ্গে প্রিন্সিপাল ইন্দ্রজিৎ সাহা জানান, “কাউকে ছাড়া হবে না। কেউ দায়িত্বে গাফিলতি করলে ব্যবস্থা হবেই। প্রতি মাসে এবার থেকে রিভিউ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাপ্ত ছুটির বাইরে কেউ অনুপস্থিত থাকলেও কেটে নেওয়া হবে বেতন। তবে এর বেশি প্রকাশ্যে কিছু বলব না।”
অন্যদিকে মেডিক্যালের ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, “আমাদের মেডিক্যালের প্রতি আরো দায়বদ্ধ হতে হবে এটুকু বলতে পারি। কেউ যদি মনে করেন মেডিক্যালের সঙ্গে যুক্ত থেকে সুবিধা নেবেন, কিন্তু কাজ করবেন না, ইচ্ছামত অনুপস্থিত থাকবেন তা তো হবে না। তাছাড়া কেউ মনে করবেন না তিনি না থাকলে চলবে না। একদল লোক কাজ করছেন। এক দল করছেন না। এমন চললে যাঁরা কাজ করছেন তাঁদের মধ্যেও ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে।”
এদিকে চিকিৎসকদের হাসপাতালে অনুপস্থিত থেকে বাইরে প্র্যাক্টিসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে স্থানীয় সুশ্রুত নগর নাগরিক মঞ্চও। মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক দিবাকর সরকার বলেন, “ডাক্তার মেডিক্যালে অনুপস্থিত থাকলেও দেখবেন আশেপাশে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করছেন। দেখার কেউ নাই। বারবার বলেও লাভ হচ্ছে না। আমরা পরিষেবা চাইছি। ডেপুটেশন দিয়েছি। পরিস্থিতি ভাল না হলে লাগাতার আন্দোলন হবে।”