জলপাইগুড়ি: সন্তান প্রসবের পর কিডনি বিকল হয়ে কোমায় প্রসূতি। বিষাক্ত স্যালাইনের জেরে নাকি চিকিৎসায় গাফিলতিতে প্রসূতির এই অবস্থা? জলপাইগুড়ির নতুন একটি ঘটনায় উঠছে প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়টি জানিয়ে কোতোয়ালি থানার দ্বারস্থ পরিবার।
জলপাইগুড়ি বোয়ালমারি নন্দন পুর গ্রামপঞ্চায়েতের এলাকার বাসিন্দা বছর তেইশের শান্তনা রায়। প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে গত ২৯ ডিসেম্বর তাকে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের মাদার চাইল্ড হাবে ভর্তি হন। ওইদিন রাতেই তাঁর সিজার হয়।পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি।
পরদিন থেকে রোগীর অসুস্থতা শুরু হয়। কিডনি বিকল হয়ে ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ২ জানুয়ারি গভীর রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। এখন রোগী সেখানে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে ভেন্টিলেশনে রয়েছে। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি।
এই ঘটনার জেরে সোমবার রাতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। কেন সুস্থ প্রসূতি সিজার হওয়ার পর অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে গেলেন, তা নিয়ে উপযুক্ত তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে পরিবার।
স্বামী উত্তম মাতব্বরের অভিযোগ, “আমার স্ত্রীকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। আমার সন্দেহ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে বিষাক্ত স্যালাইন নিয়ে যেই ঘটনা হয়েছে, এক্ষেত্রেও হয়তো তাই হয়েছে।”
নাগরিক চেতনা মঞ্চের সদস্য গোপাল দে সরকার বলেন, “মেদিনীপুরের ঘটনা সামনে আসার পর আমরা আতঙ্কিত। তাই আমরা চাই রোগী যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে তার জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা হোক। একইসঙ্গে ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত হোক।”
জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের MSVP ডাক্তার কল্যান খাঁ বলেন, “আজ রাতে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা স্ত্রী রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহ মোট ৫ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গড়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।”
প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যু নিয়ে গোটা রাজ্য তোলপাড়। স্যালাইন বিভ্রাটের তত্ত্ব দিয়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ। এদিকে, স্বাস্থ্য দফতর ও মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে তুলে ধরা হয় চিকিৎসায় গাফিলতির তত্ত্ব। ইতিমধ্যেই ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার মধ্যে ৬ জন জুনিয়র চিকিৎসক ও ৬ জন সিনিয়র। এই ঘটনার মধ্যেই আবারও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।