দাসপুর: উচ্চমাধ্যমিকে রেজাল্ট বের হতেই খুশির হাওয়া শিক্ষা মহলে। প্রথম দশের মেধা তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন ২৭২ জন। এ রেকর্ড নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন সকলে। এদিকে উচ্চামাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের (Higher Secondary Examinee) আলোর ছাটায় যেখানে খুশির হাওয়া গোটা রাজ্যজুড়ে সেখানে আচমকাই দেখা গেল বিষাদের মেঘ। জীবনের বড় পরীক্ষায় ভালো ফল করলেও জীবনযুদ্ধে হার মানলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore) দাসপুরের পড়ুয়া। মুম্বইয়ে বিমান থেকে নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যু দাসপুরের ব্রাহ্মণবসান উচ্চ বিদ্যালয়ের এবারের উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী আকাশ মন্ডলের। এদিকে এবারের উচ্চামাধ্যমিকে চোখ ধাঁধানো ফল করেছিলেন তিনি। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৪৭৭।
দাসপুর থানার ব্রাহ্মণবসান গ্রামের স্বপন মন্ডলের ছেলে বছর আঠারোর আকাশ মন্ডল ব্রাহ্মণবসান উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। এলাকায় মেধাবী ছাত্র বলেই পরিচিতি ছিল তাঁর। বাবা স্বপন মন্ডল পেসায় স্বর্ণকার। এদিকে ছোট থেকেই আকাশের ইচ্ছে ছিল মুম্বই শহর ঘুরে দেখার।পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে,বুধবার ৮ জুন মামা শুভেন্দু মণ্ডলের সঙ্গে উড়োজাহাজ এ মুম্বইয় পাড়ি আকাশ। রাত প্রায় ২টো নাগাদ মুম্বইয়ে মামার বাড়ি পৌঁছেই শরীর খারাপ হতে শুরু করে করে তাঁর। শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে স্থানীয় বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হলেও আর শেষ রক্ষা হয়নি। হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই ভোর প্রায় সাড়ে ৩টে নাগাদ আকাশের মৃত্যু হয় বলে জানা যায়।
এদিকে উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরোতে তখন বাকি আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার। কিন্তু, তার আগেই শুক্রবার ভোর রাতে দাসপুরের ব্রাহ্মণবসানে আকাশের মৃতদেহ পৌঁছয়। গোটা গ্রামে নামে শোকের ছায়া। যে ছেলের রেজাল্ট হাতে হাসি মুখে বাড়ির ফেরার কথা ছিল, তাঁর এই পরিণতি দেখে শোকে পাথর হয়ে যায় গোটা পরিবার। ব্রাহ্মণ বসান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশিস মাইতি বলেন, “আকাশ খুবই ভালো ছেল ছিল। পরীক্ষায় ৪৭৭ নম্বর পেলেও সে জানতে পারল না৷ পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলাতেও খুব পারদর্শী ছিল”। সূত্রের খবর, হার্ট ব্লক হয়েই আকাশের মৃত্যু হয়েছে। কিন্ত, পাড়ার মেধাবী ছেলেটির এই অকাল প্রয়ান মেনে নিতে পারছেন না কেউই।