আরামবাগ: আলুর গাছ বসানো হয়েছে। কিন্তু ফলন নেই। বিঘার পর বিঘা জমিতে একই দশা। এমনই দৃশ্য ধরা পড়ল আরামবাগ ব্লকের মলয়পুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব কেশবপুরে। আর এমন ঘটনায় কার্যত মাথায় হাত পড়েছে আলু চাষিদের। এক চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটছে তাঁদের। আগে যেখানে কাঠা প্রতি ৪-৫ বস্তা আলু (প্রায় ৫০ কেজি) চাষ হত, এখন সেখানে এক বস্তাও আলু উঠছে না। আলু তোলার মুখে এমন ফলন হলে, আলুর দাম আরও চড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। কিন্তু কেন আলু চাষে এমন দুর্দশা? চাষিরা বলছেন, রাসায়নিক সারের গোলমালের জন্যই নাকি ফলন হচ্ছে না। তাঁদের বক্তব্য, ওই একই বীজে অন্য সার দিয়ে চাষ করলে, ফলন খারাপ হচ্ছে না।
আলু চাষিরা অভিযোগ তুলছেন, তাঁরা যে সমবায় সমিতি থেকে এই রাসায়নিক সার নিয়েছিলেন, সেখানে বার বার বলার পরেও কোনও কাজ হচ্ছে না। যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই প্রান্তিক চাষি। তাঁরা কেউ ধার দেনা করে, কেউ ঘরের জিনিসপত্র বন্ধক রেখে আলু চাষ করেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যাপ্ত ফলন না হওয়ায় ভয়ঙ্কর দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। বলছেন, এখন যদি প্রশাসন তাঁদের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে আর কোনও উপায় থাকবে না, তাঁরা একেবারে শেষ হয়ে যাবেন।
আলু চাষিদের এই সমস্যার কথা মেনে নিচ্ছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গুণধর খাঁড়া বলছেন, ‘আমরা যখন চাষিদের থেকে অভিযোগ পেয়েছি, তখন সমবায় সমিতির লোকদের নিয়ে মাঠে গিয়েছিলাম। পরিস্থিতি ঘুরে দেখেছি। যে সংস্থার থেকে ওই রাসায়নিক সার নেওয়া হয়েছিল সেই সংস্থাকে জানানো হয়েছে। জেলার কৃষি আধিকারিককেও জানানো হয়েছে বিষয়টি দেখার জন্য।’ যদিও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলছেন, যে সংস্থার থেকে সার নেওয়া হয়েছিল, সেই সংস্থা অনেকদিনের পুরনো এবং তাদের সারে ভাল কাজও হয়। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি।